লামায় আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড ৯ শতাধিক ঘরবাড়ি

| আপডেট :  ০২ মে ২০২৪, ০১:০৩  | প্রকাশিত :  ০২ মে ২০২৪, ০১:০৩


লামায় আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে লন্ডভন্ড ৯ শতাধিক ঘরবাড়ি

সারাদেশ

লামা প্রতিনিধি


গভীর রাতের এক আকস্মিক ঘূর্ণিঝড়ে বান্দরবান জেলার লামা পৌরসভা এলাকা ও বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ৪০০ কাঁচা ও আধাপাকা ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়েছে। একই সময় আংশিক বিধ্বস্ত হয়েছে আরও প্রায় ৫০০ শতাধিক ঘরবাড়ি। ক্ষতি হয় আম, কাঁঠাল ও লিচু বাগানেরও।

বৃহস্পতিবার (২মে) ভোর রাতে এ ঘটনা ঘটে। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত এসব পরিবার বর্তমানে খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে বলে জানা গেছে।

খুঁটির উপর সড়কের গাছ পড়ে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌং, পৌরসভা মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক প্রদীপ কান্তি দাশসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ কামরুল হোসেন চৌং ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের খোঁজ নিচ্ছি। এছাড়া পৌরসভার মেয়র ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদেরকে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা করার জন্য বলা হয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদান করা হবে।

ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে উপজেলার রুপসীপাড়া ইউনিয়ন, লামা সদর ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকার গ্রামগুলোর ওপর দিয়ে আকস্মিক ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায়। অন্য কয়েকটি ইউনিয়নেও এ ঝড়ের প্রভাব পড়ে। এ সময় ঘূর্ণিঝড়ে অন্তত ৯শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত হয়। তবে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় রুপসীপাড়া ইউনিয়ন ও পৌরসভা এলাকায়।

লামা-চকরিয়া সড়কের দু পাশের বড় বড় গাছ ভেঙ্গে উপড়ে সড়ক ও বিদ্যুতের খুঁটির উপর পড়ে। এতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়, ফলে এ সংযোগ পেতে কয়েকদিন সময় লাগতে পারে পারে বলে জানান বিদ্যুৎ সরবরাহ কর্তৃপক্ষ।

পৌরসভা এলাকার লাইনঝিরি গ্রামের ক্ষতিগ্রস্ত মো. চান মিয়া জানান, বৃহস্পতিবার রাতে হঠাৎ ঘূর্ণিঝড় শুরু হয়। পরে দুই ঘণ্টা ব্যাপী চলে এ ঝড়। এতে আমার, আমার ভাই ও বাবার ঘর সম্পূর্ণ ভেঙে চুরমার হয়ে গেছে। বর্তমানে পরিবার পরিজন নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছি। তিনি বলেন, শুধু আমাদের ঘরবাড়ি নয়, আমাদের গ্রামের আরও অন্তত অর্ধশত ঘরবাড়ি ভেঙেছে ঘূর্ণিঝড়ে।

এদিকে রূপসীপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছাচিংপ্রু মার্মা জানান, ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে প্রায় ৬০টির মত বসতঘর সম্পূর্ণ ও ২০০টির বেশি বসতঘর, তামাক চুল্লি, গোয়ালঘর ও ফসল বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া লামা সদর, ফাঁসিয়াখালী, ফাইতং সহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নেও ক্ষতিগ্রস্ত হয় আরও প্রায় শতাধিক ঘরবাড়ি।

এ বিষয়ে পৌরসভা মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে আমার পৌরসভা এলাকায়। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের খোঁজখবর নেওয়ার পাশাপাশি তালিকা করছি। প্রাথকিভাবে ২০০ পরিবারের বসতঘর, তামাক চুল্লি, গোয়ালঘর, রান্নাঘর সম্পূর্ণ ও ৩ শতাধিক ঘরবাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

বিবার্তা/নুরুল/মাসুম

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত