কোটার কারণে শ্রেণীবৈষম্য আরও প্রকট হবে: এবি পার্টি

| আপডেট :  ১১ জুলাই ২০২৪, ০৮:২১  | প্রকাশিত :  ১১ জুলাই ২০২৪, ০৮:২১


কোটার কারণে শ্রেণীবৈষম্য আরও প্রকট হবে: এবি পার্টি

বিবার্তা প্রতিবেদক


অন্যায্য কোটা পদ্ধতি পুনর্বহালের প্রতিক্রিয়ায় দেশের নাগরিকদের মধ্যকার শ্রেণীবৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে এবি পার্টি।  

১১ জুলাই, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪ টায় বিজয়নগরস্থ বিজয়-৭১ চত্বরে দলের পক্ষ থেকে আয়োজিত গণশুনানিতে এই অভিমত ব্যক্ত করেন সর্বস্তরের নাগরিক ও দলীয় নেতৃবৃন্দ।

এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হকের সভাপতিত্বে ট্রানজিটের নামে ভারতকে একতরফা করিডোর দেয়া, বৈষম্যমূলক কোটা পুনঃপ্রবর্তন, বেনজীর-আজিজ-মতিউরের মত হাজারো দুর্নীতিবাজদের লুটপাট এবং লাগাতার দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিসহ সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদী গণশুনানি আয়োজন করা হয়। এতে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষ, পথচারী সাধারণ নাগরিক ও দলীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।

গণশুনানি পরিচালনা করেন দলের সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু। সূচনা বক্তব্যে তিনি বলেন, আমাদের দেশের ভেতর দিয়ে ট্রেনে করে ভারতের নাগরিকগণ তাদের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে চলাচল করতে চাইলে বাংলাদেশের জনগণও ভারতের মধ্যদিয়ে নেপাল, ভুটান ও চীনে সড়কপথে যাতায়াতের রাস্তা পাওয়ার অধিকার রাখে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো ক্ষমতাসীন সরকার ভারতের কাছ থেকে আমাদের স্বার্থ আদায়ে মনোযোগী নন।বাংলাদেশের সাথে ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়েও সরকার জোর গলায় ভারতের কাছ থেকে কোন দাবি আদায় করতে পারেনি।

কোটা পদ্ধতিকে সংবিধান পরিপন্থি আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এই কোটা সংস্কার করা না হলে নাগরিকদের মধ্যকার বিদ্যমান শ্রেণীবৈষম্য আরও প্রকট আকার ধারণ করবে যা কোন না কোন সময় গৃহযুদ্ধের পরিণতি ডেকে আনবে।

সভাপতির বক্তব্যে এবি পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক বিএম নাজমুল হক বলেন, জনগণের প্রশ্ন হলো এই সরকারের সব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক কেন শুধু ভারতের স্বার্থে? ভারতের সাথে যৌথ স্যাটেলাইট চুক্তিতে বাংলাদেশের স্বার্থ কী? এতে আমাদের কী উপকার হবে? এই চুক্তি কি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি নয়? জনগণ এসব বিষয়ে জানতে চায়। তিনি অবিলম্বে একতরফা এসকল সমঝোতা স্মারক বাতিলের দাবি জানান।

গণশুনানিতে অংশ নিয়ে এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধ করেছিলাম একটি গণ প্রজাতন্ত্রী দেশ প্রতিষ্ঠার জন্য। কিন্তু এখন তা একদল লুটেরাদের মাধ্যমে পরিবারের রাজতন্ত্রে পরিণত হয়েছে। আমরা এই রাজতন্ত্র মেনে নেবোনা।

তিনি কোটাবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীদের উপর ন্যাক্কারজনক পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা জানান।

গণশুনানীতে অংশ নিয়ে আইনজীবী প্রতিনিধি অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা বলেন, ছাত্রদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনকে কোর্টের ঘাড়ে বন্দুক রেখে ধ্বংস করতে চাওয়ার প্রয়াসের নিন্দা জানাই।

নারী উদ্যোক্তা আমেনা বেগম বলেন, দিন দিন আমাদের ব্যয় বাড়ছে, কিন্তু সে অনুযায়ী আয় বাড়ছে না। আমরা ঋণের জালে আটকে যাচ্ছি।

ছাত্র প্রতিনিধি খালিদ সাইফুল্লাহ বলেন, আমরা কোটা বিরোধী আন্দোলন করছি সেটা থামাতে সরকার আজ সারাদেশে পুলিশ দিয়ে ছাত্রদের উপর হামলে পড়েছে। এর বিরুদ্ধে দেশবাসী সোচ্চার হোন।

শ্রমিক প্রতিনিধি মজিবর রহমান মল্লিক বলেন, ছেলেমেয়েদের বাজার করে খাওয়াতে পারছি না। সবাই মিলে সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করলে আর কোন উপায় নাই।

সিকিউরিটি গার্ডদের প্রতিনিধি সিরাজুল ইসলাম বলেন, প্রতি মাসে এখন ৫/৬ হাজার টাকা ঋণ করে চলছি। জিনিস পত্রের দাম অনেক বেশি। এ অবস্থা চলতে পারেনা।

গণশুনানিতে আরও বক্তব্য রাখেন, এবি পার্টির প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব এবিএম খালিদ হাসান, মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আলতাফ হোসাইন, সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, যুবপার্টির আহবায়ক শাহাদাতুল্লাহ টুটুল, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী নাসির, উত্তরের সদস্য সচিব সেলিম খান, ছাত্রপক্ষের আহ্বায়ক মোহাম্মদ প্রিন্স, দক্ষিণের যুগ্ম সদস্য সচিব আহমাদ বারকাজ নাসির, সফিউল বাসার, কেফায়েত হোসেন তানভীর, উত্তরের যুগ্ম সদস্য সচিব আব্দুর রব জামিল, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এনামুল হক, মশিউর রহমান মিলু, আমেনা বেগম, রিপন মাহমুদ, যুবনেত্রী শাহিনুর আক্তার শীলা, মহানগর নেতা মুন্সি আব্দুল কাদের, সিএমএইচ আরিফ, রনি মোল্লা সহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

বিবার্তা/এমজে

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত