এশিয়া মহাদেশের মধ্যে বাংলাদেশে কোটা সবচেয়ে কম: কাদের

| আপডেট :  ১৪ জুলাই ২০২৪, ০১:০২  | প্রকাশিত :  ১৪ জুলাই ২০২৪, ০১:০২


এশিয়া মহাদেশের মধ্যে বাংলাদেশে কোটা সবচেয়ে কম: কাদের

জাতীয়

বিবার্তা প্রতিবেদক


এশিয়া মহাদেশের মধ্যে বাংলাদেশে কোটা সবচেয়ে কম দাবি করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিসিএস পরীক্ষায় নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা তালিকায় নিয়োগ প্রায় ৭০ শতাংশের মতো। ৩৩, ৩৪, ৩৫ এ তিনটি বিসিএসে ৭২ শতাংশ প্রার্থীকে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দেয়া হয়েছে, যেখানে কোটায় নিয়োগ পেয়েছে ২৮ শতাংশ। শূন্য পদগুলোতে মেধা তালিকা থেকে নেয়া হয়েছে। কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে যেখানে মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হচ্ছে, সেখানে আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই।

১৩ জুলাই, শনিবার ধানমন্ডির আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ওবায়দুল কাদের বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই কোটার ভিত্তিতে সবচেয়ে কম নিয়োগ দেয়া হয়। বর্তমানে কোটায় ভারতে ৬০ শতাংশ, পাকিস্তানে ৯২.৫ শতাংশ, নেপালে ৪৫ শতাংশ, শ্রীলংকায় ৫০ শতাংশ নিয়োগ দেয়া হয়। এ পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায় আমাদের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় কোটার প্রয়োজন রয়েছে।

এসময় সংবিধানের বাইরে গিয়ে আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই দাবি করে কোটাবিরোধীদের আইনের মাধ্যমে দমন করার ইঙ্গিত দেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের দাবি ও অনেক বক্তব্য আমাদের সংবিধান ও সাংবিধানিক রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বিরোধী।

সরকারি চাকরিতে কোটা ব্যবস্থা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নে ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালে সরকারি চাকরিতে সব কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করে সরকার। সম্প্রতি এক রিট আবেদনে হাই কোর্ট মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করলে নতুন করে আন্দোলন শুরু হয়। এর পর গত ১লা জুন থেকে কোটা বিরোধী আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা বুধবার সকাল থেকে ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় সড়ক আটকে বিক্ষোভ শুরু করে।

আজ নতুন করে কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কোটা সংস্কার আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে পুলিশের সঙ্গে সারা দেশে কয়েক জায়গায় সংঘাত হয়। এ দিকে কোটা বাতিলের পরিপত্র বাতিল করা হাই কোর্টের রায়ের বাস্তবায়নযোগ্য অংশ ইতিমধ্যে প্রকাশ হয়, যাতে বলা আছে, সব কোটাই থাকতে হবে। তবে সরকার চাইলে হার পরিবর্তন করতে পারবে।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, উচ্চ আদালতের নির্দেশনা- পবিত্র সংবিধানের আলোকেই কেবলমাত্র রাষ্ট্র পরিচালনা হয়। রাষ্ট্র পরিচালনা সম্পর্কিত সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদে সকল নাগরিকের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করবে রাষ্ট্র। সেখানে আরো বলা হয়েছে, মানুষের সামাজিক, অর্থনৈতিক অসাম্যঞ্জস্য নিরোধের জন্য নাগরিকদের মধ্যে সুষম বন্টন নিশ্চিত করার জন্য এবং প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

তিনি আরো বলেন, সংবিধানে বলা হয়েছে, জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। অথচ গত কয়েক বছরে সরকারি চাকরিতে মেয়েদের অন্তর্ভুক্তি হতাশাজনকভাবে কমেছে।

তিনি আরো বলেন, কোটা না থাকায় পুলিশে মাত্র চারজন নারী অফিসার সুযোগ পেয়েছে, ফরেন সার্ভিসে সুযোগ পেয়েছে মাত্র দুজন। ৫০টি জেলায় নারীরা ক্যাডার সার্ভিসে যোগদানের সুযোগ পাননি। ২৩টি জেলায় একজনও পুলিশে চাকরি পাননি। সংবিধানের উল্লেখিত বিধানের উদ্দেশ্য হচ্ছে রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে যাতে সরকারি চাকরিসহ সব ক্ষেত্রে সবাই যেন সমানভাগে সুযোগ পায়। সেজন্যই কোটার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

কোটা বিরোধিতায় অশুভ শক্তি নেমেছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পুঁজি করে একটি কুচক্রি মহল রাষ্ট্রকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র করছে। আমাদের কাছে তথ্য আছে, ২০১৮ সালে যখন কোটাবিরোধী আন্দোলন হয়, তখন এই রাজনৈতিকভাবে পরাজিত অশুভ শক্তি কোটার উপর ভর করেছিল এবং সড়কের আন্দোলনকে রাজনৈতিক রুপ দেয়ার ষড়যন্ত্র করেছে। তখন এই অশুভ শক্তির হাতে আমাদের ধানমন্ডি পার্টি অফিসও আক্রন্ত হয়েছে।’

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী শামসুন্নাহার চাঁপা, প্রধানমন্ত্রীর শিক্ষা ও সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীসহ কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতারা।

বিবার্তা/লিমন

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত