বোরকা পরে শিশু অপহরণ করা হচ্ছে: ডিবি প্রধান

| আপডেট :  ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৫:৩৩  | প্রকাশিত :  ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৫:৩৩


বোরকা পরে শিশু অপহরণ করা হচ্ছে: ডিবি প্রধান

বিবার্তা প্রতিবেদক


রাজধানীতে বেড়েছে শিশু অপহরণ। বোরকা পরে পরিচয় গোপন রেখে শিশু চুরি করা হচ্ছে। তাই অভিভাবকদের আরও সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

২৮ মার্চ, বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ আহ্বান জানান। ভালোভাবে খোঁজ নিয়ে সন্তান দত্তক নেয়ারও অনুরোধ করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, রাজধানীতে অপহরণের ৭ দিন পর বুধবার (২৭ মার্চ) আড়াই বছরের এক শিশুকে কুমিল্লা থেকে উদ্ধার করেছে ডিবি পুলিশ। একই সঙ্গে শিশুচোর চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।

গ্রেফতারকৃতরা হলেন সুলতানা আক্তার ওরফে নেহা, মো. সাইফুল ইসলাম ও মো. শাহজাহান। গ্রেপ্তারের সময় তাদের হেফাজত থেকে অপহৃত শিশু তাওসীনকে উদ্ধারসহ শিশু বিক্রির ২৩ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

ডিএমপির ডিবি কম্পাউন্ডে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সাথে ব্রিফিংকালে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ বলেন, গত ২১ মার্চ ২০২৪ সকালে অন্যান্য দিনের মতো স্ত্রী ও সন্তানদের বাসায় রেখে রিকশা চালাতে বের হন হাজারীবাগের ঝাউচর এলাকার নুরুল ইসলাম। বিকাল সোয়া চারটার দিকে তার ৬ বছরের মেয়ে তাবাসসুমের সাথে ছেলে তাওসীন বাসার সামনে খেলতে যায়।

তারা যখন খেলছিল তখন তাদের পাশে বসেছিল তাদের নানী লুৎফুন নাহার। কিছুক্ষণ পর একজন বোরখা পড়া অজ্ঞাতপরিচয় মহিলা লুৎফুন নাহারকে জিজ্ঞাসা করে এরা অপনার কি হয়, পরিচয় জেনে মহিলা সেখান থেকে চলে যায়। নাতী-নাতনীদের খেলা অবস্থায় রেখে লুৎফুন নাহার পাশেই নিজের বাসায় যান। এই সুযোগে বোরকা পড়া মহিলাটি আবার আসেন এবং তাদের দুইজনের হাতে দুইটা চিপস দেন। এরপর মহিলাটি সুযোগ বুঝে শিশু তাওসীনকে কোলে করে নিয়ে সটকে পড়েন।

শিশুটির বোন তাবাসসুম তার মাকে এসে জানায়, একজন মহিলা তার ছোট ভাইকে নিয়ে যাচ্ছে। এ কথা শুনে তাদের মা দ্রুত বাসার সামনে যায় এবং অজ্ঞাতাপরিচয় মহিলাসহ ছেলেকে খোঁজাখুঁজি করেও কোন সন্ধান পাননি। ছেলেটির সন্ধানের জন্য এলাকায় মাইকিংও করা হয়। পরের দিন শিশুটির বাবা নুরুল ইসলাম হাজারীবাগ থানায় একটি মামলা করেন।

হারুন অর রশীদ আরও জানান, থানা পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা রমনা বিভাগের ধানমন্ডি জোনাল টিম মামলাটি তদন্ত শুরু করে। মামলা তদন্তে তথ্য মেলে অভিযুক্তদের। এরপর বুধবার (২৭ মার্চ) সন্ধ্যায় কুমিল্লার লালমাই ও বরুড়া থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে অপহৃত শিশু তাওসীনকে উদ্ধার করা হয়।

সুলতানা আক্তার ও তার স্বামী মো. সাইফুল ইসলাম শিশু তাওসীনকে অপরহণ করে ৫০ হাজার টাকায় শাহজাহানের কাছে বিক্রি করে দেয়। গ্রেপ্তারের সময় অপহরণকারী চক্রটির কাছ থেকে শিশু বিক্রির নগদ ২৩ হাজার ৫০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

তিনি জানান, রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় এ ধরনের কালো বোরখা পড়া মহিলারা শিশু চুরির উদ্দেশ্যে ঘুরে বেড়ায়। এরা অভিভাবক ছাড়া কোনো ছোট শিশুকে পাওয়া মাত্রই তাদেরকে চিপস, আইসক্রীম ও চকলেট দিয়ে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, শিশু পাচারকারীর সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত আছে কি না এ ব্যাপারে আরো খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

বিবার্তা/লিমন

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত