মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের আইনে বড় পরিবর্তন

| আপডেট :  ১২ এপ্রিল ২০২২, ১১:৪৬  | প্রকাশিত :  ১২ এপ্রিল ২০২২, ১১:৪৬

মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের আইনে পরিবর্তন আসছে। বর্তমানে ১৯৬১ সালের অর্ডিন্যান্সের অধীনে দেশের সব শিক্ষা বোর্ড পরিচালিত হচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে তা যুগোপযোগী করে ইংরেজি থেকে বাংলা করা হয়েছে। তার সঙ্গে দেশে যে কোনো জরুরি অবস্থা বা মহামারিতে শিক্ষা বোর্ডকে সংক্ষিপ্ত আকারে পাবলিক পরীক্ষা আয়োজন ও ফলাফল প্রকাশের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে।

রোববার (১০ এপ্রিল) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে এক সভায় সংশোধিত আইন যুপোপযোগী করে এর খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে।

জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা সমন্বয় বোর্ডের আহ্বায়ক অধ্যাপক তপন কুমার রোববার সন্ধ্যায় বলেন, দেশের সব মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের আইন পরিবর্তন করা হচ্ছে। এটি ১৯৬১ সালের অর্ডিন্যান্সের বদলে একটি পূর্ণাঙ্গ আইন তৈরি করা হয়েছে। সেটি ইংরেজির পরিবর্তে বাংলা অনুবাদ করা হয়েছে। আইনে মহামারি অবস্থায় শিক্ষা বোর্ডগুলোকে সংক্ষিপ্ত আকারে পরীক্ষা নিয়ে ফলাফল প্রকাশ করতে স্থায়ীভাবে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এটি আগে অস্থায়ীভাবে করা হলেও সেটি নতুন আইনে স্থায়ী করা হয়েছে।

তিনি বলেন, অনেক আগে এ আইনের সংশোধন করে তা মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো হলেও সেখান থেকে কিছু সংশোধনের জন্য বলা হয়। সে কারণে আজ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে একটি সভা করে নতুনভাবে তা সংশোধন করা হয়। বর্তমানে এটি আবারো মন্ত্রিপরিষদে পাঠানো হবে। সেখাান থেকে ভাষাগত ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য তা জাতীয় সংসদে পাঠানো হবে।

১৯৬১ সালের ইস্ট পাকিস্তান ইন্টারমিডিয়েট অ্যান্ড সেকেন্ডারি এডুকেশন অর্ডিন্যান্স অনুযায়ী দেশের আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড পরিচালিত হচ্ছে। সর্বশেষ ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ড গঠন করা হয়। নিজ নিজ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ব্রিটিশ ও পাকিস্তান আমলে ইংরেজি ভাষায় প্রণীত আইনের প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও সংশোধন করে বাংলা ভাষায় প্রণয়নের জন্য মন্ত্রিসভা বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেয়। খসড়ায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা পুনঃসংগঠন, পরিচালন, নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধ্যাদেশ-১৯৬১ রহিত করে একটি নতুন আইন প্রণয়ন করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়। আইনে উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি এবং মাধ্যমিক শিক্ষা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত উল্লেখ করা হয়েছে। মাধ্যমিকে সাধারণ, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, শিল্পগত, কৃষি, ব্যবসায়, স্বাস্থ্য, গার্হস্থ্য এবং প্রতিবন্ধীদের জন্য শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। উচ্চ মাধ্যমিকে মানবিক, বিজ্ঞান, ব্যবসায়, প্রযুক্তি, ইসলাম শিক্ষা, কলা, গার্হস্থ্য, কৃষি, শিল্প ও সামরিক বিজ্ঞান শিক্ষা অন্তর্ভুক্ত। এছাড়া সরকারের অনুমোদনক্রমে বোর্ড পেশাগত, বৃত্তিমূলক ও বিশেষ শিক্ষা পরিচালিত করতে পারবে।

আইনের বিধান অনুযায়ী মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার সংগঠন, ব্যবস্থাপনা, তত্ত্বাবধান, পরিচালন, নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সংখ্যক বোর্ড স্থাপিত হবে।

শিক্ষা বোর্ডের কর্মকর্তা হবেন চেয়ারম্যান, সচিব, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, কলেজ পরিদর্শক, বিদ্যালয় পরিদর্শক, উপ-পরিচালক (হিসাব ও নিরীক্ষা) এবং সরকর ও বোর্ড কর্তৃক নিয়োগকৃত অন্যান্য কর্মকর্তা। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড তহবিল থাকবে। এই আইনে আদায়কৃত ফিস, বোর্ডের প্রাপ্ত দান, উপহার অথবা নিজস্ব সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা থেকে আয় এবং সরকার থেকে যেকোনো উৎস থেকে প্রাপ্ত আয় সরকারি ব্যাংকে জমা প্রদান করার কথা বলা হয়েছে। এই তহবিল ব্যবহারের নির্দেশনা রয়েছে আইনে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত