নগরবাসী গরমে পুড়ে-বৃষ্টিতে ডুবে, সরকার নির্বিকার: এবি পার্টি

| আপডেট :  ১৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:২৭  | প্রকাশিত :  ১৪ জুলাই ২০২৪, ০৫:২৭


নগরবাসী গরমে পুড়ে-বৃষ্টিতে ডুবে, সরকার নির্বিকার: এবি পার্টি

বিবার্তা প্রতিবেদক


সরকারের উপর্যুপরি ব্যর্থতায় শুধু দেশের অর্থনীতিই বিপন্ন হচ্ছেনা, নাগরিক জীবনে নেমে আসছে ভয়াবহ বিপর্যয়। একদিকে দেশের ২০টি জেলা বন্যায় বিপর্যস্ত অন্যদিকে ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরগুলোর নাগরিকেরা গরমে পুড়ে ও বৃষ্টিতে হাবুডুবু খায়- এটাই যেন তাদের নিয়তি! সরকার এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ নির্বিকার।

১৪ জুলাই, রবিবার বিজয় নগরস্থ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এসব অভিযোগ করেন আমার বাংলাদেশ পার্টি- এবি পার্টি’র কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

সম্প্রতি ৩ ঘণ্টার বৃষ্টিতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ শহর তলিয়ে যাওয়া ও নগর জীবনে মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ততার প্রেক্ষাপটে এই মিডিয়া ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হয়।

এবি পার্টির যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ দলের পক্ষ থেকে প্রাসঙ্গিক বিষয়ে ব্রিফ করেন। এছাড়া সাংবাদিকদের করা বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন দলের আহ্বায়ক এএফএম সোলায়মান চৌধুরী, সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু ও কেন্দ্রীয় কমিটির অন্যতম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম।

ব্রিফিংকালে ব্যারিস্টার আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, গত ১২ জুলাই, শুক্রবার কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিপাতে গোটা ঢাকা শহর পানির নিচে তলিয়ে যায়। ১৩০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতেই পুরো ঢাকা অচল হয়ে পড়ে। অথচ কিছুদিন আগেই ঢাকার দুই মেয়র প্রায় ৭৫০ কোটি টাকা ব্যয় করেছেন পানি নিষ্কাশন করার জন্য। জনগণ জানতে চায় এই টাকা কোথায় গেলো?

তিনি বলেন, আমরা বিভিন্ন মিডিয়ায় দেখেছি ঢাকার ব্যবসায়ীরা এই বৃষ্টিতে কয়েকশত কোটি টাকার ক্ষতিতে পড়েছেন। বিশেষ করে নিউমার্কেট, পুরানো ঢাকা, মিরপুর, সেগুনবাগিচা ঢাকার অধিকাংশ এলাকার ব্যবসায়ীদের গোডাউনে মজুদদ্রব্য নষ্ট হয়ে গেছে।

তিনি আরো বলেন, আমরা চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনেও দেখেছি প্রায় ১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করা হয়েছে পানি নিষ্কাশনের জন্য। কিন্তু বৃষ্টি হলে দেখা গেলো মেয়র সাহেব নিজেই পানির কারণে বাসা থেকে বের হতে পারছেন না। বাস্তবতা হলো দেশে কোন পানি নিষ্কাশন, পয়োনিষ্কাশন বা বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কোনো সিস্টেম গড়ে তোলা হয়নি। শুধু মাত্র বরাদ্দকৃত অর্থ সমূহ লুট করাই এই সরকারের একমাত্র উদ্দেশ্য।

তিনি জনগণকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আমাদের নিজেদেরও সচেতন হতে হবে পরিবেশ সম্পর্কে। বিশেষ করে যত্রতত্র প্লাস্টিক ও পলিব্যাগ ফেলা বন্ধ করতে হবে। ১৯৯৫ সালে পরিবেশ সংরক্ষণ আইনে পলিথিন ব্যাগ উৎপাদন, বিক্রয় ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করে আইন করা হলেও এখনো তা কার্যকর করা হচ্ছেনা বরং সর্বত্র পলিথিনে সয়লাব হয়ে পড়েছে। এই আইনটি যথাযথ কার্যকর করলে দেশে পাটের সঠিক ব্যবহার বাড়তো, সেই সাথে পরিবেশও এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতি থেকে রক্ষা পেতো।

মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেন, ২০০৯ সালে বর্তমান সরকারের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা বলেছেন রাজধানীবাসীকে আর পানিতে ভোগতে হবে না। অথচ প্রতিবছরই মানুষ সামান্য বৃষ্টি হলেই নিদারুণ ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। ২০১৭ সালে মন্ত্রীরা আবার প্রতিজ্ঞা করে বলেছেন পরের বছর পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা হচ্ছে। চট্টগ্রাম, সিলেটসহ ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন এর মধ্যে হাজার কোটি টাকা খরচ করেছেন। গত বছর ঢাকার মেয়রদ্বয় ঘোষণা দিয়েছেন সমস্যার সমাধান হয়ে গেছে। সারাদিন বৃষ্টি হলেও ঢাকায় আর পানি জমবে না। অথচ গত পরশুদিন মাত্র তিন ঘণ্টায় ঢাকার মানুষ ভয়াবহ অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছে।

তিনি বলেন, এই সরকারের উপর্যুপরি ব্যর্থতায় শুধু দেশের অর্থনীতিই বিপন্ন হচ্ছেনা, নাগরিক জীবনে নেমে আসছে ভয়াবহ বিপর্যয়। একদিকে দেশের ২০ টি জেলা বন্যায় বিপর্যস্ত অন্যদিকে ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরগুলোর নাগরিকেরা গরমে পুড়ে ও বৃষ্টিতে হাবুডুবু খায়-এটাই যেন তাদের নিয়তি! সরকার এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ নির্বিকার। তিনি দেশবাসীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, সকল বঞ্চিত ও ক্ষতিগ্রস্তরা আসুন এই দু:শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হই।

এসময় মিডিয়া ব্রিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন এবি পার্টির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আনোয়ার সাদাত টুটুল, সিনিয়র সহকারী সদস্যসচিব এবিএম খালিদ হাসান, সহকারী সদস্যসচিব শাহ আব্দুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী নাসির, উত্তরের সদস্যসচিব সেলিম খান, দক্ষিণের যুগ্ম সদস্যসচিব সফিউল বাসার, আহমেদ বারকাজ নাসির, কেফায়েত হোসেন তানভীর, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল হালিম নান্নু, যুবপার্টি মহানগর উত্তরের সদস্যসচিব শাহিনুর আক্তার শীলা, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শাহজাহান ব্যাপারী, আমেনা বেগম, রুনা হোসাইন, মশিউর রহমান মিলু, মশিউল আজম সাকিব, রিপন মাহমুদ, পল্টন থানা আহ্বায়ক আব্দুল কাদের মুন্সি, যাত্রাবাড়ি থানা আহ্বায়ক সিএমএইচ আরিফ, পল্টন থানা সদস্যসচিব রনি মোল্লাসহ কেন্দ্রীয় ও মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

বিবার্তা/এমজে

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত