ফুলেল শ্রদ্ধায় জাতীয় কবিকে স্মরণ
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৮তম মৃত্যুবার্ষিকীতে তার সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। মঙ্গলবার সকাল থেকেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদের পাশে কবির সমাধিতে শিক্ষা, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক বিভিন্ন সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন করে। বাংলা ১৩০৬ সনের ১১ জ্যৈষ্ঠ পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন কবি নজরুল ইসলাম। মৃত্যুর কয়েক বছর আগে তাকে বাংলাদেশে এনে নাগরিকত্ব ও জাতীয় কবির মর্যাদা দেওয়া হয়। ১৩৮৩ সনের ১২ ভাদ্র তিনি মারা যান। সকালে শ্রদ্ধা জানাতে এসে কবির নাতনি খিলখিল কাজী বলেন, “কাজী নজরুল ইসলাম যুগে যুগে প্রাসঙ্গিক। তার মতো এমন অবিস্মরণীয় কবি বাংলা সাহিত্যে, সংগীতে খুবই কম এসেছেন এবং তার মতো প্রতিবাদী ভূমিকা পালন করেছেন। “যুগে যুগে যত আন্দোলন হয়েছে, এ আন্দোলনগুলো কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার মাধ্যমে শুরু ও শেষ হয়েছে। ভীষণভাবে জনগণ, এ বাংলার মানুষ অনুপ্রাণিত হয়েছেন। সব আন্দোলন তার গান ও কবিতার মাধ্যমে হয়েছে।” তিনি বলেন, “অত্যাচার, অনাচার, অনিয়মের বিরুদ্ধে কাজী নজরুল ইসলামের লেখনী ভীষণভাবে কাজ করেছিল। তখন থেকে এখনকার সময় পর্যন্ত। তিনি আজীবন আমাদের সাথে থাকবেন। “তিনি যা দিয়ে গেছেন বাংলা সাহিত্যে বলুন, সংগীতে বলুন তা অনস্বীকার্য। তার সাহিত্য ও সংগীত আমাদের জাতীয় সম্পদ। আমরা এ সম্পদগুলো যত বেশি চর্চা করব, তত বেশি সমৃদ্ধ হবো। যতদিন পৃথিবীতে অত্যাচার, অবিচার, অনিয়ম থাকবে- কাজী নজরুল ইসলাম ততদিন সকলের মনে জাগ্রত থাকবেন।” সকালে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে দলের নেতাকর্মীরা জাতীয় কবিকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানান। পরে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত কয়েকদিন আগে এক ভয়ংকর দানবীয় স্বৈরশাসকের পতন ঘটেছে। সেই আন্দোলনের উত্তাল ঢেউয়ের মধ্যে আপনারা শুনেছেন ‘কারার ঐ লৌহ কপাট’, ‘মোরা ঝঞ্ঝার মত উদ্দ্যম মোরা ঝর্ণার মত চঞ্চল’। “আন্দোলনের প্রতিটি ক্ষেত্রে যারা আত্মদান করেছেন, তারা উদ্বুদ্ধ হয়েছিলেন নজরুলের গান গেয়ে, নজরুলের গান শুনে। আজও আমাদের অত্যাচারীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে প্রেরণা দেয়।” ভারতের বাঁধ খুলে দেওয়ার সমালোচনা করে রিজভী বলেন, “এই স্বৈরশাসককে একমাত্র যে দেশটি সমর্থন করে এসেছে, তারা বাংলাদেশের জনগণ কী চায়- তার দিকে ভ্রুক্ষেপ করেনি। কয়েকদিন আগে তারা ডাম্বুর বাঁধ খুলে দিয়ে প্রলয়ঙ্কারী বন্যার সৃষ্টি করেছে। গতকাল ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেইট খুলে দেওয়ার সংবাদ শুনেছি। মনে হচ্ছে একটি পরিকল্পিত ও অশুভ ইচ্ছা নিয়েই তারা এই কাজগুলো করছে। “শুকনো মৌসুমে আমাদের যখন পানির দরকার, তারা তখন গেইট বন্ধ করে রাখে। পানির যে শেয়ার- সেই শেয়ারটুকু আমরা যেন না পাই, সেজন্য শেখ হাসিনা অসম চুক্তির মাধ্যমে তা করেছেন। একটি ব্যক্তির ১৬ -১৭ বছর নতজানু নীতির কারণে এটি হয়েছে।” সমাধিতে জাতীয় কবিকে শ্রদ্ধা নিবেদন করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি, জাতীয় জাদুঘর, নজরুল গবেষণা কেন্দ্র, বাংলা একাডেমি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ, নজরুল একাডেমি, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাঁশরী (নজরুল চর্চা কেন্দ্র)। বিবার্তা/এসবি
ফুলেল শ্রদ্ধায় জাতীয় কবিকে স্মরণ
শিল্প-সাহিত্য
বিবার্তা প্রতিবেদক
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত