ফেসবুকে প্রেমে সর্বস্ব হারিয়ে মৃত্যুশয্যায় যুবক

| আপডেট :  ১৪ এপ্রিল ২০২২, ০৩:০৮  | প্রকাশিত :  ১৪ এপ্রিল ২০২২, ০৩:০৮

ফেসবুকে প্রেমের ফাঁদে পড়ে সর্বস্ব হারিয়ে মৃত্যুশয্যায় রয়েছে ময়মনসিংহের ভালুকার তামাট এলাকার বাসিন্দা জালাল উদ্দিনের ছেলে ফজলে রাব্বী (১৬)। বর্তমানে মূমুর্ষ অবস্থায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে সে। এদিকে মুমূর্ষ এই ফজলে রাব্বীকে আসামি করে পর্ণোগ্রাফি আইনে একটি মামলা আমলে নেন ভাঙ্গা থানা পুলিশ ।

জানা গেছে, ফরিদপুর জেলার ভাঙ্গা উপজেলার সোনামূখির চর গ্রামের জনৈকা জয়ার সাথে ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে । তাদের সম্পর্ক পোক্ত হয় তিন বছরের ফেসবুক প্রেম। এসময় জয়া কৌশলে ফজলে রাব্বীর নিকট থেকে নানা প্রলোভনে হাতিয়ে নেয় দুই লক্ষাধিক টাকা । গত সোমবার ( ১১ এপ্রিল) জয়া নিজের বাড়িতে ফজলে রাব্বীকে টাকা স্বর্ণালংকার নিয়ে আসতে বলে, তাদের বিয়ে হবে এমন কথা জানান। জয়ায় বাবা মা রাজি । এতে ফজলে রাব্বি মায়ের ৪ ভড়ি ওজনের গয়না স্বর্ণালংকার, নগদ দেড় লাখ টাকা নিয়ে হাজির হন জয়ায় বাড়িতে । কথামত বাড়িতে এসে সে রীতিমত হতবাক। জয়ার বাবা-মা, আত্বীয়- স্বজন, তাদের লোকজন আচমকা এলাপাথাড়ি মারধর শুরু করে ফজলে রাব্বিকে । চলতে থাকে কিল ঘুষি বেঁধে নির্যাতন।এক পর্যায়ে স্বর্ণালংকার টাকা পয়সা রেখে আরো ৫ লাখ টাকা বাড়ি থেকে নিয়ে আসতে বলা হয় তাকে।

এক পর্যায়েএকটি ঘরে আটকে রেখে এ নির্যাতন চালায় । নির্মম পাষবিক এই নির্যাতনের খবর পোঁছায় স্থানীয় সাংবাদিকদের কানে পৌঁছালে পড়ে রাব্বীকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয় । সেখানকার চিকিৎসকরা আশঙ্কাজনক দেখে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করেন । সেখানকার চিকিৎসক রাব্বিকে মূমুর্ষ দেখে পর্বরতীতে ঢাকা মেডিকেল কলে হাসপাতালে প্রেরন করা হয়।এদিকে মুমূর্ষ এই ফজলে রাব্বীকে আসামি করে পর্ণোগ্রাফি আইনে একটি মামলা আমলে নেন ভাঙ্গা থানা পুলিশ । জয়া নামের মেয়েটি বাদী হয়ে এই মামলা দায়ের করেন । মামলার প্রেক্ষিতে রাব্বী এখন পুলিশ হেফাজতে থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।

ফজলে রাব্বীর মা রাশিদা বিডি২৪লাইভকে জানান, জয়া আমাদের অগোচরে ছেলের নিকট থেকে টাকা নিত। এখন ৫ লাখ টাকা দাবি করেছে তার পরিবার। ছেলে হাসপাতালে শুনেই টাকা সংগ্রহ করে আমার মেয়ে রাব্বীর বোন জুঁইকে সাথে নিয়ে যাই ফরিদপুর ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে । এরপর যাই ভাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসির কাছে । অভিযোগ দিতে গেলে ওসি অভিযোগ নিবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন। পরে ওসি অশোভন আচরণ করেন ফজলে রাব্বির বড় বোন জুঁইয়ের সাথে । আমাদেরকেও ফজলে রাব্বীর মত গ্রেফতার করা হবে বলে শাঁশিয়ে থানা থেকে বের করে দেন । এত কিছুর পরও উপরন্তু , গুরুতর অসুস্থ ফজলে রাব্বীকে হাসপাতাল থেকে পুলিশ তাদের হেফাজতে থানায় এনে প্রায় ৩ ঘন্টা হাজতে আটকে রাখার অভিযোগ উঠেছে ।

মানবাধিকার কর্মী খন্দকার সজল জানান, অসুস্থ ব্যক্তিকে থানা হাজতে আটকে রাখা মানবাধিকার লঙ্ঘন । পুলিশের কাছে এটা কাম্য নয় । মামলার তদন্তকারী অফিসার এসআই তাহাসান জানান,ফজলে রাব্বিকে অমানষিক নির্যাতন করা হয়েছে । নির্যাতন করেছে মামলার বাদী – স্বাক্ষী ও তাদের লোকজন । প্রাথমিক তদন্তে এমনই পাওয়া গেছে মন্তব্য করে বলেন, ফজলে রাব্বীর পক্ষ থেকে আদালতের মাধ্যমে আবেদন করলে রাব্বী জামিন পেতে পারে ।

ভাঙ্গা থানার ওসি সেলিম রেজা বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে । তার বিরুদ্ধে পর্ণোগ্রাফী আইনে মামলা হয়েছে । ফজলে রাব্বীকে নির্যাতন করা হয়েছে সত্যতা পাওয়া গেছে । ফজলে রাব্বীর পরিবারের পক্ষ থেকে এব্যাপারে অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে ।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত