পদোন্নতি বঞ্চনার অভিযোগ, সংশ্লিষ্টদের জবাব

| আপডেট :  ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮:৩৭  | প্রকাশিত :  ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৮:৩৬

যথারীতি আবারও পদোন্নতি বঞ্চনার অভিযোগ। এ অভিযোগের ঘেরাটোপ থেকে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং এসএসবি (সুপিরিয়র সিলেকশন বোর্ড) যেন বের হতে পারছে না। এবারও কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি পাননি। এমনটা দাবি করে তাদের কয়েকজন যুগান্তরকে জানিয়েছেন, এবারের পদোন্নতিতে তারা স্বজনপ্রীতির মতো বিষয়ও দেখতে পাচ্ছেন, যা সত্যি হলে সবার জন্য দুর্ভাগ্যজনক হবে। বিপরীতে সব শর্ত পূরণ থাকার পরও অনেকের ভাগ্যে পদোন্নতি হয়নি। কেউ কেউ এ বঞ্চনায় হ্যাটট্রিক করেছেন। কেউ বঞ্চিত প্রথম কিংবা দ্বিতীয় দফায়।

এদিকে বরাবরের মতো এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। তারা বলছেন, যারা পদোন্নতি পাননি, ধরে নিতে হবে তাদের প্রত্যেকের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কারণ আছে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (এপিডি) আনিছুর রহমান মিঞা বুধবার বলেন, ‘এসএসবি অনেক যাচাই-বাছাই করে যোগ্যদের পদোন্নতি দিয়েছেন। এর বাইরে আমার কোনো মন্তব্য নেই।’

প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার প্রশাসনে ৯২ জনকে অতিরিক্ত সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়। নিয়মিত ব্যাচ হিসাবে প্রশাসনের ১৩তম ব্যাচের অবশিষ্ট ৩৪জন কর্মকর্তা ছাড়াও লেফটআউট তালিকা থেকে যাচাই-বাছাই করা হয় অনেকের আমলনামা।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আগের লেফটআউটসহ ১৩তম ব্যাচ থেকে পদোন্নতিযোগ্য ১০৫ জন কর্মকর্তা থাকলেও পেয়েছেন মাত্র ৪৮ জন। এছাড়া ১১তম ব্যাচসহ সিনিয়র ব্যাচের লেফটআউট তালিকা থেকে অনেকের নাম বিবেচনায় আনা হলেও শেষ পর্যন্ত তাদের অনেকেই টিকে থাকতে পারেননি। নানা বিশ্লেষণ, পর্যালোচনা ও সীমাবদ্ধতার কারণে বাদ পড়েছেন অনেকে। তাই সিনিয়র লেফটআউটদের মধ্যে বঞ্চিতদের ক্ষোভ-অসন্তোষ একটু বেশি।

কেউ কেউ অনুযোগ করে বলেছেন, ‘আমরা পদোন্নতি বিবেচনার কোনো পলিসি বুঝতে পারছি না। যারা বর্তমান সরকারের আমলে মন্ত্রীদের পিএস এবং ডিসিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালন করেছেন, তাদের কেউ কেউ অতিরিক্ত সচিব হতে না পারা বড় বিস্ময় তৈরি করেছে। অথচ বিপরীত সে াতোধারার অনেকে পদোন্নতি পেয়েছেন, যা তারা কোনোভাবে মেনে নিতে পারছেন না।’

পদোন্নতিবঞ্চিত কয়েকজন আরও বলেন, ‘যারা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, সেতু বিভাগ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, অর্থ বিভাগসহ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দপ্তরে কর্মরত, তাদের প্রায় সবাই পদোন্নতি পেয়েছেন। এটি দোষের কিছু না। যোগ্যতা থাকলে অবশ্যই পাবেন। কিন্তু আমরা যখন শুনি, পরিচিত না হওয়ার কারণে কেউ কেউ বাদ পড়েছেন, তখন বিষয়টি মেনে নেওয়া খুবই কষ্টকর। তবু আমরা ধরে নিতে চাই, এ ধরনের অভিযোগ সঠিক নয়।’

কেউ কেউ বলেন, ইকোনমিক ক্যাডার থেকে যারা প্রশাসন ক্যাডারে একীভূত হয়েছেন, তাদের পদোন্নতি বৈতরণি পার হওয়া যেন একেবারে সহজ বিষয়। যত সমস্যা ও প্রশ্ন প্রশাসন ক্যাডারের ক্ষেত্রে। তারা বলেন, ১৩তম ব্যাচের অন্তত ১৫ জন ‘ফার্স্ট ক্লাস’ কর্মকর্তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। ব্যাচের কেউ মানতে পারছেন না। যারা পদোন্নতি পেয়েছেন, তারাও বিব্রত।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব ড. বশিরুল আলম উপসচিব থাকাকালে বর্তমান সরকারের আমলেই বরগুনার ডিসি ছিলেন। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব কবির আহমেদ দীর্ঘ সময় প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব ও বর্তমানে একই মর্যাদায় সরকারি দায়িত্বে থাকা কামাল নাসের চৌধুরীর একান্ত সচিব ছিলেন। এছাড়া আবু যোবায়ের বাবলু, আহসান কবীর, হামিদুর রহমান খান, রবীন্দ্র শ্রী বড়ুয়া, কৃষন কান্ত বিশ্বাস, শাহ আলম সরকার, মো. হিরুজ্জামান, জালাল আহমেদসহ অনেকেই বঞ্চিত।সূত্র: যুগান্তর

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত