শ্রীমঙ্গলে বেঁচে গেল সাপে কাটা অন্তঃসত্ত্বা মা

| আপডেট :  ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:০৬  | প্রকাশিত :  ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৯:০৬


শ্রীমঙ্গলে বেঁচে গেল সাপে কাটা অন্তঃসত্ত্বা মা

সারাদেশ

শ্রীমঙ্গল প্রতিনিধি


অতিসম্প্রতি অন্তঃসত্ত্বা সখিনা বেগম (৩২) কে বিষাক্ত সাপে কেটেছিল। ঝাড়ফুঁক শেষে সংজ্ঞাহীন সখিনাকে তার স্বজনেরা নিয়ে যান শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে। সেখানে সময়োপযোগী এবং দ্রুত নির্ভুল চিকিৎসায় তিনি বেঁচে যান। রক্ষা পায় তার গর্ভের সন্তান।

মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার পাহাড়ি জনপদ ডলুছড়া গ্রামে গত ১৯ এপ্রিল সন্ধ্যায় বাড়ির পাশে ওই গ্রামের বাসিন্দা সখিনা বেগমকে বিষাক্ত সাপে দংশন করে। তিনি ছিলেন পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। স্থানীয় ওঝার দ্বারস্থ হন পরিবারের সদস্যরা। রাতভর চলে ঝাড়ফুঁক। অবনতি হতে থাকে রোগীর অবস্থার। পরে ২০ এপ্রিল বিকেলে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় শ্রীমঙ্গল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে।

জরুরি বিভাগে তখন উপস্থিত ছিলেন আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা. সম্রাট কিশোর পোদ্দার। ঘটনা শুনে তিনি ক্ষতস্থান পরীক্ষা করেন। নিশ্চিত হন এটি বিষাক্ত সাপের কামড়। চিকিৎসা শুরুর প্রস্তুতির পাশাপাশি তিনি ফোন করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরীকে। ফোন পেয়ে দ্রুত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ছুটে যান ডা. সাজ্জাদ। সঙ্গে যান গাইনি বিভাগের চিকিৎসক ডা. রোকসানা পারভীন। তাদের সঙ্গে যোগ দেন মেডিক্যাল অফিসার ডা. শারমিন আক্তার।

ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরীর তত্ত্বাবধানে শুরু হয় চিকিৎসা। রোগীকে দেওয়া হয় অ্যান্টিভেনম। কিন্তু রোগীর কোনো উন্নতি নেই। ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরীর নির্দেশে অ্যান্টিভেনম এর দ্বিতীয় ডোজ প্রয়োগ করা হয়। একইসঙ্গে সখিনার গর্ভের সন্তানের প্রয়োজনীয় পরীক্ষানিরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ করেন গাইনি বিভাগের মেডিক্যাল অফিসার ডা. রোকসানা পারভীন।

এসময় খবর পেয়ে মৌলভীবাজারের সিভিল সার্জন ডা. চৌধুরী জালাল উদ্দিন মোর্শেদও এসে উপস্থিত হন।

অ্যান্টিভেনম দ্বিতীয় ডোজ দেওয়ার পরে ক্রমশ রোগীর অবস্থার উন্নতি হতে থাকে। জ্ঞান ফিরে আসে। তিনি কথা বলতে শুরু করেন।

পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাজ্জাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, সাপে কাটার সঙ্গে সঙ্গে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে পরিস্থিতি এতো জটিল হত না। এই রোগী ছিলেন সন্তানসম্ভবা। তাই আমাদের খুবই সতর্কতার সঙ্গে চিকিৎসা দিতে হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে তার অক্সিজেন লেভেল ওঠানামা করায় উন্নত চিকিৎসার জন্য সিভিল সার্জন স্যারের নির্দেশে সিলেটে রেফার করা হয়।

সখিনার স্বামী বাবুল মিয়া মুঠোফোনে বলেন, সখিনা এখন ভালো আছে। পেটের সন্তানও ভালো আছে। সিলেটে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। সখিনা স্বাভাবিক খাবার খেতে পারছে।

বিবার্তা/কাউছার/সউদ

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত