গাইবান্ধায় ডিসিকে প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন

| আপডেট :  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:১২  | প্রকাশিত :  ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:১২


গাইবান্ধায় ডিসিকে প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন

সারাদেশ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি


অসৌজন্যমূলক আচরণের অভিযোগে গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক (ডিসি) কাজী নাহিদ রসুলকে প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

১৯ ফেব্রুয়ারি, সোমবার জেলা শহরের ডিবি রোডের নাট্য সংস্থার সামনে গাইবান্ধা সচেতন নাগরিক ও সুশীল সমাজের ব্যানারে ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন হয়। পরে আন্দোলনকারীরা শহরের ব্যস্ততম ডিবি রোডের গানাসাস মার্কেটের সামনে কিছু সময়ের জন্য সড়ক অবরোধ করে রাখে। তারা ব্যানার ধরে সড়কের উপর দাঁড়িয়ে এই কর্মসূচি পালন করে। এ সময় উভয় পাশে কিছুক্ষণের জন্য যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। এতে আইনজীবী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সচেতন নাগরিক ও বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ অংশ নেন।

এতে সভাপতিত্ব করেন সিনিয়র সাংবাদিক সিদ্দিক আলম দয়াল। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ওয়াকার্স পার্টির পলিট ব্যুরোর সদস্য আমিনুল ইসলাম গোলাপ, জাতীয় শ্রমিক জোটের গাইবান্ধা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক নুর মোহাম্মদ বাবু, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন, আইনজীবী সালাউদ্দিন কাশেম, মানবাধিকার কর্মী দিবা বেগম, সিনিয়র সাংবাদিক সৈয়দ নুরুল আলম জাহাঙ্গীর, শামীম আল সাম্য, কায়ছার প্লাবন, ওমর ফারুক রনি, বিপ্লব ইসলাম, জাভেদ হোসেন প্রমুখ।

জেলা প্রশাসকের বদলির দাবি তুলে বক্তারা বলেন, গাইবান্ধায় যোগদানের পর থেকে জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল স্থানীয় সুশীল সমাজ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আসছেন। নানা প্রশাসনিক কাজে তাঁর কক্ষে দেখা করতে গেলে দুর্ভোগ পোহাতে হয়। দর্শনার্থীরা তাঁর নিয়োগকৃত এপিএস (সহকারী কমিশনার) এর কাছে পের মাধ্যমে সাক্ষাতের কারণ উল্লেখ করতে হয়। পে-অর্ডার পাঠিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও তাঁর সাথে সাক্ষাতের অনুমতি পাওয়া যায় না। সপ্তাহে একদিন গণশুনানি করা বাধ্যতামূলক। তিনি যোগদানের পর থেকে নিয়মিত গণশুনানি হচ্ছে না।

তারা আরো বলেন, বর্তমানে জেলায় শতাধিক অবৈধ ইটভাটা চললেও অজ্ঞাত কারণে দুই-চারটি ছাড়া বেশিরভাগ ভাটা মালিকদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। জেলা প্রশাসকের আচরণের কারণে তাঁর কার্যালয়ের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর আচরণও নেতিবাচক পরিলক্ষিত হচ্ছে। জেলা প্রশাসকের আচরণের কারণে সরকার ও জনপ্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। তাই তাঁকে বদলি করা গাইবান্ধার মানুষের কাছে সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

তারা আরও বলেন, অবিলম্বে জেলা প্রশাসনকে বদলি করতে হবে। না হলে নানা কর্মসূচিসহ বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

মানববন্ধনে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, বিগত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেও জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের নির্বাচনি তথ্য প্রদানে অসহযোগিতা করেন। এসব ঘটনায় গতবছরের ৩১ ডিসেম্বর জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুলকে বদলির দাবি জানিয়ে দেশের প্রথম সারির জাতীয় পত্রিকা, টেলিভিশন চ্যানেল, স্থানীয় পত্রিকা ও অনলাইন মিডিয়ার ২১ জন সাংবাদিক প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে আবেদন জানান। যা প্রতিবেদন আকারে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।

এ ছাড়া একই দাবিতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী, ১১ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং জনপ্রশাসন সচিব বরাবরে মুক্তিযোদ্ধা, আইনজীবী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, ব্যবসায়ী, সচেতন নাগরিক ও বিভিন্ন সংগঠনের ৪২ নেতৃবৃন্দ স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র পাঠানো হয়। তাতেও কোনো কাজ হয়নি। বিভিন্ন সংগঠনের ৪২ নেতৃবৃন্দ স্বাক্ষরিত অভিযোগপত্র পাঠানো হয়। তাতে কোনো কাজ হয়নি।

এসময় মানববন্ধন থেকে সাংবাদিকরা জেলা প্রশাসকের সংবাদ প্রচার না করার ঘোষণা দেন। তারা বলেন, জেলা প্রশাসকের বদলি না হওয়া পর্যন্ত এই কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে।

বিবার্তা/খালেক/এমজে

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত