রাসেলস ভাইপার আতঙ্কে রাজশাহী পদ্মার তীরবর্তী চারঘাটবাসী

| আপডেট :  ২৪ জুন ২০২৪, ০৮:১২  | প্রকাশিত :  ২৪ জুন ২০২৪, ০৮:১২


রাসেলস ভাইপার আতঙ্কে রাজশাহী পদ্মার তীরবর্তী চারঘাটবাসী

সারাদেশ

রাজশাহী প্রতিনিধি


সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া রাসেলস ভাইপার সাপ নিয়ে নেতিবাচক তথ্যগুলো দেখে আতঙ্কিত চারঘাট উপজেলাবাসী। বিশেষ করে স্কুল ও কলেজগামী শিশু-কিশোর, ছাত্র-ছাত্রী ও কৃষকরা।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই সাপের বিভিন্নরকম নেতিবাচক তথ্য অতি দ্রুত ভাইরাল হওয়ায় রীতিমত প্রধান আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে বন্যপ্রাণী দফতরের তথ্যমতে রাসেলস ভাইপার নিয়ে আতঙ্কের কিছু নেই। এই সাপ শান্ত প্রকৃতির এবং তেড়ে গিয়ে কামড় দেয় না।

চারঘাট পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ড থানাপাড়া গ্রামের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী স্নেহা বলেন, আমি গত কয়েকদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় রাসেল ভাইপার সাপ নিয়ে এত পরিমাণ ভিডিও দেখেছি যে এখন আমি একা ঘুমাতে পারি না। ঘুমালে মনে হয় সাপ তেড়ে আমাকে কামড় দিচ্ছে। একই রকম কথা বলেছেন সরদহ সরকারি ডিগ্রি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী দিগন্ত, নিশীথা, মালাসহ আরও অনেকে।

শুধুমাত্র নেতিবাচক তথ্য না দিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবকারীদের প্যারালাল কৌশল অবলম্বন করে দ্বায়িত্বশীল তথ্য দেয়ার জন্য অনুরোধ করেন অভিভাবকরা।

পিরোজপুর গ্রামের কৃষক হেজবুথ বলেন, কৃষি ক্ষেতে ধান কাটতে কৃষকরা ভয় পাচ্ছেন। তবে কোন ব্যক্তিকে সাপে কাটলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দ্রুত সেবা পাওয়া যায় এবং প্রতিষেধক এন্টিভেনম যেন পাওয়া যায় সে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করার অনুরোধ জানান।

এটা সত্য যে, আমরা সকলেই আতঙ্কিত তবে আমাদের আরও বেশি সাবধানতা অবলম্বন করা দরকার এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করা দরকার যাতে করে এই সাপ কাছে আসলে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারি বলে জানিয়েছেন সরদহ সরকারি মহাবিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক মাজদার রহমান।

উল্লেখ্য, চারঘাট উপজেলার প্রায় ২১ কি.মি. দীর্ঘ এলাকা পদ্মা নদীর তীরবর্তী হওয়ায় অত্র তীরবর্তী ও চরাঞ্চলগুলোতে কৃষকরা কৃষি চাষাবাদ করেন। এ সকল এলকাবাসীদের কথা বলে নদীতীরবর্তী এলাকাগুলোতে এই সাপ প্রচুর পরিমাণে দেখা যাচ্ছে।

গত কয়েক দিনে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী, সারদা ও কুঠিপাড়া সংলগ্ন নদী তীরবর্তী এলাকাগুলোতে প্রায় ১৬টি এই সাপের বাচ্চা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানা যায়। গত কয়েক মাসে উপজেলায় ২ জন এই সাপের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছেন। যার মধ্যে মোক্তারপুর গ্রামের রাজশাহী ইউনিভার্সিটির একজন ছাত্রের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় এলাকাবাসী।

জেলা বণ্যপ্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, রাসেলস ভাইপারের উপদ্রব বৃদ্ধি পেয়েছে এর বৈজ্ঞানিক কোন তথ্য নয়। তবে সাপের সংখ্য বৃদ্ধি পেতে পারে। কৃষি জমিতে ফলন বেশি হলে ইঁদুরের সংখ্যা বা বংশ বিস্তার স্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাবে। সাপের প্রধান খাদ্য হচ্ছে ইঁদুর। যে কারণে সাপ পর্যাপ্ত খাবার পাচ্ছে এবং তাদের বংশবিস্তার বেশি হচ্ছে। সম্প্রতি রাসেলস ভাইপার সাপের উপদ্রব নিয়ে গুজব ছড়াচ্ছে এক শ্রেণির মানুষ। তবে অপ্রয়োজনীয় আতঙ্কিত না হয়ে বাড়ির চারপাশে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।

বিবার্তা/রানা/লিমন 

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত