হত্যা মামলায় এবার আসামি সাবেক মেয়র আইভী

| আপডেট :  ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৯  | প্রকাশিত :  ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৯


হত্যা মামলায় এবার আসামি সাবেক মেয়র আইভী

রাজনীতি

বিবার্তা প্রতিবেদক


নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিতে পোশাক শ্রমিক নিহতের ঘটনায় করা হত্যা মামলায় এবার আসামি করা হয়েছে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভীকে।

এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে হতাহতের ঘটনায় এর আগে নারায়ণগঞ্জে দুই ডজনেরও বেশি মামলা হলেও প্রথমবারের কোনো মামলায় আইভীকে আসামি করা হয়েছে।

নিহত পোশাক শ্রমিক মিনারুল ইসলামের ভাই নাজমুল হক মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) বিকালে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় হত্যা মামলাটি করেন বলে জানিয়েছেন থানার ওসি আবু বক্কর সিদ্দিক।

ওসি জানান, মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে।

এছাড়া সাবেক সংসদ সদস্য শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু, গোলাম দস্তগীর গাজী, আব্দুল্লাহ আল কায়সার হাসনাত, মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি আনোয়ার হোসেনসহ ১৩২ জনের নাম আসামি হিসেবে উল্লেখ করে আরও ২০০-৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে।

সেলিনা হায়াৎ আইভী ২০০৩ সালে বিএনপি জোট সরকারের আমলে প্রথম নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এরপর ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের প্রথম নির্বাচনে শামীম ওসমানকে লক্ষাধিক ভোটে হারিয়ে দেশের প্রথম নারী মেয়র নির্বাচিত হন।

৫ আগস্টের পর আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটলেও ‘পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ’ হিসেবে পরিচিত সেলিনা হায়াৎ আইভীকে এই ধরনের কোনো হামলার শিকার হতে হয়নি।

তবে মঙ্গলবার করা হত্যা মামলায় আসামির তালিকায় আইভীর ছোটভাই মহানগর যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আহাম্মদ আলী রেজা উজ্জ্বলেরও নাম রয়েছে। আরও অন্তত দুইটি মামলায় উজ্জ্বলকে আসামি করা হয়েছে।

হত্যা মামলাটির বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে আইভী বলেন, “আজীবন মানুষের জন্য রাজনীতি করেছি, কখনও দলবাজি করি নাই। আমার বাবাও কোনোদিন খারাপ রাজনীতি করেন নাই। তাকে আদর্শ মেনেই আমি সবসময় গণমানুষের স্বার্থে কাজ করেছি।

“কিন্তু এখন আমি ও আমার ছোটভাই বিভিন্ন স্বার্থান্বেষী মহলের হিংসাত্মক মনোভাবের কারণে খারাপ রাজনীতির শিকার হচ্ছি।”

এছাড়া আসামির তালিকায় রয়েছে মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আতাউর রহমান মুকুলেরও নাম। তিনি বন্দর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান।

এ বিষয়ে মুকুল বলেন, তার দলের লোকজন তাকে রাজনৈতিকভাবে কোনঠাসা করতে আসামির তালিকায় তার নামটি অন্তর্ভূক্ত করতে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছেন।

মামলার নথিসূত্রে জানা যায়, গত ২০ জুলাই সন্ধ্যায় ছাত্র আন্দোলন চলাকালীন আদমজী এলাকায় গুলিবিদ্ধ হন পোশাক শ্রমিক মিনারুল ইসলাম। তলপেটে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় মিনারুলকে নারায়ণগঞ্জ ৩০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরদিন রাজশাহীতে তার গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হয়।

মামলার এজাহারে বাদী উল্লেখ করেন, “ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশে ২০ জুলাই সন্ধ্যায় শামীম ওসমান, নজরুল ইসলাম বাবু, গোলাম দস্তগীর গাজী ও কায়সার হাসনানের নেতৃত্বে আসামিরা আগ্নেয়াস্ত্র ও ধারালো অস্ত্রসহ আদমজী এলাকায় ছাত্রজনতার উপর হামলা চালায়।

“এ সময় মিনারুল ওই ঘটনার মধ্যে পড়ে গেলে তাকে লক্ষ্য করে শামীম ওসমান তার হাতে থাকা আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করলে তলপেটে গুলি লাগে এবং মিনারুল লুটিয়ে পড়ে।”

এদিকে, মঙ্গলবার রাতে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় আরও একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় শেখ হাসিনাসহ ৪০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

এই মামলার বাদী আকলিমা আক্তার গত ২০ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত অটোমোবাইল মেকানিক মোস্তফা কামাল রাজুর (৩০) স্ত্রী।

তবে, দুই মামলাতে এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হননি বলে জানান ওসি আবু বক্কর।

বিবার্তা/এসবি

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত