চলনবিল নদীতে চায়না জালে অবাধে মাছ নিধন

| আপডেট :  ১৯ আগস্ট ২০২৪, ০১:৫৩  | প্রকাশিত :  ১৯ আগস্ট ২০২৪, ০১:৫৩


চলনবিল নদীতে চায়না জালে অবাধে মাছ নিধন

সারাদেশ

পাবনা প্রতিনিধি


চলনবিলে কাটাখালে চায়না জালে অবাধে মৎস্য নিধন চলছে। জোয়ারের পানি কাটাখালে প্রবেশের সাথে সাথে চলনবিলে চায়না দুয়ারী জাল পেতে অবাধে মাছ নিধন করা হচ্ছে। চায়না দুয়ারী জালের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেনা সাপ, কুইচা, কাঁকড়া, ব্যাঙ, শামুকসহ অধিকাংশ জলজ প্রাণী। এতে হুমকিতে পড়েছে চলনবিলের জীববৈচিত্র।

সরজমিনে চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশ উপজেলার বিল পাড়ের কামারশন, মাকরশন, কুন্দইল, ভেটুয়া, নাদোসৈয়দপুর ও ধামাইচ, হামকুড়িয়া, স্থল গ্রাম এলাকার ঘুরে দেখা গেছে, চলনবিলের কাটাখাল, ডোবা, নালা, খাল আত্রাই নদী করতোয়া সব জায়গাতেই জোয়ারের পানি প্রবেশ করেছে।

জোয়ার ও বৃষ্টির পানির সাথে লোনা পানির মাছ চলনবিলের মিঠা পানিতে ডিম ছাড়ার অভয় অশ্রম ভেবে ছুটে চলে আসে এই সব খাল বিল নদ নদীতে, সেই সুযোগে সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নদী পাড়ের কিছু অসাধুরা এই চায়না দুয়ারী জাল পেতে মাছ ধরছেন। বেশিরভাগ জালে মাছের চেয়ে অন্যান্য জলজ প্রাণীই আশঙ্কাজনকহারে মারা পড়ছে।

তাড়াশ উপজেলার হামকুড়িয়া গ্রামের আবুল কালাম আজাদ, আঃ মান্নান, মোঃ আয়নাল হক প্রমুখ বলেন, সারা বছর চায়না জাল দিয়ে মাছ ধরলেও দেখার কেউ নেই। বর্ষার পানি কাটা নদীতে আসতে না আসতেই চায়না জালসহ বড় বাদাইজাল দিয়ে মৎস্য নিধন চলছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বেশ কয়েকজন জেলে বলেন, চায়না দুয়ারী জালে খুব ছোট দারকিনা, মলা, ইচা, চান্দা, খলিশা, পুঁটি, টেংরা, বাতাসি মাছ থেকে শুরু করে বড় শোল, বোয়াল, গজার কোন মাছের রেহাই নেই। বেশিরভাগ জালে মাছের চেয়ে সাপ, কুইচা, কাঁকড়া, ব্যাঙ, শামুক, ঝিনুকসহ বিভিন্ন জলজ প্রাণী ধরা পড়ে। এসব থেকে তারা মাছ ও কুইচা বিক্রি করছেন। বাকি অসংখ্য জলজ প্রাণী মেরে ফেলা হচ্ছে।

এদিকে চলনবিল অঞ্চলের মৎস্য চাষিরাও চায়না দুয়ারী জাল নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় রয়েছেন। তারা বলেন, এই জাল পুকুরে পেতে রেখে দু থেকে তিন দিনের মধ্যে একটি পুকুরের প্রায় সব মাছ সাবাড় করে দেওয়া সম্ভব।

তাড়াশ উপজেলার দোবিলা ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক আব্দুস সামাদ বলেন, চায়না দুয়ারী জালে দেশীয় প্রজাতির সব মাছ ও বিভিন্ন জলজ প্রাণী ধরা পড়ছে। এর মধ্যে বিপন্ন প্রজাতির অনেক মাছ ও জলজ প্রাণীও রয়েছে। জেলেরা মাছ ও কুইচা বিক্রি করছেন। এরপর সাপ, কুইচা, কাঁকড়া, ব্যাঙ, শামুক, ঝিনুকসহ অধিকাংশ জলজ প্রাণীই তারা মেরে ফেলছেন। ফলে সেসব মাছ ও জলজ প্রাণী বংশ বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখতে পারছে না। চায়না দুয়ারী জাল কারেন্ট জালের চেয়েও মারাত্মক ক্ষতিকর।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ মসগুল আজাদ বলেন, চলনবিলে নিয়মিত অভিযান চালানো হবে। মাছ নিধন ও অন্যান্য জলজ প্রাণী ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করা হবে।

বিবার্তা/পলাশ/এমজে

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত