পুঁজিবাজারে স্বস্তি, শেষ কার্যদিবসে সূচকের বড় উত্থানে বাড়ল লেনদেন

| আপডেট :  ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪৬  | প্রকাশিত :  ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৭:৪৬


পুঁজিবাজারে স্বস্তি, শেষ কার্যদিবসে সূচকের বড় উত্থানে বাড়ল লেনদেন

বিবার্তা প্রতিবেদক


প্রায় আড়াই বছর ধরে পতনের বৃত্তে আটকে রয়েছে দেশের পুঁজিবাজার। ফলে লাখের বেশি বিনিয়োগকারী নিঃস্ব হয়ে পথে বসে গেছে।

গত আড়াই বছরে প্রায় সপ্তাহেই বিনিয়োগকারীরা পতনের বড় ঝাপ্টা দেখেছে। কোন কোন দিন পতনের তাণ্ডব সেঞ্চুরী ছুঁয়েছে। এই সময়ে কিছু কিছু সময়ে উত্থানও হয়েছে। যা ছিল যৎসামান্য। যদিও পতনের বহু সেঞ্চুরী দেখেছে। দীর্ঘ দিন পর বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারে উত্থানের সেরা সেঞ্চুরী দেখেছে। আজ ডিএসইর সূচক বেড়েছে প্রায় ১২৪ পয়েন্ট। যা স্বরণকালের মধ্যে সর্বোচ্চ।ফলে স্বস্থি ফিরছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ২০ জানুয়ারি ডিএসইর প্রধান সূচক ছিল ৭ হজার ১০৫ পয়েন্ট। তারপর থেকেই শেয়ারবাজারে শুরু হয় ধারাবাহিক পতন। যা চলতি সপ্তাহের প্রথমভাগ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। গত ৩০ জুন ডিএসইর সূচক ছিল ৫ হাজার ৩২৮ পয়েন্টে। সেই হিসাবে গত আড়াই বছরে ডিএসইর সূচক উধাও হয়ে গেছে ১ হাজার ৭৭৭ পয়েন্ট। গত তিনদিনে সূচক ১৬৯ পয়েন্ট বেড়ে আজ দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার ৪৯৭ পয়েন্টে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গতকাল বুধবার শেয়ারবাজারে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বিনিয়োগ করার অনুমতি প্রদান করার একটি খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। সেই খবরে আজ পুঁজিবাজারে বড় উত্থান দেখা গেছে।

তারা বলছেন, পুঁজিবাজার এমনিতে পতনের চাপে সর্বনিম্ন তলানিতে এসে ঠেকেছে। যেখান থেকে সামনে যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। এর সঙ্গে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বিনিয়োগ করার ইতিবাচক খবরটি পুঁজিবাজারকে আরও সামনে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) দেশের দুই শেয়ারবাজারে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) ও চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের বড় উত্থানের মধ্যে দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন আগের কার্যদিবসের চেয়ে টাকার অঙ্কে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে। একইসঙ্গে ডিএসই ও সিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দাম বেড়েছে।

ডিএসই ও সিএসই সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বাজার বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ১২৩.৭১ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৪৯৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। ডিএসই শরিয়া সূচক ২২.১৪ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ২০৮ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ৩৮.৪০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৫১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।

ডিএসইতে মোট ৩৯৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ৩৬৫টি কোম্পানির, কমেছে ১৩টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৮টির।

ডিএসইতে এদিন মোট ৭৭০ কোটি ৭০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫৩৯ কোটি ২৭ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট। ডিএসইতে এদিন লেনদেনে শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকায় প্রথমে উঠেছে ওরিয়ন ফার্মাসিউটিকেলসের শেয়ার। কোম্পানির ৩৭ লাখ ৪৩ হাজার ৬০৮টি শেয়ার কেনা-বেচা হয়েছে।

এসব শেয়ারের বাজার মূল্য দাঁড়িয়েছে ২৭ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। লেনদেনে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠেছে ব্র্যাক ব্যাংক পিএলসি। কোম্পানিটির ৫৬ লাখ ৩৫ হাজার ৮১৪টি শেয়ার লেনদেন হয়েছে। যার বাজার মূল্য দাঁড়ায় ১৯ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। লেনদেন তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সী পার্ল বিচ অ্যান্ড এস্পা লিমিটেড। কোম্পানির ১৮ লাখ ৫৬ হাজার ৬৪৯টি শেয়ারের হাত বদল হয়েছে। এসব শেয়ারের বাজার দর ছিল ১৭ কোটি ২১ লাখ টাকা। এরপর লেনদেনে শীর্ষ তালিকায় যথাক্রমে রয়েছে- আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, সাইফ পাওয়ারটেক, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ লিমিটেড, লাভেলো আইসক্রিম, বেস্ট হোল্ডিংস ও মালেক স্পিনিং মিলস লিমিটেড।

অপরদিকে, চট্টগ্রামকেন্দ্রিক শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সার্বিক সূচক বা সিএএসপিআই ৩৩৪.৩১ পয়েন্ট বেড়ে ১৫ হাজার ২৫৭ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে ২৪৭টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে ২০১টি কোম্পানির, কমেছে ২৭টির এবং অপরিবর্তিত আছে ১৯টির।

দিন শেষে সিএসইতে ২৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

বিবার্তা/লিমন

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত