তীব্র গরমে মানবিক তিন আমল
গরমের তীব্রতা বেড়ে চলেছে। ইতিমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে হিট স্ট্রোকে মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। সারা দেশের মানুষ একটা বিপর্যয়ের মধ্যে অবস্থান করছে। এই অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরির পেছনে আমাদের দায় সবচেয়ে বেশি। আমরা পরিবেশ ধ্বংস করে চলেছি প্রতিনিয়ত। ফলে তাপমাত্রার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘স্থলে ও জলে মানুষের কৃতকর্মের দরুন বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। আল্লাহ তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করাতে চান, যাতে তারা ফিরে আসে।’ (সুরা রুম: ৪১) এই গরমে অনেকে বাসা-বাড়ি থেকে বের হতেই সাহস পাচ্ছে না। থেমে গেছে অনেকের কাজকর্মও। মুমিন ব্যক্তি কখনো অলস সময় পার করেন না। যখন যেভাবে সম্ভব হয়, তাঁকে আল্লাহর আনুগত্য ও মানবতার সেবায় এগিয়ে আসতে হয়। পরিবেশ রক্ষার মাধ্যমে মানুষ মূলত আল্লাহর দেওয়া নিয়ামতের যথাযথ ব্যবহার করে তাঁর কৃতজ্ঞতা আদায় করে। প্রচণ্ড গরমে খুব সহজে করা যায় এবং অসংখ্য সওয়াবের মালিক হওয়া যায়—এমন কয়েকটি আমলের কথা এখানে তুলে ধরা হলো। ১. তৃষ্ণার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো ২. পশুপাখির প্রতি দয়া ৩. পরিবেশ রক্ষায় যত্নবান হওয়া বিবার্তা/মাসুম
তীব্র গরমে মানবিক তিন আমল
ধর্ম
ধর্ম ডেস্ক
পরিচিত-অপরিচিত অসংখ্য মানুষ আমাদের বাড়ি, দোকান বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে চলাচল করে। এই গরমে তাদের তৃষ্ণা নিবারণে আমরা পানি পান করাতে পারি। কারণ তৃষ্ণার্তকে পানি পান করানো বড় সওয়াবের কাজ। হজরত সাদ ইবনে উবাদা (রা.) বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল, আমার মা ইন্তেকাল করেছেন, আমি কি তাঁর পক্ষ থেকে সদকা করব? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আমি বললাম, কোন সদকা উত্তম? তিনি বললেন, পানি পান করানো। (সুনানে নাসায়ি: ৩৬৬৪)
এই গরমে পশুপাখির যত্ন নেওয়া উচিত। গৃহপালিত পশুপাখির তো নিতেই হবে, ঘরবাড়ির আশপাশে বাস করা মুক্ত পশুপাখিরও খোঁজখবর রাখা উচিত। তাদের জন্য ঘরের ছাদে বা বারান্দা-বেলকনিতে ছোট বাটিতে কিছু পানি বা খাদ্য রাখুন। এটি বড় সওয়াবের কাজ। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘একজন লোক রাস্তা দিয়ে চলতে চলতে তার ভীষণ পিপাসা লাগল। সে কূপে নেমে পানি পান করল। এরপর সে বের হয়ে দেখতে পেল, একটা কুকুর হাঁপাচ্ছে এবং পিপাসায় কাতর হয়ে মাটি চাটছে। সে ভাবল, কুকুরটারও আমার মতো পিপাসা লেগেছে। সে কূপের মধ্যে নামল এবং নিজের মোজা ভরে পানি নিয়ে ওপরে উঠে এসে কুকুরটিকে পান করাল। আল্লাহ তাআলা তার আমল কবুল করলেন এবং গুনাহ মাফ করে দেন।’ সাহাবিরা বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল, চতুষ্পদ জন্তুর উপকার করলেও কি আমাদের সওয়াব হবে?’ তিনি বললেন, ‘প্রতিটি প্রাণীর উপকার করাতেই সওয়াব রয়েছে।’ (বুখারি: ২৩৬৩)
গাছের ছেড়ে দেওয়া নির্মল বাতাস মানবজীবনের জন্য অতিপ্রয়োজনীয়। গাছ ও মানুষ একে অপরের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই গাছপালার প্রতি দয়ার্দ্র হতে হবে। রাস্তার ধারে বা খোলা ময়দানে যথাসময়ে গাছ লাগিয়ে রাখতে পারেন। সেই গাছ অক্সিজেন ও ফল দেবে। হাদিসের ভাষায় যা সদকা। হজরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (সা.) বলেন, ‘যেকোনো মুসলমান ফলবান গাছ রোপণ করে কিংবা কোনো ফসল ফলায় আর তা থেকে পাখি বা মানুষ বা চতুষ্পদ জন্তু খায়, তবে তা তার পক্ষ থেকে সদকা বলে গণ্য হবে।’ (বুখারি: ২৩২০)
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত