জনগণ প্রতিটি গুলির হিসাব নেবে: নুরুল হক নুর

| আপডেট :  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৮:৪৩  | প্রকাশিত :  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২২, ০৮:৪৩

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, রাষ্ট্রযন্ত্রের অপব্যবহারের মাধ্যমে অওয়ামী লীগ ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য ক্রমাগত বাংলাদেশকে নিয়ে বাজি খেলছে। দেশের অস্তিত্বকে নিয়ে বাজি খেলছে। আর এতে হুমকির মুখে পড়ছে আমাদের সার্বভৌমত্ব। এর থেকে রক্ষা পেতে হলে দেশের প্রতিটি রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষকে এর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।

সম্প্রতি কথিত ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে আটক প্রীতম দাশের মুক্তি ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে গতকাল বিকালে রাজধানীর শাহবাগে রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি একথা বলেন। প্রীতম দাশ সংগঠনটির জাতীয় সমন্বয় কমিটির সদস্য ছিলেন। জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা সংকটের মধ্যে আছি। আমাদের চরম দুর্ভোগের মধ্যে থাকতে হচ্ছে। সংকট যেমন নানা রকম বিপদ সামনে নিয়ে আসে ঠিক তেমনি বিপদ থেকে মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনাও আমাদের দেখিয়ে দেয়। আজকে বাংলাদেশ এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে আছে।

সামনে আমরা হয়তো আরও ভয়াবহ বিপদ কিংবা খাদের মধ্যে পড়বো, না হয় সাম্য-মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে যে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা হয়েছিলো, সেই বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথে হাঁটবো।

প্রীতম দাশকে গ্রেপ্তারের সমালোচনা করে সাকি বলেন, বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে কোথায় এসে পৌঁছেছে প্রীতম দাশের বর্তমান অবস্থা তা আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে। যথাযথ প্রমাণ ও তথ্য-উপাত্ত ছাড়া প্রীতমকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সরকার নিজেদের অসাম্প্রদায়িক চেতনা লালনের দাবি নিজেরাই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। সাম্প্রতিক সময়ে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের বক্তব্য সমালোচনা করে সাকি বলেন, আন্দোলনকারীরা কখনো ষড়যন্ত্র করে না। বাংলাদেশের মানুষকে আপনাদের ক্ষমতা থেকে নামাতে কোনো ষড়যন্ত্র করতে হবে না।

জনগণের অভ্যুত্থানের মাধ্যমেই আপনাদের পতন হবে। বিক্ষোভ সমাবেশে উপস্থিত নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, সরকার জনগণ ও বিরোধী মতের লোকদের ওপর ক্রমাগত অত্যাচার করছে। সরকারের মন্ত্রীরা বারবার বলার চেষ্টা করে আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে কোনো যুদ্ধ চাই না। ভালো কথা। তাহলে আপনারা দেশের ভেতরে যুদ্ধ করেন কেন? বিনা উস্কানিতে প্রতিদিন একজন দুজন করে মানুষ মারছেন- এটা কি দেশের বিরুদ্ধে, জনগণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ না? দেশকে অরাজকতা মুক্ত করতে হলে সর্বদলীয় ঐক্য ও যুগপৎ আন্দোলনের বিকল্প নেই উল্লেখ করে মান্না বলেন, ছয় মাস পর পর বৈঠক কিংবা নানা অজুহাতে কালক্ষেপণের সময় এখন আর নাই। আমরা ইতিমধ্যে সাতটি দল নিয়ে গণতান্ত্রিক মঞ্চ তৈরি করেছি।

আরও যত বড় দল আছে তাদের প্রতি আমার আহ্বান থাকবে, অতীতের সমস্ত মান-অভিমান ভুলে রাজপথে আসুন, একত্রে স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করি। অঙ্গীকার করি এই সরকারের শেষ দেখা না পর্যন্ত আমরা রাজপথ ছেড়ে যাবো না।

গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, বিরোধী দলের কর্মসূচিতে যেভাবে পাখির মতো গুলি করা হচ্ছে, মুন্সীগঞ্জ-ভোলাসহ বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে বিরোধী মতের কর্মীরা আহত নিহত হচ্ছেন- তার জবাব একদিন দিতে হবে। সেদিন আর বেশি দূরে নয় যেদিন স্বৈরাচারী প্রশাসনের কাছ থেকে জনগণ প্রতিটি গুলির হিসাব নেবে। এ সময় তিনি ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে প্রীতম দাশকে আটকের তীব্র সমালোচনা করে দ্রুত এই ‘বিতর্কিত’ আইন বাতিলের দাবি করেন।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত