৮০০ পণ্যের দাম কমালো কাতার, দেশে মূল্যবৃদ্ধির রেকর্ড

| আপডেট :  ২৩ মার্চ ২০২২, ০৬:৩০  | প্রকাশিত :  ২৩ মার্চ ২০২২, ০৬:৩০

আগামী এপ্রিল মাস থেকে শুরু হচ্ছে পবিত্র মাহে রমজান মাস। এ উপলক্ষে ৮০০টি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম কমানোর ঘোষণা দিয়েছে কাতার সরকার। পবিত্র রমজান মাস উপলক্ষে মঙ্গলবার (২২ মার্চ) কাতারের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় এ ঘোষণা দিয়েছে।

আগামীকাল বুধবার (২৩ মার্চ) থেকেই আট শতাধিক পণ্যে মূল্যছাড় কার্যকর হবে। রমজান মাসের শেষ পর্যন্ত চলবে এ কার্যক্রম। তাদের এ উদ্যোগে সহযোগিতা করছে দেশটির প্রধান শপিংমল ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো।

কাতার সরকারের ঘোষণা অনুসারে, এ বছর রমজান উপলক্ষে দাম কমানো পণ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে মধু, ময়দা, সেরেয়াল, দই ও দুগ্ধজাত পণ্য, গুঁড়া ও তরল দুধ, পনির, জুস, চিনি, কফি, খেজুর, খনিজ ও বোতলজাত পানি, লেবু, চাল, হিমায়িত শাকসবজি, মুরগি, ডিম, মাংস, ভোজ্যতেল, চা, ঘি, লবণ, অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল, কাগজের ন্যাপকিন, ডিটারজেন্ট, ময়লার ব্যাগ, ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা পণ্য প্রভৃতি।

দাম কমানো পণ্যের পুরো তালিকা দেখতে ক্লিক করুন: সূত্র: দ্য পেনিনসুলা

নিত্যপণ্য মূল্যে প্রতিযোগী এবং উন্নত দেশগুলোকে ছাড়িয়েছে বাংলাদেশ। ভোজ্যতেল, ডিম ও পেঁয়াজসহ কয়েকটি পণ্যের দাম ইউরোপ-আমেরিকাকেও ছাড়িয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজারের দোহাই দিয়ে এসব পণ্যের দাম বাড়ানো হচ্ছে।

সাধারণত বিশ্ববাজারে দাম বাড়লে দেশে ব্যবসায়ীরা এর সুযোগ নেয়। অর্থনীতির ভাষায় একে বলে প্রত্যাশিত মূল্যস্ফীতি। অর্থাৎ দাম বাড়বে, এই কারণে পণ্যের সরবরাহ বন্ধ করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে। তিনি বলেন, এখানে বাজার ব্যবস্থার ব্যর্থতা রয়েছে।

একশ্রেণির ব্যবসায়ী বাজারকে জিম্মি করে ফেলে। এদেরকে চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে হবে। তিনি বলেন, সামনে রমজান। রমজানকে কেন্দ্র করে কারসাজি চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে। ফলে এদেরকে চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনতে হবে। পাশাপাশি পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার উদ্যোগ নিতে হবে।

মানুষের আয়ের সঙ্গে মিলিয়ে কয়েকটি পণ্যের তুলনামূলক পর্যালোচনা করেছে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সেখানে দেখা যাচ্ছে, ঢাকায় একজন মানুষের মাসিক গড় আয় ১৪৯ মার্কিন ডলার।

কিন্তু এক লিটার দুধের দাম ৮০ টাকা, এক ডজন ডিম ১১০ টাকা এবং এক কেজি পেঁয়াজের দাম ৫৫ টাকা। কিন্তু চেক রিপাবলিকের অস্ট্রাবা শহরের মানুষের মাসিক গড় আয় ১৩৩১ ডলার। সেখানে প্রতি লিটার দুধের দাম ৬২ টাকা।

স্পেনের মালাগা শহরে একজনের মাসিক আয় ২২২৭ ডলার। সেখানে দুধের লিটার ৬২ টাকা। আবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ওহিও রাজ্যের ডেটন শহরে একজন নাগরিকের মাসিক আয় ৩৯৫৫ ডলার, যা বাংলাদেশের চেয়ে ২৭ গুণ বেশি।

কিন্তু সেখানে এক ডজন ডিম ১০৩ টাকা। অর্থাৎ আয় ২৭ গুণ বেশি হলেও ডিমের দাম প্রতি ডজনে ৭ টাকা কম। মালয়েশিয়ার সেলানগর শহরের মানুষের মাসিক গড় আয় ৬৬৯ ডলার। সেখানে প্রতি ডজন ডিম ৮৫ টাকা।

সার্বিয়ার বেলগ্রেড শহরে একজনের মাসিক গড় আয় ৩৩৫ ডলার। সেখানে এক কেজি পেঁয়াজের দাম ৪০ টাকা। আজারবাইজানের বাকু শহরে প্রতি নাগরিকের মাসিক গড় আয় ৩০৭ ডলার। সেখানে প্রতিকেজি পেঁয়াজের দাম ৩৭ টাকা।

অর্থাৎ উন্নত দেশগুলোর চেয়ে বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি পণ্যের দাম বেশি। সিপিডির গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে মানুষ সাধারণত তিন ধরনের চাল খায়। এগুলো হলো- মিনিকেট, পাইজাম এবং মোটা চাল।

তিনটির দামই ঊর্ধ্বমুখী। সেক্ষেত্রে থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামের চেয়ে বাংলাদেশে চালের দাম বেশি। কিন্তু এসব দেশের তুলনায় বাংলাদেশে চালের উৎপাদন বেশি। ময়দা ও ভোজ্যতেলের ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি।

সাম্প্রতিক সময়ে দেশে অধিকাংশ নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। এর মধ্যে ভোজ্যতেল, চাল, চিনি, পেঁয়াজ, ডাল, ডিম এবং গরুর মাংস অন্যতম। ব্যবসায়ীরা বলছে, আন্তর্জাতিক বাজারের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় দেশীয় বাজারেও প্রভাব পড়ছে।

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত