চার ব্যাংক থেকে লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৮% খেলাপি ঋণ আদায় করা সম্ভব হয়েছে

| আপডেট :  ৩০ মে ২০২২, ১১:১৫  | প্রকাশিত :  ৩০ মে ২০২২, ১১:১৫

রাষ্ট্রায়ত্ত্ব চার ব্যাংক (সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী) তাদের খেলাপি গ্রাহকের থেকে চলতি অর্থবছর ১,৬১০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কিন্তু চলতি সময়ে আদায় করেছে মাত্র ১৩৩ কোটি টাকা। যা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর।

গভর্নর রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোকে বড় ঋণের চেয়ে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার জন্য ছোট গ্রাহকদের ঋণ বিতরণে প্রাধান্য দিতে বলেছেন ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের। একইসঙ্গে বড় গ্রাহকদের কাছে আটকে থাকা ঋণ আদায়ে জোরালো ভূমিকার কথা বলেছেন।

গভর্নর রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর সিএমএসএমই ও কৃষিখাতের ঋণের ব্যাংকগুলোর অনেক পিছিয়ে থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর মধ্যে জনতা ব্যাংকের সিএমএসএমই খাতের ঋণ খুবই শ্লথগতির ছিল।

গত রবিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সরকারি চার ব্যাংকের একটি পর্যালোচনা বৈঠকে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবিরের সভাপত্বিতে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংকের এমডি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সরকারি ব্যাংকগুলোর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় গভর্নর রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর খেলাপি ও মূলধন ঘাটতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। একইসঙ্গে দ্রুত সময়ে তা কমিয়ে আনতে কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়ার আহ্ববান জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে বৈঠকে উপস্থিত একজন কর্মকর্তা বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর মধ্যে জনতা ব্যাংকের সিএমএসএমই ঋণে বিতরণ কম থাকায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গভর্নর। সোনালী ব্যাংকের পক্ষ থেকে বলেছেন, তারা বর্তমানে বড় ঋণের চেয়ে ছোট ঋণে অগ্রাধিকার দিচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, ‘গভর্নর রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর এমডিদের বড় গ্রাহকদের ঋণ বিতরণের যথার্থ যাচাই-বাছাইয়ের নির্দেশ দিয়েছেন। একইসঙ্গে খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে যথার্থ পদক্ষেপ নিতে বলেছেন।’

গভর্নর ব্যাংকগুলোকে সিআইবিতে যথাসময়ে তথ্য সরবরাহ করতে নির্দেশ দিয়েছেন।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডাটা অনুযায়ী, রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর কাছে ব্যাংকিং খাতের মোট খেলাপি ঋণের ৪৩% আটকে আছে। ব্যাংকিং খাতে মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ হলো ১ লাখ ৩২৭৪ কোটি টাকা। তার মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৪৪,৯৭৭ কোটি টাকা। এ ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে জোরালো ব্যবস্থা নিতে বলেছেন গভর্নর।

সোনালী ব্যাংকের চিত্র অনুযায়ী, ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে সোনালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১০,৭৬৭ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১১,৯৫৯ কোটি টাকা। সে হিসেবে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১১%।

রিপোর্টে জনতা ব্যাংকের চিত্রে দেখা যায়, ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে জনতা ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১৩,৭৩৬ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ কমে দাঁড়িয়েছে ১২,৩২২ কোটি টাকা। সে হিসেবে এক বছরে খেলাপি ঋণ কমেছে ১০%।

আবার রিপোর্টে অগ্রণী ব্যাংকের চিত্রে দেখা যায়, ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে অগ্রণী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৬,৪৭২ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯,৯৮৭ কোটি টাকা। সে হিসেবে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৫৪%।

এবং রিপোর্টে রূপালী ব্যাংকের চিত্রে দেখা যায়, ২০২০ সালের ডিসেম্বর শেষে রূপালী ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ৩,৯৭২ কোটি টাকা। ২০২১ সালের ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬,৬৬৬ কোটি টাকা। সে হিসেবে এক বছরে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬৮%

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত