চুয়াডাঙ্গা দেখা দিয়েছে ‘ফিউজারিয়াম স্টক’ রোগ, দুশ্চিন্তায় ভুট্টা চাষির

| আপডেট :  ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:২২  | প্রকাশিত :  ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০১:২২


চুয়াডাঙ্গা দেখা দিয়েছে ‘ফিউজারিয়াম স্টক’ রোগ, দুশ্চিন্তায় ভুট্টা চাষির

সারাদেশ

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি


রবি ফসল ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়ে থাকে চুয়াডাঙ্গায়। তবে এবার ভুট্টায় ‘ফিউজারিয়াম স্টক’ রোগ দেখা দিয়েছে। ফলে এ বছর ভুট্টার ফলন নিয়ে বেশ দুশ্চিন্তায় পড়েছে জেলার চাষিরা।

জানা গেছে, দেশে ২০০০ সাল থেকে ভুট্টা গাছের ‘ফিউজারিয়াম স্টক’ রোগ দেখা দেয়। চুয়াডাঙ্গাতেও এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে গত দুই বছর থেকে।

ইতোমধ্যে ‘ফিউজারিয়াম স্টক’ রোগ নিয়ে জেলার চারটি উপজেলার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাদের এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।

এ রোগের লক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে বিভিন্নভাবে কৃষকদের অবহিত করছে জেলা কৃষি অধিদফতর। ইতোমধ্যে, মাঠ পর্যায়ে উঠান বৈঠকের মাধ্যমে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হয়েছে।

মাঠের ব্লকের কৃষি অফিসাররা প্রথম থেকেই এ রোগের প্রতিকার, করণীয় শীর্ষক লিফলেট বিতরণ করছেন। তাছাড়া ব্লক সুপারভাইজাররা মাঠে গিয়ে কৃষকদেরকে এ রোগ সম্পর্কে অবহিত করছেন। যারা নিয়মের বাইরে ভুট্টা চাষ করেছে তাদের এই সমস্যা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, ফিউজারিয়াম স্টক মূলত ধ্বংসাত্মক একটি রোগ। এ রোগের সংক্রমণের ফলে ফলনে ১০০ ভাগ পর্যন্ত ক্ষতিসাধন হতে পারে।

তিনি আরও বলেন, এটি মূলত মাটি, বীজ ও বায়ুবাহিত রোগের পোষক দেহের সংখ্যা অনেক বেশি থাকে। এ রোগের নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে চাষিদের মধ্যে ব্যাপকভাবে গত বছর থেকে অবহিত করা হচ্ছে।

রোগের লক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ এবং প্রতিকার সম্পর্কে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ বিভাগের অতিরিক্ত উপ পরিচালক কায়ছার ইকবাল বলেন, ফিউজারিয়াম স্টক রট হলো ছত্রাকজনিত রোগ। এ রোগের লক্ষণ আক্রান্ত গাছের পাতা বিবর্ণ হয়ে যায়। গাছ শুকিয়ে ধূসর বর্ণ ধারণ করে। অপরিপক্ব অবস্থায় গাছ মারা যায়। শিকড় গোড়া এবং নিচের গোড়াগুলো পচে যায়। কাণ্ড বিভক্ত করলে ভেতরে বিবর্ণ দেখা যায়। আক্রান্ত গাছের কাণ্ডে চাপ দিলে নরম বোধ হয়। আক্রান্ত গাছের মোচাগুলো হেলে পড়ে এবং দানা অপুষ্ট থাকে।

তিনি বলেন, এ রোগ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার মধ্যে, শোধনকৃত বীজ ব্যবহার করতে হবে। গাছের উপযুক্ত ঘনত্ব বজায় রাখতে হবে। নাইট্রোজেন ও পটাশিয়াম সারের সহনীয় মাত্রা রাখতে হবে। অম্ল মাটিতে ফসল লাগানোর এক সপ্তাহ আগে অনুমোদিত মাত্রায় ডলোচুন ব্যবহার করতে হবে। লাগানোর দেড় মাস পর থেকে ছত্রাকনাশক স্প্রে করতে হবে। একই জমিতে বারবার ভুট্টার আবাদ থেকে বিরত থাকতে হবে।

ভুট্টা চাষি মামুন বলেন, এ বছর তিন বিঘা জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছি। কিন্তু দুঃখের বিষয় ফসলের পরিপক্ব না আসার আগেই ‘ফিউজারিয়াম স্টক’ রোগ দেখা দিয়েছে। এই বছরে যে ফলন আশা করেছিলাম তা হবে না। মনে হচ্ছে ভুট্টা চাষে খরচই উঠবে না।

চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জেলার ৪টি উপজেলায় চলতি বছর ৪৯ হাজার ৪শ ২০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে কৃষকদের সহায়তা প্রদান করছে কৃষি বিভাগ ।

বিবার্তা/আসিম/জবা

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত