মানবাধিকার লঙ্ঘনে ইসরায়েলি সেনার ৫টি ইউনিট জড়িত
মানবাধিকার লঙ্ঘনে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর ৫টি ইউনিট জড়িত বলে মন্তব্য করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের বাইরে ইসরায়েলি সেনাদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই ঘটনা ঘটেছে এবং এর সবগুলোই ঘটেছে গাজায় চলমান যুদ্ধের আগে। তবে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পরও সামরিক সমর্থন অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ৩০ এপ্রিল, মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথক ঘটনায় ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য দায়ী বলে প্রমাণ পেয়েছে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতর। তবে তারা বলেছে, তারা ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে মার্কিন সামরিক সমর্থন দেওয়া অব্যাহত রাখবে। মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই সমস্ত ঘটনা বর্তমান যুদ্ধের আগে গাজার বাইরে সংঘটিত হয়েছিল। ইসরায়েল চারটি ইউনিটে সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে এবং পঞ্চমটির বিষয়ে ‘অতিরিক্ত তথ্য’ দিয়েছে বলে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্ট বলছে। এর অর্থ হচ্ছে- সমস্ত ইউনিটই মার্কিন সামরিক সহায়তা পাওয়ার জন্য যোগ্য থাকবে। স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেছেন, পাঁচটি নিরাপত্তা বাহিনীর ইউনিট মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন করেছে। এই ইউনিটগুলোর মধ্যে চারটি কার্যকরভাবে এই লঙ্ঘনের প্রতিকার করেছে। বাকি একটি ইউনিটের জন্য, আমরা ইসরায়েল সরকারের সাথে পরামর্শ চালিয়ে যাচ্ছি; তারা অতিরিক্ত তথ্য জমা দিয়েছে কারণ এটি সেই ইউনিটের সাথে সম্পর্কিত। যুক্তরাষ্ট্রের আইন অনুযায়ী, মার্কিন সহায়তা পাওয়া কোনো ভিনদেশি সেনা ইউনিট যদি ব্যাপকভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘনে জড়িত থাকে, তবে সেই ইউনিট ওয়াশিংটনের কাছ থেকে সামরিক সহায়তা পাওয়ার সুযোগ হারাবে। ইসরায়েলের প্রধান সামরিক সহায়তা প্রদানকারী দেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি প্রতি বছর ইসরায়েলকে ৩.৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের অস্ত্র এবং প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সরবরাহ করে থাকে। বিবিসি বলছে, ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর যে কোনও ইউনিটের বিরুদ্ধে মার্কিন সরকারের এই ধরনের ঘোষণা এটিই প্রথম। স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনীর পাঁচটি ইউনিট মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন করেছে। অবশ্য মানবাধিকার লঙ্ঘনের এই ঘটনায় কোনো জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হয়েছে কি না তা বলতে না পারলেও ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এসব ইউনিটে সামরিক সহায়তা অব্যাহত রাখা তথা রাজনৈতিক চাপে (কঠোর অবস্থান নেয়া থেকে) যুক্তরাষ্ট্র পিছিয়ে গেছে বলে ওঠা দাবিকে অস্বীকার করেছে মার্কিন পররাষ্ট্র বিভাগ। এমনকি যখন এমন একটি সন্ধান পাওয়া যায়, রাষ্ট্র বিভাগ সন্তুষ্ট হলে সামরিক সহায়তা কমানোর একটি ব্যতিক্রম রয়েছে যদি মামলাগুলি মোকাবেলা করা হয়েছে এবং সরকার জড়িতদের দ্বারা ন্যায়বিচার অনুসরণ করে। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের এই বক্তব্য এমন এক সময়ে সামনে এলো যখন ইসরায়েল গাজায় আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করতে পারে বলে মধ্যেই পররষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনকে জানিয়েছেন কিছু ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একটি অভ্যন্তরীণ মেমো পর্যালোচনা করে বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের সরবরাহকৃত অস্ত্র আন্তর্জাতিক মানবিক আইন অনুসারে ব্যবহার করার বিষয়ে যে আশ্বাস ইসরায়েল দিয়েছে, সেটিকে ‘বিশ্বাসযোগ্য বা নির্ভরযোগ্য’ বলে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে কিছু ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেনকে জানিয়েছেন। মূলত চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একটি জাতীয় নিরাপত্তা স্মারক (এনএসএম) জারি করেছিলেন। স্মারকটি অনুসারে, মার্কিন অস্ত্র ব্যবহার করে ইসরায়েলের আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন না করার বিষয়ে তেল আবিবের আশ্বাস সঠিক বলে প্রতীয়মান হয়েছে কিনা তা আগামী ৮ মের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লিংকেনকে কংগ্রেসে রিপোর্ট করতে হবে। বিবার্তা/লিমন
মানবাধিকার লঙ্ঘনে ইসরায়েলি সেনার ৫টি ইউনিট জড়িত
আন্তর্জাতিক
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত
