বাসাবাড়িতে ঢুকে পড়ছে অজগর

| আপডেট :  ০৮ অক্টোবর ২০২১, ০৮:৫৮  | প্রকাশিত :  ০৮ অক্টোবর ২০২১, ০৮:৫৮

সিলেট শহরতলির সৈয়দপুর গ্রামের একটি বাড়ির মুরগির ঘর থেকে একটি অজগর উদ্ধার করা হয়েছে। শুক্রবার (৮ অক্টোবর) সকালে বন বিভাগের কর্মীরা অজগরটি উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী টিলাগড় ইকোপার্কে অবমুক্ত করেন। এছাড়া বালুচর ও আলুরতল এলাকা থেকে আরও দুটি অজগর উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। এনিয়ে গত এক সপ্তাহে পাঁচটি অজগর উদ্ধার করা হলো।

বাড়িটি পাহাড়ি এলাকায় হওয়ায় খাদ্যের সন্ধানে গত ছয় মাসে পাঁচটি অজগর ঢুকেছে। গত এক সপ্তাহের ব্যবধানে ঢুকেছে তিনটি অজগর। তবে প্রথম দুটি সাপ স্থানীয়রা মেরে ফেলেন। সর্বশেষ তিনটি অজগর উদ্ধার করে সংরক্ষিত বনে অবমুক্ত করা হয়েছে। বাড়িঘর থেকে এভাবে অজগর উদ্ধার হওয়ায় স্থানীয়দের আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

বাড়ির মালিক রাবেয়া বেগম, শুক্রবার সকালে মুরগির ঘরে অজগর দেখে আমার জা আমাকে ডেকে আনেন। পরে বন বিভাগের কর্মী ও পরিবেশকর্মীদের খবর দিলে তারা বিশালাকৃতির সাপটি উদ্ধার করে নিয়ে যান। এর আগে ১ ও ২ অক্টোবর রাবেয়া বেগমের ঘর থেকে দুটি অজগর উদ্ধার করা হয়।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন-বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম বলেন, মূলত পাহাড়-টিলা দিন দিন ধ্বংস হওয়ায় জঙ্গলে অজগরের খাদ্য সংকট দেখা দিয়েছে। এ কারণে সাপগুলো লোকালয়ে বা বাসাবাড়িতে খাদ্যের সন্ধানে ঢুকে পড়ছে। তবে সাপগুলো বিষধর নয়। এগুলো নিরীহ প্রজাতির সাপ।

তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার পর্যন্ত নগরের আলুরতল ও বালুচর এলাকার দুটি বাড়ি থেকে আরও দুটি অজগর উদ্ধার করেছেন সিলেট বন বিভাগের কর্মীরা। এগুলোও টিলাগড় ইকোপার্কে অবমুক্ত করা হয়েছে।

‘আগে পাহাড়-টিলা ও চা-বাগানগুলোতে অনেক বনমোরগ ও কাঠবিড়ালি পাওয়া যেতো। এগুলো ছিল অজগরের প্রিয় খাদ্য। এসব এখন কমে গেছে। এ কারণে অজগর খাদ্য সংকটে পড়েছে। তাই বন ও চা-বাগানের আশপাশের যেসব বাড়িতে হাঁস-মুরগি আছে, সেসব বাড়িতে অনেক সময় অজগর ঢুকে পড়ে। যে বাড়িগুলো থেকে সাপ উদ্ধার হয়েছে সেগুলো টিলাগড় ইকোপার্কের পাশে। এর আশপাশে অনেক টিলা ও বনজঙ্গল আছে’—যোগ করেন বাপা সিলেটের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল করিম কিম।

অজগর উদ্ধার ও অবমুক্তে অংশ নেওয়া বন বিভাগের বনরক্ষী মাসুদ করিম বলেন, ‘বনে খাবার সংকটের কারণেই সাপগুলো লোকালয়ে এসে বাসাবাড়িতে ঢুকে পড়ছে। যেসব বাড়িতে হাঁস-মুরগি আছে গন্ধ শুঁকে অজগর সেসব বাড়িতে ঢুকে পড়ে। হাঁস-মুরগি খাওয়া ছাড়া এরা মানুষের তেমন ক্ষতি করে না। কেউ ভয় পেয়ে যাতে সাপগুলো মেরে না ফেলেন সেজন্য সবাইকে সচেতন করা হচ্ছে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত