স্মার্ট শিক্ষাব্যবস্থা গড়তে নতুন প্যাডাগোজি আবশ্যক: উপাচার্য ড. মশিউর রহমান
স্মার্ট শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে নতুন প্যাডাগোজি আবশ্যক বলে মনে করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান। তিনি বলেন, ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের দক্ষ এবং বিশ্বমানের করে গড়ে তুলতে হলে তাদের সামনে প্যাডাগোজির নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরতে হবে। শিখন পদ্ধতিতে নতুন অ্যাপ্রোচ নিয়ে আসতে হবে। বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় এসব খুবই অত্যাবশ্যক। ৭ জুলাই, রবিবার রাজধানীর ইস্কাটনে বিয়াম মিলনায়তনে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে বাস্তবায়নাধীন কলেজ এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্ট (সিইডিপি) আয়োজিত ÔToT (Master Trainer Program) on Pedagogy’ শীর্ষক প্রশিক্ষণের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য। শিক্ষকদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, আমরা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে রয়েছি। আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। কিন্তু সকল সংকট, প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে সামনে অগ্রসর হওয়ার হতো মনোবল আমাদের রয়েছে। কলেজের ক্লাসরুম পরিদর্শনে শিক্ষার্থী উপস্থিতি কম দেখলে আপনারা বলেন দারিদ্র্যসহ নানা কারণে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে কম আসেন। এটি হয়ত বাস্তবতা। কিন্তু আমার কাছে মনে হয় শিক্ষার্থীকে ক্লাসরুমে আকৃষ্ট করার মতো বিষয়ের ঘাটতি রয়েছে কিনা। শিক্ষার্থী যা জানতে চায়, যা বলতে চায়, তার যে আগ্রহ সেটি আমরা দিতে পারছি কিনা। আরও বেশি কর্মতৎপর জীবন তাকে আকৃষ্ট করছে কিনা, যা তাকে ক্লাসরুম থেকে বিরত রাখছে। শুধু দারিদ্র্যের কারণে শিক্ষার্থীরা ক্লাসরুমে আসছে না তার সঙ্গে আমি বাস্তবতার মিল খুঁজে পাই না। কারণ বঙ্গবন্ধু কন্যার নেতৃত্বে এই দেশ থেকে মঙ্গা দূর হয়েছে। আমাদেরকে এই সংকট কাটিয়ে উঠতে হবে। নতুন প্যাডাগোজির আপ্রোচে শিক্ষার্থীকে ক্লাসমুখী করতে হবে। উপাচার্য ড. মশিউর রহমান আরো বলেন, উচ্চশিক্ষায় আমাদের অন্যান্য পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থীরা কী ক্লাসে যায়? নাকি সে ওই সময়ে অন্য কাজে যুক্ত থাকে? পৃথিবীর অন্যান্য দেশেও কি উচ্চশিক্ষায় শিক্ষার্থীর আকর্ষণ বেশি? নাকি একটি নির্দিষ্ট বয়স শেষে তারা কর্মজীবনে প্রবেশ করে? সেক্ষেত্রে আমাদের বুঝতে হবে উচ্চশিক্ষায় কী এতো সংখ্যক শিক্ষার্থী দরকার? নাকি শিক্ষার্থী সংখ্যা কমিয়ে এনে গুণগত মানের শিক্ষা নিশ্চিত করার জন্য নতুন করে ঢেলে সাজাতে হবে। যারা আমরা পরিকল্পনা করি সময় এসেছে এই জায়গাগুলোকে নিয়ে ভাবার। সময় এসেছে বলেই এখনকার যে বাস্তবতা সেখান থেকে আমরা ক্লাসরুমে নতুন পাঠদানের জায়গা থেকে যদি সরে থাকি সেটি হবে আরেকটি ভুল। আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের ভিশনটাকে বাস্তবায়ন করতে পারব না। কেননা অনেক পরিকল্পনা নিতে গেলে দীর্ঘসূত্রিতা আছে। এই জায়গায় দাঁড়িয়ে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় উপলব্ধি করেছে শিক্ষকদের কী কী দরকার। আমরা ৫ হাজার শিক্ষককে আইসিটিতে প্রশিক্ষণ দিত যাচ্ছি। ৫ হাজার শিক্ষককে প্যাডাগোজিতে প্রশিক্ষণ দিতে যাচ্ছি। সারাদেশে মেন্টাল হেলথের প্রশিক্ষণ চলছে। বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ অনলাইনে অব্যাহত রয়েছে। প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশ্যে উপাচার্য ড. মশিউর রহমান বলেন, যারা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তাদের কাছে প্রত্যাশা অনেক বেশি। কারণ আমাদের সমস্যা সমাধান অন্য কোনো দেশ থেকে এসে কেউ করে দিবে না। যে দেশ আত্মমর্যাদার পদ্মাসেতু তৈরি করতে পারে। সেখানে রিসোর্স পার্সন ধার করে আনার কোনো আবশ্যকতা নেই। আপনারা যারা এখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন তারাই রিসোর্স পার্সন হয়ে উঠবেন। উপমহাদেশের কানেকটিভিটির মাধ্যমে আমাদের রিসোর্স পার্সনরাই অন্যদেশে বিশেষজ্ঞ হিসেবে যাবেন। আমাদের স্বপ্নের জায়গাটা সেই রকম। নিজেকে যোগ্য করে গড়ে তুলতে পারলে এটি সম্ভব।আমাদের দেশে অনেক বিদেশি শিক্ষার্থী পড়তে আসে। মেডিকেল কলেজসহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদেশি শিক্ষার্থীদের অনেক চাহিদা রয়েছে। আমরা যদি নিজেদের তৈরি করতে পারি তাহলে বিদেশেও আমাদের চাহিদা তৈরি হবে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি-বেসরকারি কলেজের ১২০ জন শিক্ষক এই প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। সিইডিপির উপ-প্রকল্প পরিচালক (উপ-সচিব) আবদুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রশিক্ষণে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিয়াম ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মো. মাহবুব-উল-আলম, নায়েমের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. তাহমিনা বেগম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইইআর এর অধ্যাপক ড. দিবা হোসেন। বিবার্তা/লিমন
স্মার্ট শিক্ষাব্যবস্থা গড়তে নতুন প্যাডাগোজি আবশ্যক: উপাচার্য ড. মশিউর রহমান
শিক্ষা
বিবার্তা প্রতিবেদক
- সর্বশেষ খবর
- সর্বাধিক পঠিত