মাঝরাতেই চিরঘুমে ‘বাংলাটা ঠিক আসে না’র রচয়িতা ভবানীপ্রসাদ

| আপডেট :  ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৩৩  | প্রকাশিত :  ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৩৩


মাঝরাতেই চিরঘুমে ‘বাংলাটা ঠিক আসে না’র রচয়িতা ভবানীপ্রসাদ

আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক ডেস্ক


ভাষাদিবসের মাসেই চলে গেলেন ‘জানেন দাদা, আমার ছেলের বাংলাটা ঠিক আসে না’- সুপরিচিত এই ছড়াটির লেখক বিখ্যাত ভারতীয় ছড়াকার ভবানীপ্রসাদ মজুমদার।

পশ্চিমবাংলার সংবাদমাধ্যম বলছে, বুধবার ভোররাতে মৃত্যু হয়েছে কবির। মৃত্যুকালে ভবানীপ্রসাদ মজুমদারের বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।

মূলত ছোটদের জন্যই লিখতেন ভবানীপ্রসাদ মজুমদার।  কিন্তু মজার মজার লেখনীতে সবাইকে মুগ্ধ করার পাশাপাশি ভবানীপ্রসাদের লেখায় বারবার উঠে এসেছে সামাজিক স্যাটায়ার। দুই বাংলাতেই তুমুল জনপ্রিয়তা পাওয়া কবিতাগুলোর সংখ্যা বহু। তবে ‘জানেন দাদা, আমার ছেলের বাংলাটা ঠিক আসে না’ কবিতাটি বারেবারেই উঠে এসেছে সামাজিক মাধ্যমের পাতায়!

জানা যায়, সারা জীবনে ভবানীপ্রসাদ লিখেছেন ২০ হাজারের বেশি ছড়া। করেছেন নানা ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষা। ‘মজার ছড়া’, ‘সোনালী ছড়া’, ‘কোলকাতা তোর খোল খাতা’, ‘হাওড়া-ভরা হরেক ছড়া’, ‘ডাইনোছড়া’র মতো একাধিক বই লিখেছেন তিনি। সত্যজিৎ রায় ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে নিয়ে লিখেছেন ‘ছড়ায় ছড়ায় সত্যজিৎ’ এবং ‘রবীন্দ্রনাথ নইলে অনাথ’।

কবি ভবানীপ্রসাদ মজুমদারের জন্ম ১৯৫৩ সালের ৯ এপ্রিল হাওড়া জেলার জগাছা থানার অন্তর্গত দাশনগরের কাছে দক্ষিণ শানপুর গ্রামে। তার বাবা ছিলেন নারায়ণচন্দ্র মজুমদার এবং মা ছিলেন নিরুপমা দেবী। কবির শৈশব জীবন কেটেছে সেই গ্রামেই। ভবানীপ্রসাদ মজুমদার ছোট থেকেই লেখালেখি করতে ভালবাসতেন বলে জানিয়েছে তাঁর পরিবার। সময়ের সঙ্গে মানুষের জীবনের পরিবর্তন, দিনযাপনের আদবকায়দা সবটাই একটা সময় নিজের কলমের মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন তিনি। কর্মজীবনে প্রবেশ করে কবি ভবানীপ্রসাদ মজুমদার শিক্ষকতা করেছেন শানপুরের কালিতলা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। পরে এই বিদ্যালয়েরই প্রধান শিক্ষকের পদে নিযুক্ত হন। আর সেই সঙ্গেই চালিয়ে গিয়েছেন লেখালেখি। সেজন্য রাষ্ট্রপতির হাত থেকে পেয়েছেন রাষ্ট্রীয় পুরস্কার। এছাড়াও পেয়েছেন ‘শিশুসাহিত্য পরিষদ পুরস্কার’, ‘অভিজ্ঞান স্মারক’, ‘ছড়া সাহিত্য পুরস্কার’-সহ একশোর বেশি পুরস্কার।

অসংখ্য লেখার মধ্যে থেকে আলাদাভাবে উল্লেখযোগ্য তার বিখ্যাত দুটি ছড়া ‘আ-মরি বাংলাভাষা’ ও ‘বাংলাটা ঠিক আসে না’। সেই অর্থে ছড়ার পাঠক নন যারা, তারাও কমবেশি পরিচিত এই ছড়াগুলোর সঙ্গে। বিশেষত দ্বিতীয়টি।

ইংরেজি মাধ্যমের পড়ুয়াদের বাংলা ভাষা শেখানোর বিষয়ে অভিভাবকদের অবহেলার যে বাস্তব চিত্র তিনি তুলে ধরেছিলেন তা আপাতভাবে মজার আড়ালে ব্যঙ্গের সপাট চাবুক হয়ে আছড়ে পড়েছিল বাঙালির মননে।

ভবানীপ্রসাদ মজুমদার সুকুমার রায় শতবার্ষিকী পুরস্কার পেয়েছিলেন সত্যজিৎ রায়ের হাত থেকে। উপেন্দ্রকিশোর রায়চৌধুরী পুরস্কার পেয়েছিলেন পশ্চিমবাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত থেকে।

বিবার্তা/লিমন

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত