সরকারি টাকায় বিদেশ ভ্রমণ ও যানবাহন ক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা

| আপডেট :  ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৮:২৬  | প্রকাশিত :  ০৪ জুলাই ২০২৪, ০৮:২৬


সরকারি টাকায় বিদেশ ভ্রমণ ও যানবাহন ক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা

জাতীয়

বিবার্তা প্রতিবেদক


২০২৪-২৫ অর্থবছরে সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং আওতাধীন অধিদপ্তর, পরিদপ্তর, দপ্তর, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, পাবলিক সেক্টর করপোরেশন এবং রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানির পরিচালনা ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় বিদেশ ভ্রমণ ও যানবাহন ক্রয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সরকার।

বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সরকারি ব্যয়ে কৃচ্ছ্রসাধনের উদ্দেশ্যে এই উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

৪ জুলাই, বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের উপসচিব মো. হেলাল উদ্দীন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে।  

নির্দেশনায় বলা হয়, সরকারের নিজস্ব অর্থে সব ধরনের বিদেশ ভ্রমণ, ওয়ার্কশপ ও সেমিনারে অংশগ্রহণ বন্ধ থাকবে। ভ্রমণ অত্যাবশ্যকীয় হলে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে বিদেশে ভ্রমণ করা যাবে। এক্ষেত্রে পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় থাকছে সরকারি অর্থায়নে বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশের দেওয়া স্কলারশিপ বা ফেলোশিপের আওতায় বৈদেশিক অর্থায়নে মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে অংশ নেওয়া।

সেই সঙ্গে সকল প্রকার যানবাহন কেনা বন্ধ থাকবে। এছাড়া গ্যাস ও জ্বালানি ব্যয় কমানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।  

যেসব ক্ষেত্রে বিদেশভ্রমণ করা যাবে সেগুলো হলো: পরিচালন ও উন্নয়ন বাজেটের আওতায় সরকারি অর্থায়নে এবং বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়, দেশ কর্তৃক প্রদত্ত স্কলারশিপ, ফেলোশিপ-এর আওতায় বৈদেশিক অর্থায়নে মাস্টার্স ও পিএইচডি কোর্সে অধ্যয়নের জন্য বিদেশ ভ্রমণ। বিদেশি সরকার, প্রতিষ্ঠান, উন্নয়ন সহযোগীর আমন্ত্রণে ও সম্পূর্ণ অর্থায়নে আয়োজিত বৈদেশিক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ।

প্রি-শিপমেন্ট ইন্সপেকশন (পিএসআই), ফ্যাক্টরি অ্যাকসেপট্যান্স টেস্টের (এফএটি)-এর আওতায় বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি-এর চলতি বছরের ২ জানুয়ারি ১ নম্বর স্মারকে জারি করা পরিপত্র কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। তবে একান্ত অপরিহার্য বিবেচনায় পিএসআই, এফএটি -এর আওতায় বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পূর্বানুমোদন গ্রহণ করতে হবে।

পরিচালন বাজেটের আওতার ব্যয়: সব ধরনের থোক বরাদ্দ (কোড নং ৩৯১১১১১ ও ৪৯১১১১১) হতে ব্যয় বন্ধ থাকবে।  ‘৩২১১১১৩-বিদ্যুৎ’, ‘৩২৪৩১০১-পেট্রোল, অয়েল ও লুব্রিকেন্ট’ ও ‘৩২৪৩১০২-গ্যাস ও জ্বালানি’ খাতে বরাদ্দ করা অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে।  

পরিচালন বাজেটের আওতায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কৃষি মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট স্থাপনা ব্যতীত নতুন আবাসিক (৪১১১১০১)/অনাবাসিক (৪১১১২০১)/ অন্যান্য ভবন স্থাপনা (৪১১১৩১৭) নির্মাণ বন্ধ থাকবে। তবে চলমান নির্মাণ কাজ ন্যূনতম ৭০ শতাংশ সম্পন্ন হয়ে থাকলে অর্থ বিভাগের অনুমোদনক্রমে ব্যয় নির্বাহ করা যাবে।

সব ধরনের যানবাহন ক্রয়  (‘৪১১২১০১-মোটরযান’, ‘৪১১২১০২-জলযান’, ‘৪১১২১০৩- আকাশযান’) খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে। তবে ১০ বছরের অধিক পুরোনো টিওএন্ডইভুক্ত যানবাহন প্রতিস্থাপনের ক্ষেত্রে অর্থ বিভাগের অনুমোদনক্রমে ব্যয় নির্বাহ করা যাবে। ‘৪১৪১১০১-ভূমি অধিগ্রহণ’ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থ ব্যয় বন্ধ থাকবে।

উন্নয়ন বাজেটের আওতার ব্যয়:  ‘৩২১১১১৩-বিদ্যুৎ’, ‘৩২৪৩১০১-পেট্রোল, অয়েল ও লুব্রিকেন্ট’ ও ‘৩২৪৩১০২-গ্যাস ও জ্বালানি’ খাতে বরাদ্দকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৮০ শতাংশ ব্যয় করা যাবে। সব প্রকার যানবাহন ক্রয় (‘৪১১২১০১-মোটরযান’, ‘৪১১২১০২-জলযান’, ‘৪১১২১০৩- আকাশযান’) বন্ধ থাকবে। ‘৪১৪১১০১-ভূমি অধিগ্রহণ’-এর ক্ষেত্রে অধিগ্রহণ কার্যক্রমের সব আনুষ্ঠানিকতা প্রতিপালনপূর্বক অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন গ্রহণ সাপেক্ষে ব্যয় করা যাবে।  

এছাড়া পরিকল্পনা কমিশনের অনুকূলে ‘বিশেষ প্রয়োজনে উন্নয়ন সহায়তা’ খাতে জিওবি বাবদ সংরক্ষিত এবং মন্ত্রণালয়/বিভাগের অনুকূলে ‘থোক বরাদ্দ’ হিসেবে সংরক্ষিত জিওবির সম্পূর্ণ অংশ অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদন গ্রহণ সাপেক্ষে ব্যয় করা যাবে।

এর আগে ২০২২ সালের ১২ মে জারি করা এক পরিপত্রে বলা হয়েছিল, কোভিড পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও বৈশ্বিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে পরবর্তী আদেশ না দেওয়া পর্যন্ত এক্সপোজার ভিজিট, শিক্ষাসফর, এপিএ ও ইনোভেশনের আওতাভুক্ত ভ্রমণ, কর্মশালা বা সেমিনারে অংশগ্রহণসহ সব ধরনের বৈদেশিক ভ্রমণ বন্ধ থাকবে। পরে ওই বছরের সেপ্টেম্বর মাসে সেই নির্দেশনা শিথিল করা হয়।

বিবার্তা/এমজে

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত