শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র

| আপডেট :  ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৩  | প্রকাশিত :  ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:৫৩


শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে বাংলাদেশ: পররাষ্ট্র

জাতীয়

বিবার্তা প্রতিবেদক


টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশকে বর্ধনশীল একটি অর্থনীতিতে পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ আর বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে।

ব্রা‌সেল‌সের স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ এপ্রিল) স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা ব‌লেন তিনি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব‌লেন, গত দেড় দশকে বাংলাদেশের টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশকে এশিয়া এবং এর বাইরেও দ্রুততম বর্ধনশীল একটি অর্থনীতিতে পরিণত করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল ও দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হবে।

হাছান মাহমুদ ব‌লেন, ইইউর সঙ্গে বাংলাদেশ জ্ঞান, দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্ভাবন এবং কর্মসংস্থানের উপর গুরুত্বারোপ করে ভবিষ্যতে বিস্তৃত অংশীদারিত্বের লক্ষ্যে কাজ করছে।

আগামী দিনে বেলজিয়াম এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ, সংযোগ (কানেটিভিটি), সুনীল অর্থনীতি, বৃত্তাকার অর্থনীতিসহ নিরাপত্তার প্রচলিত এবং অপ্রচলিত ক্ষেত্রসমূহে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে বলে আশা প্রকাশ করেন মন্ত্রী।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ দৃঢ়তার সঙ্গে ব‌লে‌ছেন, ইইউর (ইউ‌রোপীয় ইউনিয়ন) সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করছে বাংলা‌দেশ। যাতে বিশ্বে কোথাও মানুষকে যুদ্ধের ভয়াবহতা সহ্য করতে না হয়। আমাদের লক্ষ্য ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য শান্তি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করা যায় এবং বিশ্বজুড়ে মানবতার মূল্যবোধ সমুন্নত রাখা।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ বিশ্বের ৩৩তম বৃহত্তম, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে এবং এক্ষেত্রে বেলজিয়াম এবং ইইউ-এর সঙ্গে নিবিড় অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

ব্রাসেলসে বাংলাদেশ দূতাবাস বিদেশি বন্ধু ও বাংলাদেশ কম্যুনিটির অংশগ্রহণে ঐতিহ্যবাহী সের্কেল রয়্যাল গেলুয়া সেন্টারে সোমবার (২৯ এপ্রিল) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস ২০২৪ এর অভ্যর্থনা অনুষ্ঠান আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন  পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ।

অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে বেলজিয়াম সরকারের পক্ষে দেশ‌টির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (দ্বিপাক্ষিক বিষয়াবলী) রাষ্ট্রদূত জেরোএন কুরম্যান এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পক্ষে ইউরোপিয়ান এক্সটারনাল অ্যাকশন সার্ভিস-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এশিয়া ও প্যাসিফিক) নিকলাস কাভার্নস্টর্ম অংশগ্রহণ করেন।

গেস্ট অব অনার হিসেবে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের পক্ষে ইউরোপিয়ান এক্সটারনাল অ্যাকশন সার্ভিসর ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এশিয়া ও প্যাসিফিক) নিকলাস কাভার্নস্টর্ম অনুষ্ঠানে উপস্থিত সবাইকে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অভিনন্দন জানান।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা, ন্যায়বিচার, সমতা, নারীর ক্ষমতায়ন এবং মানবাধিকারসহ বিভিন্ন বিষয়ে একসঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করছে যা বিদ্যমান অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ককে আরো মজবুত করে চলেছে।

তিনি শিগগিরই বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা চুক্তির বিষয়ে আলোচনা শুরু করতে ইইউর আগ্রহের কথা জানান।

রাষ্ট্রদূত জেরোএন কুরম্যান অভূতপূর্ব উন্নয়ন অর্জনের জন্য বাংলাদেশকে অভিনন্দন জানান। দুই দেশের সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় উন্নীত করতে বাংলাদেশ ও বেলজিয়াম ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করছে উল্লেখ করে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, আগামী দিনে উভয় দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা নতুন রূপ পাবে।

এরপর ড. হাসান মাহমুদ, এম.পি.জেরোএন কুরম্যান, নিকলাস কাভার্নস্টর্ম এবং মাহবুব হাসান সালেহ কেক কেটে অতিথিগণের সঙ্গে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ৫৩তম বার্ষিকী উদযাপন করেন। অনুষ্ঠানে আগত অতিথিগণকে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী উপাদেয় খাবার ও মিষ্টি পরিবেশনের মাধ্যমে আপ্যায়ন করা হয়, যা  দেশি ও বিদেশি সকলে উপভোগ করেন।

অনুষ্ঠানে বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে মিশন প্রধান মাহবুব হাসান সালেহ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি রাষ্ট্র, সরকার ও বন্ধুদের অবদান কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট উল্লেখ করে ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীরতম শ্রদ্ধা নিবেদন করে তিনি বঙ্গবন্ধু কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বল্পোন্নত দেশের কাতার থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার উন্নয়ন যাত্রার গল্প তুলে ধরেন।

বেলজিয়ামকে বাংলাদেশের সত্যিকারের বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তিনি তাঁর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় বেলজিয়ামে উচ্চতর অধ্যয়নের জন্য এসে দেশটির সমাজ, সংস্কৃতি এবং মানুষের সঙ্গে কাটিয়েছেন। ২০২৩ এর অক্টোবরে  প্রধানমন্ত্রীর অত্যন্ত সফল ব্রাসেলস সফরের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ইইউ-এর সঙ্গে বাংলাদেশ জ্ঞান, দক্ষতা উন্নয়ন, উদ্ভাবন এবং কর্মসংস্থানের ওপর গুরুত্বারোপ করে ভবিষ্যতে বিস্তৃত অংশীদারিত্বের লক্ষ্যে কাজ করছে। আগামী দিনে বেলজিয়াম এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন-এর সঙ্গে বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদ, সংযোগ (কানেটিভিটি), সুনীল অর্থনীতি, বৃত্তাকার অর্থনীতিসহ নিরাপত্তার প্রচলিত এবং অপ্রচলিত ক্ষেত্রসমূহে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে।

অনুষ্ঠানে বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে মিশন প্রধান মাহবুব হাসান সালেহ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিদেশি রাষ্ট্র, সরকার ও বন্ধুদের অবদান কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করেন।

রাষ্ট্রদূত ব‌লেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ বিশ্বের ৩৩তম বৃহত্তম, যা ২০৩০ সালের মধ্যে ২৪তম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হবে এবং এক্ষেত্রে বেলজিয়াম এবং ইইউর সঙ্গে নিবিড় অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের বর্তমান সম্পর্ককে পরিণত ও টেকসই হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতার বাইরেও জলবায়ু পরিবর্তন, নিরাপত্তা, সুনীল অর্থনীতি, নবায়নযোগ্য শক্তি, সংযোগ (কানেকটিভিটি), অভিবাসন এবং ট্যালেন্ট পার্টনারশিপসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত হচ্ছে।

অনুষ্ঠানে বেলজিয়াম পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাগণ, রাষ্ট্রদূত/ কূটনীতিকগণ, ইউরোপিয়ান পার্লামেন্টের সদস্যগণ, বেলজিয়ামের রাজনীতিকবৃন্দ, গণমাধ্যম, থিংক ট্যাঙ্কস, একাডেমিয়া, ব্রাসেলসভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিসহ বেলজিয়াম ও লুক্সেমবার্গে বসবাসরত বাংলাদেশ কম্যুনিটির সদস্যগণ অতিথি হিসেবে অংশগ্রহণ করেন।

বিবার্তা/লিমন

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত