ব্রহ্মপুত্র থেকে বালু উত্তোলন, গৃহহীন ২৫০ পরিবার
কুড়িগ্রামের চিলমারীতে ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে অপরিকল্পিতভাবে তীরবর্তী এলাকা থেকে অবাধে বালু উত্তোলনের ফলে নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়ে তীরবর্তী এলাকা গুলোতে তীব্র ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে দুই সপ্তাহেই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে প্রায় ২৫০ পরিবার। এছাড়াও একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভাঙন হুমকিতে থাকায় সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। এদিকে ভাঙন হুমকিতে রয়েছে আরও দুইশতাধিক পরিবার। এসব গৃহহীন পরিবারের সদস্যরা বলছেন তীর ঘেঁসে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন করায় ভাঙন কবল থেকে রক্ষা পাচ্ছে না ইউনিয়নটি। শুধু ওই ইউনিয়নই নয় বালু উত্তোলনের ফলে ডান তীররক্ষা বাঁধ ধসে যাওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার চিলমারী ইউনিয়নে ব্রহ্মপুত্রের তীব্র ভাঙনে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় ২৫০ পরিবার গৃহহীন হয়েছেন। এছাড়াও ভাঙনের শঙ্কায় রয়েছে আরও ২০০ পরিবার বসত বাড়ি। এদিকে চরশাখাহাতী ১ নং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভাঙন হুমকিতে থাকায় সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। এছাড়াও ওই ইউনিয়নের একটি ক্লিনিক, সরকারি আবাসন কেন্দ্রও হুমকিতে রয়েছে। চিলমারী ইউনিয়নের চরশাখাহাতি ও কড়াইবরিশাল এলাকার বাসিন্দা কাশেম, সাইদুল ইসলাম, জাহের আলী বলেন, ব্রহ্মপুত্রের এই ভাঙনের কারণ হচ্ছে বালু উত্তোলন। তীর থেকে ৫০০ মিটার দুরেই বাল্কহেড দিয়ে ড্রেজার বসিয়ে নদী থেকে বালু উত্তোলন করছে ব্যবসায়ীরা। এমনিতেও স্বাভাবিক ভাবেও নদী ভাঙে কিন্তু বালু উত্তোলনের কারণে অস্বাভাবিকভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছি। বালু উত্তোলন বন্ধের দাবী জানান এই ভুক্তভোগীদের। তারা আরও বলেন, ২০১৯ সালের দিকে ওই স্থান থেকে বালু উত্তোলন করায় সেবছর একশো-দেড়শো পরিবার নিঃস্ব হয়েছিল। পরে মাঝখানে প্রায় কিছুদিন বালু উত্তোলন না করায় নদী ভাঙেনি। গেলো বছর ও এই বছরে বালু উত্তোলন করায় আবারও চরশাখাহাতী ও কড়াইবরিশালে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সরেজমিন নয়ারহাট ইউনিয়নের বজরাদিয়ার খাতায় গিয়ে জানা গেছে, ওই এলাকার ২৭ টি পরিবার নদী ভাঙনের শিকার হয়েছেন। হুমকিতে রয়েছে পুরো চর। এসময় ত্রাণ সহায়তা না পাওয়ার অভিযোগ করেছেন বন্যার্তরা। অপরদিকে রানীগঞ্জ ইউনিয়নের কাঁচকোল এলাকায় ডানতীর রক্ষা বাঁধ হুমকিতে রয়েছে। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্টরা জিও ব্যাগে বালু ভরে ডাম্পিং করেছেন ঝুঁকি কমাতে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. মিনজাজুল ইসলাম জানান, তীর ঘেঁসে কিংবা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসন কাজ করে যাবেন। কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিবুল হাসানের সঙে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি। বিবার্তা/রাফি/এসবি
ব্রহ্মপুত্র থেকে বালু উত্তোলন, গৃহহীন ২৫০ পরিবার
সারাদেশ
চিলমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত