দেশের অর্থনৈতিক সংকটে প্রস্তাবিত বাজেট গতানুগতিক: জি এম কাদের

| আপডেট :  ২৯ জুন ২০২৪, ০৬:২৭  | প্রকাশিত :  ২৯ জুন ২০২৪, ০৬:২৭


দেশের অর্থনৈতিক সংকটে প্রস্তাবিত বাজেট গতানুগতিক: জি এম কাদের

রাজনীতি

বিবার্তা প্রতিবেদক


বিরোধী দলীয় নেতা ও জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান জি এম কাদের বলেছেন, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা সংকটজনক। এমন অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট গতানুগতিক।

২৯ জুন, শনিবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদের অধিবেশনে ২০২৪-২০২৫ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

সংসদে জি এম কাদের বলেন, কোভিড মহামারির প্রকোপ, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞাসহ বিভিন্ন কারণে বিশ্বজুড়ে বড় অর্থনৈতিক মন্দার ধাক্কা লেগেছিল। ধীরে ধীরে অনেক দেশই এ থেকে উত্তরণে সক্ষম হয়েছে। অনেক দেশ উত্তরণের পথে রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের চিত্র ভিন্ন, আমাদের অর্থনীতি প্রতিদিন নিম্নগামী। উত্তরণতো দূরের কথা, অধঃপতন ঠেকানোই বড় চ্যালেঞ্জ মনে হচ্ছে।

সামষ্টিক অর্থনীতিতে অস্থিরতার কারণ উল্লেখ করে জাপা চেয়ারম্যান বলেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ঘাটতি, টাকার বিনিময় হারের পতন, সীমিত রফতানি, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, ক্রমবর্ধমান সুদের হার, উচ্চ নন-পারফরমিং ঋণ, সরকারের সংকুচিত আর্থিক ক্ষমতা, এডিপি ব্যয়ের হ্রাস, বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের ক্রমবর্ধমান চাপ, বাজেট ঘাটতি অর্থায়নের জন্য ব্যাংক ঋণের উপর অতি নির্ভরশীলতা, বিদেশি বিনিয়োগের পতন, বেসরকারি বিনিয়োগে স্থবিরতা, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির গতি হ্রাস বড় কারণ।

জিএম কাদের বলেন, কোনো দেশের রিজার্ভ নিরাপদ মাত্রায় রাখতে হলে কমপক্ষে তিন মাসের আমদানি ব্যয়ের সমান রিজার্ভ রাখতে হয়। সে ক্ষেত্রে আমাদের রিজার্ভ বেশ ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় নেমে এসেছে। রফতানি আয় ও প্রবাসী আয় যতক্ষণ না দেশের মোট আমদানি ব্যয়ের সমান বা বেশি হবে ততক্ষণ পর্যন্ত রিজার্ভের ক্রমাবনতি অব্যাহত থাকবে। ইতোমধ্যে আইএমএফ এর ঋণের ছাড় ও অন্যান্য বিদেশি সাহায্য বা ঋণের অর্থে হঠাৎ রিজার্ভ বৃদ্ধি হতে পারে। কিন্তু এই রিজার্ভ আবার কমতে থাকবে যতক্ষণ পর্যন্ত না রফতানি ও প্রবাসী আয় আমদানি ব্যয়ের চেয়ে বেশি থাকবে।

বর্তমানে আমদানি ব্যয় যথেষ্ট পরিমাণে নিয়ন্ত্রণ করার পরও রিজার্ভ ধরে রাখা যাচ্ছে না। মনে রাখতে হবে আমদানি ব্যয় একটা পর্যায়ের নিচে কখনই নামানো সম্ভব হবে না। যেহেতু দেশে আমদানি চাহিদার একটি নিম্নতম স্তর আছে। তাছাড়াও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের হ্রাস এবং আমদানি হ্রাস পেলে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি হয়, টাকার অবমূল্যায়ন হয় এবং মূল্যস্ফীতি হয়। ফলে আমদানি ব্যয় সংকোচনের ফলে সর্বনিম্ন স্তরে নিয়ে আসার মাধ্যমে যদি রিজার্ভের স্থিতিশীল অবস্থা ধরে রাখা না যায়; তাহলে সার্বিক অর্থনীতিতে একটি বিশৃঙ্খল অবস্থা দেখা দেবে।

প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট গতানুগতিক উল্লেখ করে তিনি বলেন, এর আগের ৪-৫ বছরের বাজেটে যে ধরনের ধ্যান ধারণার উপর এবং যে প্রক্রিয়ায় তৈরি করা হয়েছিল, সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখে বর্তমান প্রস্তাবিত বাজেট উপস্থাপন করা হয়েছে। কিন্তু এ বছরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি অনেক বেশি সংকটময়। দেশের চরম অর্থনৈতিক দুর্দশা আমলে নিয়ে সে অনুযায়ী কোনো দিক নির্দেশনা বা উদ্যোগে বাজেটে দেখা যায়নি। বাজেট প্রণয়নে বরাদ্দ, রাজস্ব আহরণে যে কর প্রস্তাব করা হয়েছে এতে চিহ্নিত সমস্যাগুলো সমাধানের পরিবর্তে অনেক ক্ষেত্রেই সমস্যা বৃদ্ধি পাবে।

বিবার্তা/সউদ

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত