নন্টে-ফন্টে আর বাঁটুল দি গ্রেটের ভবিষ্যৎ

| আপডেট :  ১৯ জানুয়ারি ২০২২, ১০:২৯  | প্রকাশিত :  ১৯ জানুয়ারি ২০২২, ১০:২৯

ষাটের দশকে হাফপ্যান্ট পরে বুক উঁচিয়ে চলে ‘বাঁটুল দি গ্রেট’ বুঝিয়ে দিয়েছিল—বাংলাও পারে। যারা ষাটের দশকের সেই উদ্ভাবনকে সঙ্গে নিয়ে বড় হয়েছেন তাদের সন্তানদের সন্তানরাও এই একবিংশ শতকে একই উৎসাহ নিয়ে দেখছেন বাঁটুল দি গ্রেট। সেই যে তার পোশাক, বাঁটুলের আচরণ ও উপস্থিতি নিয়ে একটি চরিত্র তৈরি হয়েছিল তা অবিনশ্বর। সেই আবিষ্কারক নারায়ণ দেবনাথ ৯৭ বছর বয়সে মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) চলে গেলেন।

বাংলাদেশে যারা কমিকস চরিত্র তৈরির কাজ করেন, যারা কার্টুন নিয়ে কাজ করেন, তারা বলছেন, নারায়ণ দেবনাথ একটা উদাহরণ রেখে গেছেন। তাদের কারও কারও সঙ্গে নারায়ণ দেবনাথের যোগাযোগও হয়েছিল। তারা বলছেন, নারায়ণ দেবনাথ চাইতেন না আর কেউ আঁকুক। তবে তিনি তার কপিরাইট নাতনিকে দিয়ে গেছেন। টেকনিক্যাল কোনও ব্যাপার না থাকলে এ চরিত্রগুলো এগোতেও পারে। সময় দিতে হবে।

কার্টুনিস্ট মেহেদি বলেন, ‘উনার ক্যারেক্টারগুলো আর এগুনোর কথা নয়। তিনি নিজে বলেছিলেন, আর কেউ আঁকুক আমি চাই না। তাঁর সাথে ২০১৬ সালে দেখা হয়েছিল। প্রতিটা সেক্টরে একজন থাকেন। যেমন আমেরিকার ওয়াল্ট ডিজনি। নারায়ণ দেবনাথ সেই সময় কাজ শুরু করেছেন যখন কেউ করার কথা ভাবেনি। তিনি দীর্ঘায়ু পেয়েছেন, অনেকদিন সক্রিয় থেকেছেন এবং একটা ভিত্তি তৈরি করে দিয়েছিলেন। পদ্মশ্রীর মতো সম্মান জীবদ্দশায় পেয়েছেন। একহাতে এতগুলো কাজ! উনার কথা উঠলে কমিকসটা দেখি, বইয়ের কাভার ইলাস্ট্রেশন, ভলিউম, জনপ্রিয়তা; সব মিলিয়ে তিনি অনন্য। উনি ধ্যানী। ব্র্যান্ড আছে তার। সেই তুলনায় অনাড়ম্বর জীবন যাপন করতেন।’

এই শিল্পীর কাজের ধরন নিয়ে কার্টুনিস্ট সৈয়দ রাশেদ তন্ময় বলেন, ‘মারা যাওয়ার আগপর্যন্ত এঁকে গেছেন। অনেককে দেখা যায় ক্রাফটের ব্যাপারগুলো একটা সময় ছেড়ে অন্য ১০টা জিনিসে ব্যস্ত হয়ে যায়। উনি সেটা না করে উদাহরণ রেখে গেছেন। ক্যারেক্টার তৈরি করা, নিজেদের গল্প বলা, এটা দীর্ঘ সময় কন্টিনিউ করে গেছেন। এটা একটা বড় উদাহরণ বটে।’

কার্টুনিস্ট মোর্শেদ মিশু মনে করেন, ‘কপিরাইটের জটিলতা না থাকলে এই চরিত্রগুলো এগিয়ে যেতেই পারে। তিনি ক্যারেক্টার তৈরি করে গিয়েছেন। সেসবে নতুন গল্প আসবে কিনা সেটা পরে সময় ঠিক করবে। গল্পগুলো হয়তো এগোবে। হয়তো ভিন্নভাবে- মুভি, এনিমেটেড সিরিজ আকারে আসবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শিল্পীরা চান তার সৃষ্ট চরিত্ররা যেন বেঁচে থাকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে যখন কমিকস শুরু হচ্ছে তখন আমাদের সামনে উনারাই ছিলেন। নন্টে-ফন্টে হাঁদা-ভোঁদা শৈশব থেকে আমাদের উৎসাহ-বিনোদন যুগিয়ে করে আসছে। অসময়ে চলে যাওয়া বলতে পারবো না। যে শৈশব দিয়ে গেছেন তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’
সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত