‘কৌশলে ফাঁদে ফেলে অর্থ অর্জন করাই পরীমনির পেশা’

| আপডেট :  ২১ জুলাই ২০২২, ০৯:৪৮  | প্রকাশিত :  ২১ জুলাই ২০২২, ০৯:৪৮

কৌশলে ফাঁদে ফেলে মানুষের অর্থ-সম্পদ অর্জন করাই চিত্রনায়িকা পরীমনির পেশা। এছাড়াও সুযোগ বুঝে বিভিন্ন নামি দামি ক্লাবে প্রবেশ করে অ্যালকোহল পান করেন ও পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ না করে বিশৃঙ্খলা করেন।

ব্যবসায়ী নাসিরকে হত্যাচেষ্টা, মারধর ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগে সোমবার (১৮ জুলাই) নায়িকা পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলাটি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার অভিযোগে এসব কথা উল্লেখ করেন মামলার বাদী বোট ক্লাবের সভাপতি ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ।

এর আগে গত ৬ জুলাই ঢাকার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাজীব হাসানের আদালতে বোট ক্লাবের সভাপতি নাসির উদ্দিন মাহমুদ বাদী হয়ে পরীমনিসহ তিনজনের বিরুদ্ধে এ মামলা করেন। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণের জন্য আজ (১৮ জুলাই) দিন ধার্য করেন। আজ বিচারক মামলাটি সিআইডিকে তদন্ত করে ৬ অক্টোবর এ বিষয় প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।

এ মামলার অন্য দুই আসামি হলেন পরীমনির সহযোগী ফাতেমা তুজ জান্নাত বনি ও জুনায়েদ বোগদাদী জিমি ওরফে জিম।

মামলার অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, পরীমনি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল নন। কৌশলে ফাঁদে ফেলে মানুষের অর্থ সম্পদ অর্জন করাই তার পেশা। এছাড়া সুযোগ বুঝে বিভিন্ন নামি দামি ক্লাবে প্রবেশ করে অ্যালকোহল পান করেন ও পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ না করে বিশৃঙ্খলা করেন। উল্টো ক্লাবের স্টাফদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির ভয় দেখায় পরীমনি। তিনি একজন চলচ্চিত্র নায়িকা ও প্রভাবশালী হওয়ায় কোনো ক্লাব কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে মামলা করার সাহস করে না। কেউ কেউ শুধু জিডি করেছেন।

মামলায় নাসির উদ্দিন উল্লেখ করেন, পরীমনি ও তার সহযোগীরা অ্যালকোহল পানে অভ্যস্ত। তারা সুযোগ বুঝে বিভিন্ন নামি দামি ক্লাবে ঢুকে অ্যালকোহল পান করেন এবং পার্সেল নিয়ে মূল্য পরিশোধ করেন না। পরীমনি তার পরিচিত পুলিশ কর্মকর্তাদের দিয়ে মিথ্যা মামলা করিয়ে হয়রানির ভয় দেখান। ২০২১ সালের ৯ জুন রাত ১২টার পর আসামিরা সাভারের বোট ক্লাবে প্রবেশ করেন এবং দ্বিতীয় তলার ওয়াশরুম ব্যবহার করেন। পরে তারা ক্লাবের ভেতরে বসে অ্যালকোহল পান করেন।

এতে আরও বলা হয়, বাদী (নাসির উদ্দিন মাহমুদ) ও তার সহযোগী শাহ শহিদুল আলম রাত ১টা ১৫ মিনিটে যখন ক্লাব ত্যাগ করছিলেন, তখন পরীমনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে নাসিরকে ডাক দেন। তাদের সঙ্গে কিছু সময় বসারও অনুরোধ করেন। একপর্যায়ে পরীমনি অশ্লীল অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে নাসিরকে আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন এবং একটি অ্যালকোহলের বোতল বিনা মূল্যে পার্সেল দেওয়ার জন্য চাপ দেন। নাসির উদ্দিন এতে রাজি না হওয়ায় পরীমনি তাকে গালমন্দ করেন। নাসির ও আসামিদের মধ্যে বাদানুবাদের একপর্যায়ে পরীমনি বাদীর দিকে একটি সারভিং গ্লাস ছুড়ে মারেন এবং হাতে থাকা মোবাইল ফোনও ছুড়ে মারেন। এতে নাসির মাথায় এবং বুকে আঘাতপ্রাপ্ত হন।

বাদী মামলায় আরও উল্লেখ করেন, পরীমনি ও তার সহযোগীরা তাকে (নাসির উদ্দিনকে) মারধর ও হত্যার হুমকি দিয়েছেন এবং বোট ক্লাবে ভাঙচুর করেছেন। এ ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য পরীমনি সাভার থানায় বাদী নাসির উদ্দিনসহ দুজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ তুলে মামলা করেন।

২০২১ সালের ১৪ জুন ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে নাসির উদ্দিন মাহমুদ ও তার বন্ধু অমির নাম উল্লেখ করে এবং চারজনকে অজ্ঞাত আসামি করে পরীমনি সাভার থানায় মামলা করেন। ওই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কামাল হোসেন ঢাকার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নাসিরসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।

চলতি বছরের ১৮ মে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৯ এর বিচারক হেমায়েত উদ্দিন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। একই সঙ্গে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১ আগস্ট দিন ধার্য করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠনের সময় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন নাসিরসহ তিন আসামি।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত