সরকার থেকে দেওয়া অনুদানের অর্থ স্বচ্ছতার সঙ্গে খরচের আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর

| আপডেট :  ২৫ জুন ২০২৪, ০৮:৫৭  | প্রকাশিত :  ২৫ জুন ২০২৪, ০৮:৫৭


সরকার থেকে দেওয়া অনুদানের অর্থ স্বচ্ছতার সঙ্গে খরচের আহ্বান শিক্ষামন্ত্রীর

শিক্ষা

বিবার্তা প্রতিবেদক


শিক্ষাখাতের উন্নয়নে সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া অনুদানের অর্থ স্বচ্ছতার সঙ্গে খরচের আহ্বান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। একইসঙ্গে শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিকতার নামে প্রশিক্ষণ কিংবা কর্মশালা না করার জন্যও তাগিদ দিয়েছেন তিনি।

২৫ জুন, মঙ্গলবার রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনিস্টিটিউটে পারফরমেন্স বেজড গ্র্যান্টস ফর সেকেন্ডারি ইন্সটিটিউশনস (PBGSI) স্কিমের আওতায় অনুষ্ঠিতব্য ‘Central Annual Workshop on PBGSI Scheme Activities and Dissemination’ শীর্ষক ওয়ার্কশপে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।

মন্ত্রী বলেন, অনেক সময় দেখা যায় সরকারি অনেক প্রকল্প অর্থবছর শেষ হওয়ার আগে আগে শুধু আনুষ্ঠানিকতা করে খরচ দেখানোর চেষ্টা করে। এটা দুঃখজনক। কারণ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া অনুদান সঠিকভাবে ব্যবহার করতে হবে। কোথায় কীভাবে খরচ হচ্ছে, সেটারও স্বচ্ছ হিসেব রাখতে হবে।

সরকারি প্রকল্পের কথা মানুষের কাছে বেশি করে পৌঁছে দেওয়ার তাগিদ দিয়ে তিনি বলেন, অনেক টাকা খরচ করে তা যদি প্রচার করা না যায়, মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া না যায় তাহলে এত অর্থ খরচের কোনো যৌক্তিকতা নেই। এসব বিষয়ে প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে। মন্ত্রণালয় থেকেও এসব বিষয়ে নজর রাখার জন্য বলব।

অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী বেগম শামসুন নাহারও শিক্ষাখাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বলেন, প্রধানমন্ত্রী দেশকে স্মার্ট বাংলাদেশের পথে নিয়ে যেতে কাজ করছেন। সেগুলো বাস্তবায়ন করতে হবে তো আমাদের সবাইকে। কিন্তু এক্ষেত্রে আমরা স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার সঙ্গে কাজ না করলে তা হবে দুঃখজনক।

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, শিক্ষাখাতে অনেক প্রকল্প আছে যেখানে প্রান্তিক শিক্ষার্থী, প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। এসব বরাদ্দ যেন সঠিকভাবে দেওয়া হয় এবং খরচ হয় সেদিকে নজর রাখতে হবে। রাষ্ট্রের টাকা কোনোভাবে নষ্ট করা যাবে না।

প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১৯ সালে শুরু হওয়া ১ হাজার ১৯৬ কোটি ৬৭ লাখ ৭২ হাজার কোটি টাকার এই প্রকল্প চলবে ২০২৫ সাল পর্যন্ত। প্রকল্পের আওতায় ২০২২-২০২৩ ও ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বিভিন্ন মানদণ্ডের আলোকে উপজেলা পর্যায়ের কমিটির মূল্যায়নের ভিত্তিতে সাড়ে ৭ হাজার স্কুল/মাদরাসা/কলেজ ব্যবস্থাপনা জবাবদিহি অনুদান হিসেবে ৫ লাখ করে ৩৭৫ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক প্রফেসর চিত্ত রঞ্জন দেবনাথ জানান, প্রকল্পের অর্থে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ক্ষুদ্র চাহিদা পূরণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কমনরুম, বাথরুম, লাইব্রেরি, গবেষণাগার ও হাইজিন কর্নার তৈরি, দরিদ্র শিক্ষার্থীদের অনুদান ও সাড়ে ৭ হাজার প্রতিষ্ঠানে প্রতিবন্ধীবান্ধব অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে।

প্রকল্প পরিচালক জানান, দেশব্যাপী সাড়ে ৭ হাজার প্রতিষ্ঠানের প্রায় এক লাখ ৫ হাজার শিক্ষক প্রণোদনা হিসেবে ৭৫ কোটি টাকা পেয়েছেন। বিভিন্ন উপজেলা/থানার সমসংখ্যক প্রতিষ্ঠান লাইব্রেরির জন্য প্রয়োজনীয় বইপত্র কেনার জন্য এক লাখ ৫ হাজার টাকা করে, দেড় হাজার প্রতিষ্ঠান এক লাখ ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান পেয়েছে। এছাড়া সাড়ে ৭ হাজার প্রতিষ্ঠান তাদের শিক্ষার্থীদের ফ্যাসিলিটির উন্নয়নে তাদের জন্য টিউবওয়েল/ফিল্টার সংযোজনের মাধ্যমে বিশুদ্ধ পানি, ব্যবস্থা বিশেষ করে ছাত্রীদের পৃথক শৌচাগার/কমনরুমের ব্যবস্থা/উন্নয়নের জন্য অনুদান পেয়েছে বলেও জানান তিনি।

প্রকল্প পরিচালক জানান, আগামী অর্থবছর থেকে স্কুল/মাদরাসা/কলেজ ব্যবস্থাপনা জবাবদিহি অনুদান হিসেবে ৫ লাখ টাকার মধ্যে এক লাখ টাকা আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীদের প্রদান এবং অবশিষ্ট টাকা প্রতিষ্ঠানের চাহিদা অনুযায়ী ব্যয় করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।

এছাড়াও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১০ হাজার ৬০০ শিক্ষার্থীকে ১০ হাজার টাকা করে উপজেলা/থানা শ্রেষ্ঠ শিক্ষার্থী পুরস্কার এবং সমসংখ্যক শিক্ষার্থীকে উচ্চ মাধ্যমিক সমাপনী পুরস্কার দেওয়ার বিষয়টিও প্রক্রিয়াধীন বলে জানান প্রকল্প পরিচালক।

কর্মশালায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বিভাগে সচিব ড. ফরিদ উদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

কর্মশালায় প্রকল্পের সুবিধাভোগী প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠান প্রধান, ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, শিক্ষার বিভিন্ন স্তরের দফতর প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন।

বিবার্তা/সউদ

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত