বিএনপি নেতাদের গণ পদত্যাগ

| আপডেট :  ২৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০৮:৫৯  | প্রকাশিত :  ২৭ ডিসেম্বর ২০২১, ০৮:৫৯

বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে সাবেক সংসদ সদস্য নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে অব্যাহতির প্রতিবাদে খুলনা সদর ও সোনাডাঙ্গা থানার ১৬টি ওয়ার্ড ও অঙ্গসংগঠনের ৫৬১ নেতা পদত্যাগ করেছেন। এ নিয়ে দুই দিনে দলটির ৫৭৭ নেতা পদ ছাড়লেন। তাঁকে সরিয়ে দেওয়ার পর দিনই গতকাল রবিবার নগরীর পাঁচ থানা কমিটি বিলুপ্ত করেছে সদ্য ঘোষিত মহানগর আংশিক আহ্বায়ক কমিটি।

গতকাল রাত পৌনে ১০টার দিকে গণমাধ্যমে বিএনপি নেতা আরিফুজ্জামান অপু ও আসাদুজ্জামান মুরাদ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

জানা গেছে, গতকাল বিকেলে দলীয় কার্যালয়ে আংশিক ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটি সভা করে। ওই সভা থেকে মহানগরের পাঁচ থানা কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়। থানা কমিটিগুলো মঞ্জু অনুসারীদের দখলে ছিল। রাতে নগর কমিটির নেতারা থানা কমিটি বিলুপ্তির বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন। নগর আহ্বায়ক এস এম শফিকুল আলম মনা সভায় সভাপতিত্ব করেন।

মঞ্জুকে অব্যাহতির প্রতিবাদে দুই দিনে দল ও অঙ্গসংগঠনের ৫৭৭ নেতা পদত্যাগ করেন। এঁদের মধ্যে রয়েছেন মহানগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির উপদেষ্টা ইস্তিয়াক উদ্দিন লাভলু, জাসাসের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান দিপু, মহানগর বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মহিবুজ্জামান কচি, শিল্পবিষয়ক সম্পাদক সাবেক কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন বনি, সদর থানা বিএনপির যোগাযোগ সম্পাদক সেলিম বড় মিয়া, সোনাডাঙ্গা থানা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ইকবাল হোসেন খোকন, এস এম শাহজাহান, সাদিকুর রহমান সবুজ, শেখ শওকত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মুরাদ, ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি শেখ জামিরুল ইসলাম জামিল, সাধারণ সম্পাদক শেখ মোস্তফা কামালসহ ২৫০ নেতা।

এ ছাড়া খুলনা সদর থানা বিএনপির সভাপতি আব্দুল জলিল খান কালাম, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক আরিফুজ্জামান অপু, সাংগঠনিক সম্পাদক ইউসুফ হারুন মজনু, ২১ নম্বর ওয়ার্ডের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ কামাল উদ্দিন, ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি কাউন্সিলর শমসের আলী মিন্টু, সহসভাপতি ওমর ফারুক ও ডা. আব্দুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মতিন, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবিরসহ ৩১১ নেতা পতদ্যাগ করেছেন। আগের দিন শনিবার দলটির সদ্য বিলুপ্ত নগর কমিটির যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক কাউন্সিলর মো. মাহবুব কায়সার, কোষাধ্যক্ষ এস এম আরিফুর রহমান মিঠুসহ ১৬ নেতা পদত্যাগ করেন।

দলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক ও সাবেক ওয়ার্ড কাউন্সিলর মো. মাহবুব কায়সার বলেন, ‘১৯৭৮ সাল থেকে ৪৩ বছরের রাজনৈতিক জীবনে আমি সব আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছি। মিথ্যা মামলারও শিকার হয়েছি। কিন্তু বর্তমানে খুলনা মহানগর কমিটি পুনর্গঠনের মাধ্যমে খুলনা বিএনপির সর্বোচ্চ নেতা নজরুল ইসলাম মঞ্জুসহ মহানগরের সব সক্রিয় ও যোগ্য নেতাকে যেভাবে বারবার অবমূল্যায়ন ও অপমানিত করা হচ্ছে, তা অকল্পনীয় ও অগ্রহণযোগ্য।’

গত শনিবার দলের শৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগে মহানগর বিএনপির সদ্য সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে অব্যাহতি দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এর আগে ৯ ডিসেম্বর কেন্দ্রঘোষিত তিন সদস্যের মহানগর বিএনপির আংশিক কমিটিতে তিনিসহ তাঁর অনুসারীরা বাদ পড়েন।

কমিটি ঘোষণার প্রতিক্রিয়ায় তিনি খুলনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন। এতে নগরীর পাঁচটি থানা ও ৩১টি ওয়ার্ডের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে মঞ্জু নতুন আহ্বায়ক কমিটিকে ‘পকেট কমিটি’ আখ্যা দেন। তিনি বিষয়টি পুনর্বিবেচনার জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতি দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে মঞ্জু অভিযোগ করেন, ‘ঘোষিত কমিটি দেখে আমরা স্তম্ভিত, বিস্মিত। এ প্রক্রিয়ায় কমিটি আশা করিনি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিতর্কিতদের দিয়ে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। এ কমিটির মাধ্যমে বিএনপির সমর্থকদের অসম্মান ও অমর্যাদা করা হয়েছে। ১৬ বছরে জেলা পর্যায়ে যাঁরা বিএনপির শক্তিশালী ভিত গড়তে পারেননি, তাঁরা নগরের নেতৃত্বে এসেছেন।’

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত