ফের আলোচনায় দুদক মামলার আসামি ঠাকুরগাঁওয়ের শহিদুল

| আপডেট :  ১৬ আগস্ট ২০২৪, ০৫:২২  | প্রকাশিত :  ১৬ আগস্ট ২০২৪, ০৫:২২


ফের আলোচনায় দুদক মামলার আসামি ঠাকুরগাঁওয়ের শহিদুল

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি


দুর্নীতির অভিযোগে সম্প্রতি বদলি হওয়া দুদক মামলার আসামি ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের ৪র্থ শ্রেণির সাবেক অফিস সহকারী কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক শহিদুল ইসলাম পুনরায় ঠাকুরগাঁওয়ে ফিরতে দপ্তরে দপ্তরে জোর তদবির চালাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দুর্নীতির অভিযোগে তার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে একটি মামলাও চলমান রয়েছে।

তার বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করায় সাংবাদিকদের দেখে নেয়ার হুমকিসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার চালাচ্ছে। হুমকি ও অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন এক সাংবাদিক।

জানা গেছে, দুর্নীতিসহ বেশ কয়েকটি অভিযোগে চলতি বছরের ১০জুন রংপুর বিভাগীয় কমিশনার মো. জাকির হোসেনের স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে শহিদুল ইসলামকে কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) কার্যালয়ে বদলি করা হয়।

তার দুর্নীতি ও বদলির সংবাদ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ফলাও করে যেসব সাংবাদিক প্রচার করেছিলেন তাদের নামে বিভিন্ন ফেইক একাউন্ট খুলে (ফেসবুক) বিভ্রান্তমূলক কথাবার্তা ও অপপ্রচার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে শহিদুলসহ সহযোগীদের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, দুর্নীতির অভিযুক্ত ব্যক্তি শহিদুল আবারো ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে যোগদানের জন্য বিভিন্ন দপ্তরে দপ্তরে ধর্না দিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন একটি সূত্র।

কর্মচারী শহিদুল ইসলামের বেপরোয়া দুর্নীতি ও অনিয়মে খোদ অতিষ্ট তাঁর অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও। তবে শহিদুল ইসমালের এমন কার্যকলাপের জন্য তীব্র নিন্দা প্রতিবাদ  জানিয়েছেন জেলার কর্মরত সাংবাদিকরা।

তারা জানান, শহিদুল ইসলাম ডিসি অফিসের সামান্য কর্মচারী হয়ে কয়েক বছরে কয়েক কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক বনে যায়। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে সেই সংবাদ প্রকাশিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে দুদকে একটি মামলা হয়। যা এখনো চলমান। দুদকে মামলা হওয়ার পরেও সে থেমে নেই। একের পর এক অনিয়ম দুর্নীতি করতেই থাকে।

উল্লেখ্য, জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে জেলার পীরগঞ্জে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে জেনে সেই নির্ধারিত জায়গা নিতে শহিদুল ইসলাম গ্রামের সহজ সরল মানুষকে ভুল বুঝিয়ে বাজারমূল্যের চেয়ে কম দামে জমি ক্রয় করে। এরপর সেই জমি সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে কয়েকগুন অর্থাৎ উচ্চমূল্যে বিক্রি করে সরকারের কাছে। শুধু তাই নয়, সরকারের টিসিবির পণ্য প্যাকেটজাত করণে লাখ লাখ টাকা আত্নসাতের অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। তদন্ত করে প্রমাণ পাওয়ায় তাকে বদলি করা হয় কুড়িগ্রাম জেলায়।  মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে কয়েক কোটি টাকার মালিক বনে যায় কর্মচারি শহিদুল। হঠাৎ করেই এত সম্পদের মালিক হওয়ায় শহরজুড়ে চলে আলোচনা ও সমালোচনা।

ডিসি অফিসে সামান্য বেতনের কর্মচারী এখন ঠাকুরগাঁও শহরের বড় মাঠের পাশে নির্মাণ করেছেন বহুতল আলিশান বাড়ি। এছাড়াও শহরে ৮ শতক জমির উপর বসতভিটা, সদরের শিংপাড়া এলাকায় তার ৬০ শতক জমি ও আবাদি ১ একর জমি রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) একটি মামলা চলমান রয়েছে।

শুধু তাই নয় গত ৩ জুন  জেলা শিল্পকলা একাডেমি অডিটোরিয়ামে ‘রুখব দুর্নীতি গড়ব দেশ, হবে সোনার বাংলাদেশ’ স্লোগানে আয়োজিত গণশুনানিতে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কর্মকর্তাদের সামনে শহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনিয়ম, ক্ষমতা অপব্যবহার ও ঘুষ বাণিজ্যসহ অবৈধভাবে সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করেন জেলার সাংবাদিকরা। শহিদুলের দুর্নীতির অভিযোগ তোলা হলে উপস্থিত জনতাও তাঁর বিরুদ্ধে দুদক সচিবকে অভিযোগ করেন।

এ ব্যাপারে শহিদুল ইসলামের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।

থানায় অভিযোগের বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এবিএম ফিরোজ ওয়াহিদ জানান, সংবাদকর্মীর নামে পপ্রচারের বিষয়টি নজরে এসেছে আইনশৃখলাবাহিনী তাকে সনাক্ত করার চেষ্টা করছে। পেলেই নেয়া হবে আইনগত ব্যবস্থা।

এ বিষয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক মাহবুবুর রহমান জানান, যে যেমন করবে তার ফল পাবে। দুর্নীতির বিষয়ে কোন আপস নেই। এরই মধ্যে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। দুদকে মামলা চলমান রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সম্প্রতি গণশুনানিতে কর্মকর্তা বলেছেন দ্রুতই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবেন।

বিবার্তা/মিলন/এসবি

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত