ঢামেকে জোড়া শিশু রিফা-শিফাকে সফলভাবে আলাদা করা হয়েছে

| আপডেট :  ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৪০  | প্রকাশিত :  ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৬:৪০


ঢামেকে জোড়া শিশু রিফা-শিফাকে সফলভাবে আলাদা করা হয়েছে

বিবার্তা প্রতিবেদক


ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সফলভাবে আলাদা করা হয়েছে জোড়া শিশু রিফা ও শিফাকে। ৮০ জন চিকিৎসক ১০ ঘণ্টাব্যাপী অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশু দু’টিকে আলাদা করেছেন।

২৩ সেপ্টেম্বর, সোমবার বেলা ১১টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সভাকক্ষে এক প্রেস কনফারেন্সে তথ্যটি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডাক্তার সাহনুর ইসলাম বলেন, চলতি বছরের ১৪ জুন বরগুনার বেতাগী থেকে আসা মাহমুদা জোড়া লাগানো শিশু দু’টিকে নিয়ে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এর পর ২১ জুন শিশু দুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষার পরে মেডিকেল বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একমাস পর আসতে বলা হয়। একমাস পর শিশু দু’টিকে আবার ভর্তি করা হয় পরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে পুষ্টিজনিত সমস্যা সমাধান দিয়ে আরও এক মাস সময় দেওয়া হয়। এর পর অপারেশনের সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়। নির্ধারিত তারিখে ভর্তির পর তাদের কয়েক দফা অস্ত্রোপচার হয়।

ডাক্তার সাহনুর বলেন, এর পর গত ৭ সেপ্টেম্বর ১০ ঘণ্টাব্যাপী সফল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে শিশু দু’টিকে পৃথক করা হয়। পরে দুজনকে আইসিইউতে কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস দিয়ে রাখা হয়। সেখান থেকে ৮ সেপ্টেম্বর রিফাকে ও ৯ সেপ্টেম্বর শিফাকে ভেন্টিলেটর মুক্ত করা হয়। এর মধ্যে রিফা সম্পূর্ণ সুস্থ থাকলেও শিফা অসুস্থ ছিল। তার হার্টের সমস্যা দেখা দেয়। পরে তাকে হার্ট ফাউন্ডেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে শিফার পিত্তনালীর সংযোগ খুলে যাওয়ায় আবার  অস্ত্রোপচার করা হয়। শিফা বর্তমানে আইসিইউতে আছে। ওদের চিকিৎসার খরচ বহন করেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সমাজ সেবা দফতর, আকিজ গ্রুপ, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন কর্তৃপক্ষ, জাতীয় হৃদ্‌রোগ ইনস্টিটিউট, বিএসএমএমইউ, বারডেম, ট্রান্সফিউশান মেডিসিন, ল্যাবরেটরি মেডিসিন এবং নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষক ও তার বাবা মা।’

ডাক্তার সাহনুর বলেন, জন্মগত ত্রুটিগুলো শনাক্তকরণ, প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা, অপারেশনের জন্য প্রস্তুতি; কখনও কখনও এমন অবস্থায় পড়তে হয় দু’জনের কাউকেই রক্ষা করা যায় না। আবার কখনও একজনকে রক্ষা করা সম্ভব হয়। শিফার সমস্যাগুলো ছিল জন্মগত হৃদ্‌রোগ। এমন অবস্থায়ও অস্ত্রোপচার পরবর্তী ফলাফল ভালো ছিল। এখন ওরা ভালো থাকুক সকলের প্রচেষ্টায়।’

প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। ১৫ জুলাই থেকে যুদ্ধের মধ্যে ছিলাম। এর মধ্যে ডাক্তার সাহনুর এই শিশুদের নিয়ে দৌড়াইয়াছেন। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত লম্বা সময় নিয়ে অস্ত্রোপচার করা হয়েছে। সেজন্য ঢাকা মেডিকেলের চিকিৎসকদের ধন্যবাদ।’

শিশুদের বাবা বাদশা মিয়া জানান, হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে চিকিৎসকসহ সকলের সহযোগিতা পেয়েছি। সবার কাছ থেকে আর্থিক সাহায্য পেয়েছি। হাসপাতালের পরিচালক স্যারসহ সকলের কাছে আমরা কৃতজ্ঞতা প্রাকাশ করছি।

তিনি  আরও বলেন, আমাদের বাড়ি বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলায়। গত বছর ৭ জুন সিজারিয়ানের মাধ্যমে জোড়া বাচ্চার জন্ম দেয় মাহমুদা। এর আগে তাদের ঘরে ছয় বছরের এক কন্যা সন্তান রয়েছে।

বিবার্তা/বুলবুল/এমজে

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত