চাকরি হারানো সেই পুলিশ কনস্টেবলের মানবেতর জীবন

| আপডেট :  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:০৯  | প্রকাশিত :  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৬:০৯

টিপ পরা নিয়ে এক নারীকে হেনস্তা করার অভিযোগে চাকরি হারানো পুলিশ কনস্টেবল নাজমুল তারেক নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমি ভুক্তভোগী। চাকরিরত অবস্থায় ছিলাম। এ জন্য কথা বলতে পারিনি। ঘটনায় কোনো তথ্যপ্রমাণ ছাড়াই আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’

কনস্টেবল নাজমুল আরও বলেন, ওই ঘটনার প্রতিবাদে দীর্ঘদিন জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে তিনি অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন। ঘটনার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছাড়াও অভিযোগকারী লতা সমদ্দারের শাস্তি দাবি করেন তিনি।

আজ বৃহস্পতিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে স্ত্রী ও শিশুসন্তানের উপস্থিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে নাজমুল তারেক এসব কথা বলেন।

গত এপ্রিল মাসের শুরুতে রাজধানীর ফার্মগেটে তেজগাঁও কলেজের প্রভাষক লতা সমাদ্দার টিপ পরা নিয়ে হেনস্তার শিকার হওয়ার অভিযোগ করেন পুলিশ সদস্য নাজমুলের বিরুদ্ধে। পরে তাঁকে শনাক্ত করে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এরপর গত মাসে চাকরিচ্যুত হন তিনি।

তিনি ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) প্রটেকশন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। সাবেক এই পুলিশ সদস্য বলেন, ‘সড়কে উল্টো পথে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমি দেশবাসীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি। সেদিন দুর্ঘটনাবশত অভিযোগকারীর গায়ে বাইকের ধাক্কা লাগে। আমি তাঁর কাছে ক্ষমা চেয়ে চলে যেতে চাইলে আমার ইউনিফর্মের শোল্ডার ধরে ফেলে দেন। এই ঘটনা ঢাকতে টিপ–কাণ্ড সাজানো হয়েছে।’

নাজমুল অভিযোগ করেন, ঘটনাস্থলে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ পর্যবেক্ষণ না করে বিচার করা হয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা মনগড়া প্রতিবেদন দিয়েছেন। তিনি নির্দোষ। কারণ, সুস্পষ্ট তথ্য ও প্রমাণ তাঁরা দেখাতে পারেননি। নিম্নপদস্থ কর্মী হওয়ায় তিনি কথা বলতে পারেননি। তিনি আরও বলেন, ‘চাকরিতে থাকার সুযোগে এবং আমার দাড়ি–টুপির কারণে আমাকে মৌলবাদী বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে।’

বরখাস্ত হওয়া এই পুলিশ সদস্য বলেন, ‘আমি তো কোনো এলিয়েন না। টিপ প্রথম দেখেছি, এমন বিষয় না যে টিপ নিয়ে তাঁকে প্রশ্ন করব। উনি কি আসলেই পরিকল্পিতভাবে কোনো সাম্প্রদায়িক ইস্যু তৈরি করতে চাচ্ছিলেন। আমি ট্রাফিক আইন ভেঙেছি, ট্রাফিক আইনে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা হতে পারে। কিন্তু চাকরি চলে যেতে পারে না।’

এই ঘটনা নিয়ে জাতীয় সংসদে একজন সংসদ সদস্য না জেনেই বক্তব্য দিয়েছেন দাবি করে নাজমুল বলেন, তাঁকেও ক্ষমা চাইতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে নাজমুলের স্ত্রী মাইশা আক্তার বলেন, ‘খাওয়া নাই, দাওয়া নাই। আমরা দিনের পর দিন প্রেসক্লাবে অবস্থান করেছি। আমার স্বামী যদি অপরাধী হয়। তার সর্বোচ্চ শাস্তি হোক। কিন্তু সত্য প্রকাশ না করে আমাদের সাত–আটজনের পরিবারকে পথে বসিয়ে ফেলা হয়েছে। আমরা চাই, সত্য সামনে আসুক। ঘটনাস্থলে থাকা সিসিটিভির ফুটেজ প্রকাশ করা হোক।’

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত