চাঁদাবাজির নতুন ভার্সন

| আপডেট :  ২৪ এপ্রিল ২০২২, ১১:৩৭  | প্রকাশিত :  ২৪ এপ্রিল ২০২২, ১১:৩৭

রাজধানীর মিরপুরে ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে ঘুম ভাঙানো চাঁদাবাজরা। সেহরির সময় টিন বাজিয়ে যারা ঘুম ভাঙায় রোজার শেষের দিকে তারা চাঁদার জন্য মানুষের দুয়ারে দুয়ারে হানা দিচ্ছে। এসব চাঁদাবাজকে নিয়ে স্থানীয়রা আতঙ্কে রয়েছেন।

জানা গেছে, মিরপুর ৬ ও ৭ নম্বরে সেহরির সময় যারা টিন বাজিয়ে ঘুমন্ত মানুষদের ডেকে তুলছেন, তাদের দাবি করা টাকা নিয়ে এলাকায় কানাঘুষা চলছে। প্রশাসন ও স্থানীয় কাউন্সিলরের তৎপরতায় গত দুই বছর টিন বাজিয়ে ঘুম ভাঙানো নিষেধ ছিল। কারণ এতে চাঁদাবাজির সুযোগ তৈরি হতো।

সূত্র জানায়, মিরপুর ৬ নম্বর সি ও ডি ব্লক এবং ৭ ও ৪ নম্বর রোডে রমজানের শুরুতে সেহরির সময় টিন বাজানো শুরু করে বখাটে একটি চক্র। চক্রের সদস্যরা ৪-৫ জন মিলে মহল্লার অলিগলিতে সেহরির সময় মুড়ির টিন, বড় বড় প্লাস্টিকের বোতল বাজিয়ে ঘুম ভাঙায়।

অবশ্য এলাকাবাসী বলছে, তাদের (বখাটে চক্র) টিন বাজানোর শব্দ কারও কানে পৌঁছায় না। তারপরও টিন বাজানোর কাজ তারা চালিয়ে যায়।

সূত্র আরও জানায়, গত দুই দিন ধরে বাসায় বাসায় ঘুম ভাঙানোর অজুহাতে চাঁদা চাইছে এ চক্রের সদস্যরা। চক্রের সদস্য ২৫-৩০ জন। ইতোমধ্যে অনেকের কাছ থেকে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকাও আদায় করা হয়েছে। বাসায় বাসায় চাঁদা কালেকশনের জন্য ধরনা দিচ্ছেন তারা। অনেকে টাকা দিতে না পেরে সময় নিয়েছেন। যারা টাকা দেননি, তাদের ২৭ রমজানের মধ্যে টাকা দেওয়ার আলটিমেটাম দিয়ে গেছে বখাটেরা।

স্থানীয় বাসিন্দা মোমেন বলেন, গত জুমার নামাজের সময় মিরপুর ৭ নম্বর বড় মসজিদের হুজুর মাইকে ঘোষণা দিয়েছেন সেহরির সময় ঘুম ভাঙানোর কথা বলে কেউ টাকা চাইলে যেন টাকা দেওয়া না হয়। কারণ ঘুম ভাঙানো সওয়াবের কাজ। এর বিনিময়ে টাকা দিলে চাঁদাবাজি হবে। পুলিশও নিষেধ করেছে। তার পরও যারা টিন বাজিয়েছেন, তারা মহল্লায় মহল্লায় টাকা কালেকশনে নেমে গেছে।

মিরপুর ৭ নম্বর বড় মসজিদের ইমাম মুফতি নুর হোসেন বলেন, গত জুমায় মুসল্লিদের বলা হয়েছে তারা যেন টিন বাজানোর টাকা না দেয়। থানা থেকেও এ ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, ডিজিটাল যুগে টিন বাজানোর কোনো প্রয়োজন নেই। মোবাইলে অ্যালার্ম বা মসজিদের মাইকিংয়ে সবার ঘুম ভাঙ্গে। অযথা টিন বাজানোর দরকার নেই। এতে চাঁদাবাজির সুযোগ নিবে বখাটেরা।

এদিকে চাঁদা কালেকশনের জন্য সেহরির ডাক নামে রশিদ বই ছাপিয়ে টাকা তুলছেন ঘুম ভাঙানো চাঁদাবাজরা। রশিদ বইয়ের একটি কপি এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে।

স্থানীয় ৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর তাইজুল ইসলাম বলেন, আমি সবাইকে নিষেধ করেছি টাকা দেওয়ার জন্য। কেউ ঘুম ভাঙানোর কথা বলে টাকা চাইতে আসলে যেন পুলিশকে খবর দেয়।

পল্লবী থানার ওসি পারভেজ ইসলাম বলেন, রমজানের শুরুতে টিন বাজানো নিষেধ করা হয়েছে। বিনিময়ে কেউ চাঁদা চাইলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত