ব্যাংকে হামলা ও লুটের ঘটনায় যা যা করার সবই করা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

| আপডেট :  ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৮  | প্রকাশিত :  ০৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৮


ব্যাংকে হামলা ও লুটের ঘটনায় যা যা করার সবই করা হবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী

বিবার্তা প্রতিবেদক


বান্দরবানের রুমা এবং থানচিতে ব্যাংকে হামলা ও লুটের ঘটনায় যা যা করার সবই করা হবে বলে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ঘটনায় সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে যৌথ অভিযানে নেমেছে পুলিশ ও বিজিবি। তাদের সঙ্গে যোগ দেবে সেনাবাহিনীও।

৩ এপ্রিল, বুধবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ তথ্য জানান মন্ত্রী।

তিনি বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) হঠাৎ করে শুনলাম পাহাড়ে ব্যাংক ডাকাতির একটা প্রচেষ্টা হয়েছে। ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় কুকি চিনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। আমাদের কাছে যা তথ্য আসছে কুকি চীন যে গ্রুপটি রয়েছে, যারা আগেও বান্দরবানে একটি জায়গায় অবস্থান করে জঙ্গি বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে একটা ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছিল। আমাদের র‌্যাব ও আর্মি সেই ঘাঁটি সরিয়ে দিয়েছে। ইদানীং কুকি চীন আবার বিভিন্নভাবে তাদের অবস্থান জানান দিচ্ছে।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, রুমার যে ঘটনাটি আমরা এ পর্যন্ত শুনেছি, আমাদের আইজিপি ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা সেখানে অবস্থান করছেন। রুমাতে সোনালী ব্যাংকে ঢোকার আগে বৈদ্যুতিক যে সাব-স্টেশন ছিল সেটাকে বন্ধ করে তারা ব্যাংকের দিকে অগ্রসর হন। সেখানে পুলিশ মোতায়েন ছিল। পুলিশ ও ব্যাংকের ম্যানেজার সবাই তারাবি নামাজে ছিলেন। সেই সময় তারা ঢুকে দুই পুলিশ সদস্যকে আহত করে দুটি এসএমজিও আটটি চাইনিজ রাইফেল লুট করে। উপজেলা কমপ্লেক্সে আনসারদের শটগানগুলোও নিয়ে নেয় তারা। সোনালী ব্যাংকের একটা ভল্ট ভাঙে, আরেকটা মনে হয় ভাঙতে পারেনি। অফিসিয়াল নিউজ এখনও পাইনি। আমরা যতটুকু শুনেছি, তাই বলছি। সোনালী ব্যাংকের ম্যানেজারকে জিম্মি করে নিয়ে গেছে। কত টাকা নিয়েছে, সেটা এখনও অফিসিয়ালি আসেনি।

আসাদুজ্জামান খান আরো বলেন, আজকে দিনের বেলায় আমরা দেখলাম, থানচিতে কৃষি ও সোনালী ব্যাংকে আক্রমণ করেছে। এ অপারেশনটা এখনও চলছে। আমাদের পুলিশ সেখানে গোলাগুলি করছে। সেখান থেকে কত টাকা নিয়েছেন বা ক্ষয়ক্ষতি কী পরিমাণ তা এখন জানাতে পারিনি।

তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমাদের যা যা করার, আমরা করবো। এখানে যারা জড়িত বা করেছে আমরা সবগুলোর ব্যবস্থা নেবো। সেখানে সরকারের যথেষ্ট পরিমাণ ফোর্স রয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত সেখানে পুলিশ ও বিজিবি রয়েছে। প্রয়োজনে সেখানে সেনাবাহিনীও যাবে।

এ বিষয়টি আমাদের কাছে একেবারে নতুন। থানচি একটি শান্তিপূর্ণ এলাকা। এটা পর্যটকদের জন্য ভ্রমণের মূল জায়গা। রুমাও শান্তিপূর্ণ জায়গা ছিল, সেখানে বেশকিছু দিন ধরে শান্তি বিরাজ করছিল। সেই জায়গা তারা কেন বেছে নিল সেই সবকিছু দেখার বিষয় রয়েছে। এগুলো দেখে আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবো, ইনশাআল্লাহ।

এর আগে মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) বান্দরবানের রুমায় ভল্ট ভেঙে ১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা লুট করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় ব্যাংকের ম্যানেজার অপহরণ এবং নিরাপত্তায় থাকা ১০ পুলিশ ও ৪ আনসার সদস্যের অস্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।

এক দিন পরই আজ (বুধবার) থানচিতে সোনালী এবং কৃষি ব্যাংকের শাখায় ডাকাতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে থানচি বাজারে দুটি চাঁদের গাড়িতে পাহাড়ের অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা এসে দুই ভাগে ভাগ হয়ে থানচি উচ্চ বিদ্যালয় সংলগ্ন সোনালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংকের ভেতরে ঢোকে। এ সময় সন্ত্রাসীরা দুই ব্যাংকের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একটি কক্ষে বন্দি করে। এরপর সোনালী ব্যাংক থেকে নগদ ১৫ লাখ টাকা ও কৃষি ব্যাংকে গ্রাহকের আড়াই লাখ টাকা ও বেশকিছু মোবাইল ফোন নিয়ে যায়।

বিষয়টি নিরাপত্তারক্ষী ও পুলিশের নজরে এলে তারা প্রতিহতে এগিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতরা ফাঁকা গুলি ছুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে পালিয়ে যায়। এ ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। এ ছাড়া ঠিক কী পরিমাণ টাকা তারা লুট করেছে, তাৎক্ষণিকভাবে তা জানা যায়নি।

বান্দারবান জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রায়হান কাজেমী বলেন, দুটি গাড়িতে অস্ত্রধারীরা এসে হামলা চালিয়েছে। তবে এটা ডাকাতির উদ্দেশ্যে হামলা কি না, সেটা সঠিকভাবে বলা যাচ্ছে না। পুলিশ ও নিরাপত্তারক্ষীদের লক্ষ্য করে গুলি করেছে অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা। এ ব্যাপারে তদন্ত চলছে।

বিবার্তা/লিমন

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত