বর্ধিত সময়ে চলছে বইমেলা, যা থাকছে

| আপডেট :  ০১ মার্চ ২০২৪, ১২:১৭  | প্রকাশিত :  ০১ মার্চ ২০২৪, ১২:১৭


বর্ধিত সময়ে চলছে বইমেলা, যা থাকছে

শিল্প-সাহিত্য

বিবার্তা প্রতিবেদক


প্রকাশকদের আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ নির্দেশনায় বইমেলার সময় বেড়েছে দুই দিন। এতে আজ শুক্র ( ১ মার্চ)  ও শনিবার (২ মার্চ) ও চলবে বইমেলা।

এ দুই দিন মেলা শুরু হবে বেলা ১১টায়। তবে শিশুপ্রহর থাকবে না। সবার জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে ওই সময় থেকে।

মেলার আয়োজন সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ দুই দিন মূলত বই বিক্রিই মেলার মুখ্য বিষয় থাকবে প্রকাশকদের। মেলার অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা তেমন থাকছে না।

মেলা উপলক্ষে প্রথম দিন থেকে মূল মঞ্চে প্রতিদিনই ছিল আলোচনা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। লেখক বলছি মঞ্চে থাকতো বই নিয়ে কথোপকথন।

এছাড়া এবার মেলার মধ্যভাগে এসে ‘বই-সংলাপ ও রিকশাচিত্র প্রদর্শন’ নামে আরেকটি নতুন মঞ্চও চালু করা হয়। গত সপ্তাহজুড়ে এই মঞ্চেও বই নিয়ে আলাপ-অনুষ্ঠান হয়েছে। তবে বর্ধিত দুই দিন এই মঞ্চগুলো থাকবে নিরব। কারণ মেলার আয়োজন প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পনায় যে অনুষ্ঠান সাজানো ছিল তার অনানুষ্ঠানিক সমাপনি হয়ে গেছে।

বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, “আমরা তো সমাপন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করেছিলাম। এখন হুট করেই মেলা বাড়ানোর কারণে আমাদের আয়োজনে আর নতুন করে কিছুই হচ্ছে না। ২৯ ফেব্রুয়ারি যে সমাপন আনুষ্ঠানিকতা হওয়ার কথা ছিল, সেটি ২ মার্চ হবে।

“এছাড়া আর কোনো আনুষ্ঠানিকতা আমাদের দিক থেকে নেই। প্রতিদিনের রুটিন যে কাজ সেগুলো করে যাব।”

প্রকাশকরা খুশি হলেও বইমেলার মেয়াদ বাড়ানোর খবরে খুব একটা খুশি হতে পারেননি বাংলা একাডেমির কর্মকর্তা-কর্মচারিরাও। মেলার বিভিন্ন প্রকাশনীর স্টলের বিক্রয়কর্মীদের অনেকেও বিরক্তি প্রকাশ করেছেন।

তাদের ভাষ্য, ২৯ ফেব্রুয়ারি মেলা শেষ হবে এবং সেভাবে অনেকেই সেভাবে তাদের কাজের পরিকল্পনা সাজিয়েছিল। কিন্তু হুট করে মেলার সময় বাড়ার কারণে তাদের সব পরিকল্পনা ভেস্তে গেছে।

একাডেমির কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী নাম প্রকাশ না করে বলেন, মেলার অন্তত দুই মাস আগে থেকেই এই মেলা নিয়ে তাদের কাজে ব্যস্ত হতে হয়। মেলার শেষ সপ্তাহে এসে তাদের সবার মাঝে ক্লান্তি ভর করে। এখন হুট করে দুই দিন বাড়ার কারণে তারা কেউ খুশি হতে পারছেন না।

বইমেলা পরিচালনা কমিটির সদস্য সচিব কে এম মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, “এটা তো সত্য, আমাদের কর্মীদের অনেকেই খুব ক্লান্ত। কারণ টানা দেড়-দু’মাস ধরে বইমেলার কাজ নিয়েই আমরা সবাই ব্যস্ত আছি। মেলার পর অনেকের নানা রকম পরিকল্পনা হয়তো রয়েছে। কিন্তু যেহেতু মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মেলা বাড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছেন, আমরা সবাই সক্রিয় আছি।”

অন্যদিকে লেখক-প্রকাশকদের অনেকে মেলা বাড়ানোর খবরে মনে করছেন, এই দুই দিন মানুষের ঢল নামবে মেলায়। আনন্দে ভাসবে মেলা প্রাঙ্গণ।

বাতিঘর এর স্বত্ত্বাধিকারী দীপঙ্কর দাশ বলেন, “দুই দিন বাড়ার কারণে যারা নানা কারণে সময় করে উঠতে পারেননি মেলায় আসার, তারা আসতে পারবেন। এটা ভালো হয়েছে। দুই ছুটির দিনে লেখক-পাঠক এবং বইপ্রেমীদের আড্ডায় মুখর হবে মেলা।”

বৃহস্পতিবার ছিল বইমেলার ২৯তম দিন। মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায় এবং চলে রাত ৯টা পর্যন্ত।

মেলা পরিচালনা কমিটির জনসংযোগ বিভাগ জানায়, বৃহস্পতিবার মেলার তথ্যকেন্দ্রে নতুন বই এসেছে ১২৭টি। মেলার ২৯তম দিনে ৩ হাজার ৩৮৩টি।

মেলায় সৌম্য প্রকাশনী থেকে এসেছে যতীন সরকারের ‘আমাদের চিন্তাচর্চার দিক-দিগন্ত’; বাংলা একাডেমি এনেছে সাজ্জাদ আরেফিনের ‘মুক্তিযুদ্ধের কবিতা পরিচয়’।

এছাড়া সুকুমার বিশ্বাসের ‘পূর্ববঙ্গের ভাষা আন্দোলন: সংবাদপত্রের ভূমিকা ও ইতিহাস’ (দুই খণ্ডে) এনেছে বোধি (তক্ষশিলার প্রকাশনা বিভাগ, স্টল নং: ৬০)।

গবেষণাধর্মী এ গ্রন্থের প্রথম খণ্ডে ১৯৪৭ থেকে ১৯৫১ সাল পর্যন্ত মোট তিনটি অধ্যায়ে পূর্ববঙ্গের বাংলা ভাষা আন্দোলনের গতিপ্রকৃতি এ পর্যন্ত অনাবিষ্কৃত এক গুচ্ছ চিঠিপত্র, উর্দু ভাষার পক্ষে জোরালো সওয়াল এ সবই আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে।

দ্বিতীয় খণ্ডে অন্তভুর্ক্ত করা হয়েছে ১৯৫২ সাল ও বায়ান্ন উত্তরকাল। বইটির মুদ্রিত মূল্য ১৭০০ টাকা। ২৫% ছাড় দিয়ে বিক্রি হচ্ছে ১২৭৫ টাকা।

এদিন লেখক বলছি অনুষ্ঠানে নিজেদের নতুন বই নিয়ে আলোচনা করেন লেখক ও আলোকচিত্রশিল্পী নাসির আলী মামুন, পুঁথি গবেষক জালাল খান ইউসুফী, কথাসাহিত্যিক মাহমুদুন নবী রনি ও কবি রনি রেজা।

মেলা পরিচালনা কমিটি জানিয়েছে, শুক্রবার বইমেলার ৩০তম দিন। মেলা শুরু হবে বেলা ১১টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

বিবার্তা/এসবি

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত