‘এখানে থেমো না’, বইমেলায় ভিন্ন এক আয়োজন

| আপডেট :  ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:৩২  | প্রকাশিত :  ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:৩২


‘এখানে থেমো না’, বইমেলায় ভিন্ন এক আয়োজন

বিবার্তা প্রতিবেদক


শনিবার ছিল বইমেলার দশম দিন। এ দিন মেলা শুরু হয় বেলা ১১টায়, চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। বেলা ১১টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত ছিল শিশুপ্রহর।

এদিন বেলা সাড়ে ১১টা, বিকাল সাড়ে ৩টা এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শিশুদের মাঝে বাড়তি আনন্দ ছড়ায় সিসিমপুরের জনপ্রিয় চরিত্র হালুম, টুকটুকি, শিকু, ইকরি, জুলিয়া।

বিকালের পর থেকে দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড় দেখা যায়। সন্ধ্যার পর তা রূপ নেয় জনসমুদ্রে।

একুশে বইমেলায় শনিবারের বিকালটা ছিল অন্যরকম; ক্যান্সারজয়ীরা এসে জীবনের শত প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও থেমে না যাওয়ার বার্তা ছড়িয়ে গেলেন।

মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড (ইউপিএল) স্টলের সামনের চত্বরে দেখা গেল তাদের। চেয়ার নিয়ে বসে আড্ডা-গল্পে সময় কাটাচ্ছিলেন।

এ সময় তাদের হাতে হাতে ছিল একটি বই, নাম ‘এখানে থেমো না’। ৪২ জন ক্যান্সার লড়াকুর বয়ান নিয়ে এ বই প্রকাশ করেছে ‘সেন্টার ফর ক্যান্সার কেয়ার ফাউন্ডেশন’। মেলায় বইটির পরিবেশক ইউপিএল।

বইটির লেখকদের নিয়েই অনানুষ্ঠানিক এ আড্ডার আয়োজন।

এদিন যারা এসেছিলেন, তাদের সবাই ক্যান্সারজয়ী। তাদের মধ্যে ছিলেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী, অণুজীববিজ্ঞানী ড. সেঁজুতি সাহা, সূর্যদীঘল বাড়ি খ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা মসিহউদ্দিন শাকের, ডা. এস এম শহীদুল্লাহ, নাসরিন বানু পান্না।

আয়োজনটির সমন্বয়ক ক্যান্সার থেকে সেরে ওঠাদের স্বেচ্ছাসেবামূলক সংগঠন সেন্টার ফর ক্যান্সার কেয়ার ফাউন্ডেশন (সিসিসিএফ) এর সাধারণ সম্পাদক জাহান-ই-গুলশান শাপলা বলেন, “ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে কঠিন একটি সময় পার করে আমরা এখানে এসেছি, অনেক সাহস আর শক্তি নিয়ে। বইমেলায় অনেক উদ্দীপনা নিয়ে আমরা এসেছি।

“আমিসহ ৪২জন ক্যান্সারজয়ী মিলে একটা বই লিখেছি, যার নাম ‘এখানে থেমো না’। বইটিতে যারা লিখেছেন, এমন ছয়জন ক্যান্সারজয়ী এসেছি মূলত আড্ডা দিতেই।”

আড্ডার ফাঁকে সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলেন তারা। মেলায় আগত দর্শনার্থীদের সেলফি তোলার আবদারও মেটান এবং গল্পে গল্পে শোনান ক্যান্সারজয়ের নানা কথা।

অণুজীববিজ্ঞানী সেঁজুতি সাহা বলেন, “আমি ক্যান্সারজয়ী। ১২ বছর আগে আমার ক্যান্সার ধরা পড়ে। তখন আমি কানাডায় ছিলাম। ২৪ বছর বয়স, অল্প বয়সেই এটি ধরা পড়ে।

“সেখানে ক্যান্সারের সঙ্গে লড়াই করেছি। আমার চিকিৎসার জন্য কিন্তু কোনো খরচ হয়নি। পরে আমি ভেবেছি, আমার ক্যান্সারজয়ের জয়ের পেছনে তো শুধু চিকিৎসক নয়, আরও অনেকে যুক্ত। আমার পরিবার, বন্ধুরা- সবাই আমাকে সাপোর্ট করেছে। সবার ভালোবাসায় তো আমি দ্বিতীয় জীবন পেয়েছি।”

সাত বছর আগে দেশে ফেরেন জানিয়ে সেঁজুতি সাহা বলেন, “ক্যান্সার থেকে সুস্থ হওয়ার পর আমি ভাবতাম, কানাডায় আমি যে চিকিৎসা বা সুযোগ পেয়েছি, দেশের সকল মানুষ কি সেটা পায়? পরে আমি ২০১৬ সালে কানাডা থেকে দেশে চলে আসি এবং বাংলাদেশেই আমার বাকি জীবন কাটানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি।”

বাংলাদেশে এখন চাইল্ড হেলথ রিসার্চ ফাউন্ডেশনে (সিএইচআরএফ) কাজ করছেন সেঁজুতি সাহা।

বিবার্তা/এসবি

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত