মালয়েশিয়ায় বন্দিশিবির থেকে পালিয়েছে শতাধিক রোহিঙ্গা
মালয়েশিয়ার একটি বন্দিশিবির থেকে পালিয়ে গেছে মিয়ানমারের শতাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী। সেখানে একটি দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ার পর এই ঘটনা ঘটে। তবে পালিয়ে যাওয়ার সময় রাস্তায় গাড়ির ধাক্কায় প্রাণও হারিয়েছেন একজন। ২ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার দেশটির পুলিশ এ তথ্য জানিয়েছে। মিয়ানমারে হত্যা, ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হয়ে মুসলিম দেশগুলোতে আশ্রয় নিয়েছে রোহিঙ্গারা, যা এখনো অব্যহত রয়েছে। বাংলাদেশের পাশাপাশি মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া রোহিঙ্গাদের অন্যতম গন্তব্য। এসব রোহিঙ্গারা অনেক সময় সমুদ্রপথে ঝুঁকি নিয়ে মালয়েশিয়ায় যায়। আবার অনেক সময় থাইল্যান্ড সীমান্ত দিয়েও যাওয়ার চেষ্টা করে। তবে অবৈধ পথে যাওয়ার পর তাদেরকে অনেক সবয় বন্দিশিবিরে রাখা হয়। তবে বিভিন্ন অধিকার সংগঠনগুলো জানিয়েছে, রোহিঙ্গাদের যে পরিবেশে রাখা হয় তা যথাযথ নয়। যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, মিয়ানমারের সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীটির লোকজন অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় প্রবেশ করে। নৌকায় চেপে দেশটিতে যায় তারা, যা অনেক বছর ধরে চলে আসছে। রোহিঙ্গাদের বন্দিশালা থেকে পালানোর ঘটনাটি সবশেষ কয়েক বছরের মধ্যে দ্বিতীয়। ২০২২ সালের এপ্রিলে মালয়েশিয়ার উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ কেদাহর একটি বন্দিশালা থেকে পালিয়ে যায় ৫৮২ রোহিঙ্গা। ওই সময় জাতীয় মহাসড়কে গাড়ির ধাক্কায় প্রাণ হারিয়েছিল পালাতে যাওয়া ছয় রোহিঙ্গা। ২০২৩ সালে সাগরে অন্তত ৫৬৯ রোহিঙ্গা মারা গেছেন অথবা নিখোঁজ হয়েছেন, যা ২০১৪ সালের পর সর্বোচ্চ। মূলত দক্ষিণপূর্ব এশিয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ পথে ভ্রমণ করার সময় দুর্ঘটনায় তাদের মৃত্যু হয়। বলা হয়েছে, গত বছর যারা ঝুঁকিপূর্ণ পথে অন্য দেশে পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেছে তাদের প্রতি আটজনে একজন হয় মারা গেছেন না হয় নিখোঁজ হয়েছেন। মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের মহাপরিচালক রুসলিন জুসোহ শুক্রবার এক বিবৃতি বলেন, পশ্চিমাঞ্চলীয় পেরাক প্রদেশের বিদর ডিটেনশন সেন্টার থেকে মোট ১৩১ অভিবাসী পালিয় গেছে। তিনি আরও বলেন, একজন অভিবাসী পালাতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছে। পালিয়ে যাওয়া অভিবাসীদের খোঁজে অভিযান চলছে। মালয়েশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা বেরনামা এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বন্দিশালার পুরুষ ব্লক থেকে অভিবাসীরা পালিয়েছে। এর মধ্যে ১১৫ জন সংখ্যালঘু রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীরা। আর ১৬ জন মিয়ানমারের অন্যান্য জনগোষ্ঠীর। রয়টার্স জানিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গাদের একটি পছন্দের গন্তব্য মালয়েশিয়া। সাগরপথে দেশটিতে পাড়ি জমায় তারা। তবে, অবৈধ অভিবাসীদের স্বীকৃতি দেয় না মালে কর্তৃপক্ষ। সবশেষ কয়েক বছরে রোহিঙ্গাবাহী বেশ কয়েকটি নৌকা ভিড়তে দেয়নি তারা। আর দেশটিতে থাকা রোহিঙ্গাদের আটক করে ডিটেনশন সেন্টারে রাখা হচ্ছে। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে যেসব রোহিঙ্গা অবশিষ্ট রয়েছেন তাদের ওপর বিভিন্ন ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বসবাস করছেন ক্যাম্পে। তিন বছর আগে মিয়নামারে অং সান সুচিকে হঠিয়ে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। এরপরই শুরু হয় রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন। বিবার্তা/লিমন
মালয়েশিয়ায় বন্দিশিবির থেকে পালিয়েছে শতাধিক রোহিঙ্গা
আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত