সঞ্চয়পত্র নিয়ে রাজস্ব বোর্ডের নতুন সিদ্ধান্ত

| আপডেট :  ২৪ আগস্ট ২০২১, ০৬:১৩  | প্রকাশিত :  ২৪ আগস্ট ২০২১, ০৬:১৩

করজাল বৃদ্ধি করতে এবার সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। করদাতা সঞ্চয়পত্রে কত টাকা বিনিয়োগ করেছেন, সে অনুযায়ী রিটার্ন এবং কর দিয়েছেন কিনা, সেসব খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এছাড়া কর রেয়াত সুবিধার অপব্যবহারও বন্ধ করতে চায় এনবিআর। এ জন্য করদাতাদের রিটার্নে প্রদর্শিত সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের তথ্য যাচাইয়ের উদ্যোগ নিয়েছে এনবিআর। এ লক্ষ্যে জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতর থেকে প্রত্যেক কর অঞ্চলকে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দেওয়া হয়েছে। গত ১১ আগস্ট কর অঞ্চলগুলোকে সঞ্চয় অধিদফতরের ডেটাবেজ থেকে করদাতাদের বিনিয়োগের সত্যতা যাচাই করে ১৫ দিন অন্তর প্রতিবেদন আকারে এনবিআরে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এনবিআরের কর্মকর্তারা বলছেন, সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ খতিয়ে দেখা সম্ভব হলে রাজস্ব বাড়ার পাশাপাশি আয়করের নেট বা করজালের আওতা বাড়বে।

প্রসঙ্গত, মোট ৯টি খাতে বিনিয়োগ করলে কর রেয়াত পাওয়ার সুযোগ আছে। এর মধ্যে সবচেয়ে সহজ হলো সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ। একজন করদাতা বর্তমানে বার্ষিক আয়ের ২৫ শতাংশ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ করলে তার বিপরীতে ১৫ শতাংশ কর রেয়াত পেয়ে থাকেন। কর অঞ্চলগুলোতে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতর থেকে পাঠানো ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে করদাতাদের সঞ্চয়পত্র সংক্রান্ত বিনিয়োগের সঠিকতা যাচাইয়ের মাধ্যমে করজাল বৃদ্ধি, ডেস্ক অডিট, ফিল্ড অডিটসহ আয়কর অধ্যাদেশ অনুযায়ী আইনানুগ কার্যক্রম গ্রহণ সহজতর হবে। তবে প্রান্তিক বিনিয়োগকারীসহ করদাতারা যেন কোনও ধরনের হয়রানির শিকার না হন, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। এজন্য কার্যক্রমটি পরিদর্শী কর্মকর্তাদের (যুগ্ম ও অতিরিক্ত কমিশনার পদমর্যাদার কর্মকর্তা) তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন করতে বলা হয়েছে।

১৫ দিন অন্তর প্রতিবেদন পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া চিঠিতে ছক আকারে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগকারীদের তথ্য পাঠাতে বলা হয়েছে। যেখানে করদাতার নাম ও টিআইএন, আয়বর্ষ, সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ, রিটার্ন দাখিল করেছে কিনা, আয়কর রিটার্নে প্রদর্শিত সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। এর আগে গত ১০ মার্চ প্রাক-বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম করজাল বৃদ্ধি করতে সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ খতিয়ে দেখার কথা বলেছিলেন।

জানা গেছে, প্রতিবছরই করদাতাদের বড় একটি অংশ সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের বিপরীতে কর রেয়াত দাবি করে সুবিধা নেন। তবে কর বিভাগের পক্ষে সেই বিনিয়োগের সত্যতা যাচাই করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে সঞ্চয়পত্রে কর রেয়াতের অপব্যবহার হতো।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদফতরের তথ্যমতে, একক নামে বাংলাদেশ সঞ্চয়পত্রে ৩০ লাখ ও যৌথ নামে ৬০ লাখ টাকা পর্যন্ত বিনিয়োগ করা যায়। আর প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের ঊর্ধ্বসীমা নেই। আর পরিবার সঞ্চয়পত্র শুধু নারীরা কিনতে পারেন। একক নামে ৪৫ লাখ টাকা পর্যন্ত কেনা যায়। এর মেয়াদ পাঁচ বছর। এছাড়া পেনশনার সঞ্চয়পত্র একক নামে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকার কেনা যায়।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত