টাঙ্গাইলে জমে উঠেছে ধানের চারা বিক্রির হাট

| আপডেট :  ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১০  | প্রকাশিত :  ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৮:১০


টাঙ্গাইলে জমে উঠেছে ধানের চারা বিক্রির হাট

সারাদেশ

টাঙ্গাইল থেকে ইমরুল হাসান বাবু


টাঙ্গাইলের উপশহর কালিহাতী উপজেলার এলেঙ্গায় ৬০ বছরের ঐতিহ্যবাহী আমন ধানের চারার হাটটি জমে উঠেছে। পৌরসভার শামসুল হক কলেজ মোড়ের এ হাটটি কাকডাকা ভোর থেকে শুরু হয়ে রাত পর্যন্ত বেচাকেনা হয়। জেলার শতাধিক ব্যবসায়ী প্রতিদিন প্রায় ৮-১০ লাখ টাকার চারা বেচাকেনা করেন এই হাটে। একদিকে ন্যায্য দামে বিক্রি করতে পেরে খুশি বিক্রেতারা অন্যদিকে স্বল্পমূল্যে কৃষকেরা চারা কিনতে পেরে লাভবান হচ্ছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, হাটে বিভিন্ন জাতের ধানের চারা সারিবদ্ধভাবে রেখে বিক্রি করছে। চাষিরা দর কষাকষি করে ধানের চারা কিনছেন। চাহিদা বাড়ায় আঁটি প্রতি দাম বেড়েছে ২-৩ টাকা। ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, মুক্তাগাছা, ঘাটাইল ও সখীপুরসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে চারা কিনে আনেন ব্যবসায়ীরা। সেগুলো জেলার চাষীদের কাছে চাহিদা অনুযায়ী বিক্রি করেন। পাশের মানিকগঞ্জসহ অন্য জেলায়ও বিক্রি হয়। এখানে ব্রি ৩৪, ৪৯, ৫২, ৭১, ৭২, ৭৪, ৭৫, ৮৭, বিআর ১১, ২২, ২৩ বিনাধান ৭, ১৭, ২০ স্থানীয় জাত নাজিরশাইল, পাইজাম, বিনাশাইল, স্বর্ণা, কালিজিরা, পাটজাক প্রভৃতি ধানের চারা পাওয়া যায়। ধানের চারাভেদে প্রতি আঁটি (মুঠি) চারা পাঁচ থেকে ১২ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে।

উপজেলার এলেঙ্গা পৌরসভার আবেদ আলী, উত্তর পাড়ার সোলায়মান হোসেন, মশাজান গ্রামের দুলাল হোসেন, পৌলি গ্রামের আছর উদ্দিন, রাজাবাড়ী গ্রামের রশিদ মিয়া বিবার্তাকে বলেন, তারা গত ৩০ বছর ধরে এই হাটে ধানের চারার ব্যবসা করেন। পাহাড়ি উঁচু এলাকা থেকে চারা কিনে এনে এলেঙ্গা হাটে বিক্রি করেন। ১০০ আঁটি চারা বিক্রি করলে এক থেকে দেড়শ টাকা লাভ থাকে। টাঙ্গাইলের দক্ষিণাঞ্চলসহ নীচু এলাকার চাষিরা এখান থেকে বেশি চারা কেনেন। মোহর আলী বলেন, হাঁটটি ৬০ বছরের পুরাতন। মৌসুমে ধানের চারা বিক্রি করেন তারা।

হাটে ধানের চারা কিনতে আসা কালিহাতী উপজেলার ইছাপুর গ্রামের মো. খলিল শিকদার, টাঙ্গাইল সদর উপজেলার মগড়া গ্রামের সলিম উদ্দিন বিবার্তাকে বলেন, আমাদের চারা তৈরির জমি গুলো নীচু। এখানে চারা উৎপাদন করলে চারা নষ্ট হয়ে যায়। তাই এ হাট থেকে চারা কিনি। এবার ২০০ আঁটি স্বর্না ধানের চারা ১৬’শ পঁচাত্তর টাকায় কিনলাম।

কালিহাতী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারহানা মামুন বিবার্তাকে বলেন, এলেঙ্গা ধানের চারার হাট অনেক পুরাতন এবং জেলার অন্যতম। কেউ কেউ শুধু বিক্রির উদ্দেশ্য চারা উৎপাদন করেন। আবার অনেকে নিজের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত চারাগুলো এখানে বিক্রি করেন। যেসব চাষিরা চারা উৎপাদন করতে পারেন না কিংবা প্রাকৃতিক দুর্যোগে চারা নষ্ট হয়ে যায়, তারাই চারা ক্রয় করেন।

টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. কবির হোসেন বিবার্তাকে বলেন, এ বছর রোপা আমন মৌসুমে জেলায় প্রায় ১ লাখ ১’শ ৯০ হেক্টর জমিতে ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। এখন পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ৯৫ হাজার ১৮০ হেক্টর জমি। চলতি মাসের পুরোটা সময়ই বিভিন্ন জাতের ধানের চারা রোপণ করা যাবে।

বিবার্তা/রোমেল/এমজে

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত