ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব, মুখরিত কেরু উচ্চ বিদ্যালয়

| আপডেট :  ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:১২  | প্রকাশিত :  ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:১২


ঐতিহ্যবাহী পিঠা উৎসব, মুখরিত কেরু উচ্চ বিদ্যালয়

সারাদেশ

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি


বাঙালি সংস্কৃতির সাথে আষ্টেপৃষ্টে মিশে আছে পিঠাপুলির নাম। তবে আধুনিক পিজ্জা বার্গারের ছোঁয়ায় পিঠাকে ভুলেই যেতে বসেছিলো বাঙালি। কিন্তু ধীরে ধীরে বাঙালির জীবনে ফিরে আসছে ঐতিহ্যবাহী পিঠা।

বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতিকে ধরে রাখতে রবিবার, ৪ ফেব্রুয়ারি চুয়াডাঙ্গার দর্শনায় অবস্থিত কেরু উচ্চ বিদ্যালয়ে দিনব্যাপী আয়োজন করা হয় পিঠা উৎসব। পিঠা পুলির ঘ্রাণে মুখোরিত হয়ে ওঠে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণ।

দেশি বাহারি পিঠা প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের দেশীয় সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করানো হয়। পিঠা উৎসব উপলক্ষে ছাত্র-ছাত্রী, শিক্ষক-শিক্ষিকা, অভিভাবকদের আগমনে স্কুল প্রাঙ্গণ মিলন মেলায় পরিণত হয়।

উৎসবে ছিলো হরেক রকমের পিঠার আয়োজন। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী নানান ধরনের মুখরোচক পিঠা প্রদর্শনী করে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করার চেষ্টা এবং ঐতিহ্য ধরা রাখাই ছিল এর  প্রধান উদ্দেশ্য।

দেখা যায়, বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্টলে নানা আইটেমের পিঠা নিয়ে উৎসবে অংশগ্রহণ করেছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের তৈরি করা এসব পিঠা দেখতে বিভিন্ন স্টলে ভিড় করেছিল অবিভাবকেরা।

স্টলে নানা রকম পিঠাপুলির পসরা সাজিয়ে রাখা আছে। এর মধ্যে কতিপয় পিঠা একেবারেই নতুন আবার কিছু অতিপরিচিত। প্রতিটা পিঠার ওপরে লেখা আছে পরিচিতি নাম। এসব পিঠার নামও বেশ বাহারি।

উৎসবে ছিলো— ভাপা পিঠা, চিতই পিঠা, ঝাল পিঠা, কলা পিঠা, খেজুরের রসের পিঠা, ক্ষীর কুলি,গোলাপ ফুল পিঠা, রস পিঠা, পুলি পিঠা, পাটিসাপটা, পাকান পিঠা, নারকেলের সেদ্ধ পুলি, তেজপাতা পিঠা, তেলের পিঠা, তেলপোয়া পিঠা, চাঁদ পাকান পিঠা, ছিট পিঠা, দুধ চিতই, ফুল পিঠা, সেমাই পিঠা, নকশি পিঠা, নারকেল পিঠা, নারকেলের ভাজা পুলি, দুধরাজ, ফুলঝুরি পিঠাসহ আরও বাহারি সব নামের পিঠা।

শিশু শিক্ষার্থীরা বাবা-মায়ের হাত ধরে ঘুরে দেখছেন স্টল। জানছেন নতুন নতুন পিঠা সম্পর্কে। পুরো স্কুল মাঠ রূপ নিয়েছে অনিন্দ্য মিলনমেলায়। জানা-অজানা পিঠার সম্পর্কে জানতে পেরে এবং স্বাদ গ্রহণ করতে পেরে খুশি শিক্ষার্থীরা।

জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক অবিভাবক বলেন, পিঠা উৎসব এখন শহরের আনুষ্ঠানিকতায় পরিনত হয়েছে। এই উৎসবের কারণে গ্রামের সেই পিঠাপুলির ঘ্রাণ নিতে পারছি, স্বাদ নিতে পারছি। এখানে এসে বেশ ভালো লাগছে।

সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থী জান্নাতুল নাঈমা জানায়, বাহারি রকমের এতো পিঠা একসঙ্গে এরআগে কখনো দেখা হয়নি। আজ স্কুলে পিঠা উৎসব। সহপাঠীদের সঙ্গে পিঠা খাচ্ছি। অনেকে সিনিয়র ও জুনিয়র আপু ভাইয়ারা পিঠা বিক্রি করছে এতে খুব আনন্দ হচ্ছে।

কেরু উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান বলেন, পিঠা-পুলি হলো আমাদের লোকজ ও নান্দনিক সংস্কৃতিরই প্রকাশ। গ্রাম-বাংলার ঐতিহ্যকে স্মরণ করতেই শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মিলে এ উৎসবের আয়োজন করেছেন। বেশ ভালো লাগছে।

বিদ্যালয়টির সাবেক শিক্ষার্থী রেদোয়ান ফারুক শুভ বলেন, পিঠা উৎসবের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বাঙালির নানা রকমের পিঠার সঙ্গে পরিচিত হতে পারে।   আমাদের বাঙালি সংস্কৃতি ধরে রাখতে হলে এরকম আয়োজনের প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি। পিঠা উৎসবকে উপলক্ষ করে অনেকদিন পর স্কুলে আসলাম। বেশ ভালোই লাগলো।

কেরু উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহিমের সভাপতিত্বে পিঠা উৎসব অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেরু এন্ড কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) ইউসুফ আলী।  

এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন কেরু এন্ড  কোম্পানির মহাব্যবস্থাপক (অর্থ) আব্দুস সাত্তারসহ বিদ্যালয়ের সকল শিক্ষকবৃন্দ।

বিবার্তা/আসিম/এসবি

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত