টুঙ্গিপাড়ায় পাটের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

| আপডেট :  ০১ মে ২০২৪, ১২:২৩  | প্রকাশিত :  ০১ মে ২০২৪, ১২:২৩


টুঙ্গিপাড়ায় পাটের বাম্পার ফলন, কৃষকের মুখে হাসি

সারাদেশ

টুঙ্গিপাড়া প্রতিনিধি


পাটের বাম্পার ফলন হওয়ায় গোপালগঞ্জ জেলা টুঙ্গিপাড়া উপজেলার চরকুশলি গ্রামের কৃষকেরা এখন সোনালী আঁশের স্বপ্ন দেখছেন। আর কয়েকদিন পরেই কাটতে শুরু করবেন সোনালী স্বপ্নের পাট। অল্প খরচে কম সময়ে বেশি লাভের আশায় উপজেলার কৃষকদের ধান চাষের পাশাপাশি পাট চাষের আগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে।

অনুকূল আবহাওয়া ও সময়মত পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতের কারণে পাটের ফলন ভালো হয়েছে। গত কয়েক বছর যাবৎ পাটের বাজার মূল্য ভালো পাওয়ায় চাষিরা উন্নত জাতের পাট চাষের দিকে মনোযোগ দিচ্ছে। নিবিড় পরিচর্যা আর কৃষি অফিসের পরামর্শের কারণে পাটের তেমন কোনো রোগবালাই নেই।

চলতি মৌসুমে টুঙ্গিপাড়া উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের জমিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ব্যাপকভাবে সোনালী আঁশের আবাদ হয়েছে। দেশে সার,বীজ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ কম ও অনুকূল আবহাওয়া থাকায় সোনালী আঁশের ফলন অধিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের হাট-বাজারে পাটের দাম অধিক ও কম খরচে পাটের অধিক ফলন হওয়ায় সোনালী আঁশের সুদিন ফিরে আসবে বলে মনে করেন স্থানীয় পাট চাষীরা এবং আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তারা।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে,চলতি মৌসুমে উপজেলার ৫ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় বিভিন্ন গ্রাম ও চরাঞ্চলের সমতল ও অসমতল জমিতে ১ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।তারমধ্যে দেশি ২০০ হেঃ,তোষা- ১৫০ হেঃ,কেনাফ-১২০০ হেঃ এবং মেসতা জাতীয় পাট আবাদ হয়েছে ৫ হেঃ জমিতে।

গত বছর আবাদ হয়েছিল ১১৯৫ হেক্টর জমিতে। গত বছরের চেয়ে এবার ৩৬০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ বেশি হয়েছে।

সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, কৃষকের মাঠে মাঠে চোখ জুড়ানো সবুজের সমারোহ। সবুজ পাতার সাথে দোল খাচ্ছে মাঠের পর মাঠ। কৃষকের সোনালী স্বপ্ন দিচ্ছে উঁকি।

কৃষকের প্রতিটি ক্ষেতের প্রতিটি পাট গাছ হয়েছে অনেক লম্বা। সতেজ ও মোটা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় গত বছরের চেয়ে পাটের বাম্পার ফলন ও ভালো দামের স্বপ্ন দেখছেন এ এলাকার প্রান্তিক চাষিরা।

পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হওয়ায় এখনো নদী, ডোবা, খাল-বিল, হাওড়ে পানি নেই। তাই পাট কাটা পিছিয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা অপেক্ষা করছেন। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলে পাট জাগ দেওয়ার মতো পানির ব্যবস্থা হলেই পাট কাটতে শুরু করবেন বলে জানান কৃষক।

পাট চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতি বিঘা জমিতে চাষ, সেচ, রাসায়নিক সার প্রয়োগ, পাট কাটা, শুকানোসহ খরচ হবে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। গত বছরের তুলনায় এবার ফলন ও দাম বেশি হওয়ায় অন্য ফসলের তুলনায় লাভ হবে ৫/৬ গুণ। গত বছর বিঘাপ্রতি ৭/৮ মণ পাট পাওয়া গেছে। কিন্তু এবার ফলন ভালো হওয়ায় বিঘাপ্রতি১০/১২ মণ পাট পাওয়া যাবে।ফলন ভালো পেয়ে চাষিদের মুখে হাঁসির ঝিলিক দেখা দিয়েছে।

উপজেলার চরকুশলি গ্রামের পাট চাষী, সুনিল বৈরাগী ,জাকির ফকির, অমল বৈরাগী, তারা মিয়া, বাচ্চু ফকির, সহ অনেকেই জানান, অন্যান্য কৃষি ফসলের তুলনায় পাটের আবাদে খরচ কম হয়।পাটের বাজার দামও বেশি। তাই আমরা এই বছর অধিক জমিতে পাটের আবাদ করে।

টুঙ্গীপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোহাম্মদ রাকিবুল  ইসলাম  বলেন, আমরা কৃষকদের বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ, প্রশিক্ষন ও মাঠ পর্যায়ে দেখাশোনা করায় ফলন ভালো হয়েছে। এছাড়া সরকারি বিভিন্ন প্রণোদনা ও ভর্তুকী কৃষকদের মাঝে পৌঁছে দেওয়ায় তারা আরও বেশি উদ্বুদ্ধ হয়েছে। বর্তমানে বাজারে পাটের চাহিদা ও মূল্য বৃদ্ধির কারণে পাট চাষ দিন দিন বাড়ছে।

বিবার্তা/শান্ত শেখ/এসবি

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত