বিবেকহীন মেধাহীনের চেয়েও ভয়ংকর

| আপডেট :  ১৭ জুলাই ২০২৪, ১১:০১  | প্রকাশিত :  ১৭ জুলাই ২০২৪, ১১:০১


বিবেকহীন মেধাহীনের চেয়েও ভয়ংকর

পাঠকের মেইল

মো. হাফিজুল ইসলাম হাফিজ


শুরুতেই বলে নিচ্ছি আমি ব্যক্তিগতভাবে কোনোভাবেই কোটা পদ্ধতি বাতিলের পক্ষে নই তবে অবশ্যই সময় ও যুগোপযোগী সংস্কারের পক্ষে। কারণ স্বাধীনতা পরবর্তী বাংলাদেশ এবং বর্তমান বাংলাদেশের সামাজিক, অর্থনৈতিক ও আঞ্চলিক প্রেক্ষাপট এক নয়। এখানে অনেক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে এমনকি কিছু কিছু ক্ষেত্রে সেটা বৈপ্লবিক পরিবর্তন। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে সামাজিক অর্থনৈতিক এবং আঞ্চলিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় সংবিধান, আইন সংশোধন হয়, সংস্কার হয়। সুতরাং স্বাধীনতা পরবর্তী কোটা পদ্ধতি বর্তমান বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ তা দ্রুত বিচার-বিশ্লেষণ করে সময়োপযোগী করা অনেকটা সময়ের দাবি।

বাংলাদেশে প্রথম সরকারি চাকরিতে কোটা চালু করা হয় একটা প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ১৯৭২ সালের ৫ সেপ্টেম্বর। উক্ত প্রজ্ঞাপনে ২০ শতাংশ মেধা কোটা, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা এবং ১০ শতাংশ নির্যাতিত নারী কোটা চালুর বিধান রাখা হয়। বাকি ৪০ শতাংশ রাখা হয়েছিল জেলা কোটা। আমাদের মাথায় রাখা দরকার, এগুলো সবই হয়েছিল আমাদের সংবিধান কার্যকর হওয়ার আগেই। সংবিধান গৃহীত হয়েছিল ১৯৭২ সালের ৪ নভেম্বর। কার্যকর হওয়ার পর সংবিধানের ২৯ অনুচ্ছেদে ‘সব নাগরিকের সমান অধিকার এবং অনগ্রসরদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থার’ যে নীতি রাখা হয়েছে সে অনুযায়ী কোটা পদ্ধতি সংস্কার করা প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সেটা আর করা হয়নি।

পরবর্তীকালে ১৯৭৬ সালে মেধা কোটা ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪০ শতাংশ করা হয়। এরপর ১৯৮৫ সনে মেধা কোটা আরও বাড়িয়ে ৪৫ শতাংশ করা হয়। এই দুই বারের কোটা সংস্কারেও মুক্তিযোদ্ধা কোটা শুরুর মতোই ৩০ শতাংশই থেকে যায়। আর প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির জন্য  ১০ শতাংশ ‘নির্যাতিত নারী কোটা’ কে নাম পাল্টে ‘নারী কোটা’ করা হয় । এরচেয়ে নিচের পদগুলোতে নারী কোটা রাখা হয় ১৫ শতাংশ। এরপর আবার নতুন কতগুলো কোটা যুক্ত করা হয়— উপজাতি কোটা (আদিবাসী), এতিম ও প্রতিবন্ধী কোটা, আনসার ও ভিডিপি কোটা।

২০১৮ সালে উল্লিখিত কোটাগুলো তুলে দেওয়ার পর ৩৯ তম বিসিএস থেকে এখন পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে নারী, আদিবাসী ও প্রতিবন্ধীদের সরকারি চাকরি পাওয়ার হার আগের চেয়ে উল্লেখযোগ্য হারে কমে গেছে। আবার মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০% কিন্তু বিগত কয়কটি বিসিএস পরীক্ষার ফলাফল সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে মুক্তিযোদ্ধা কোটা পূরণ হচ্ছে ৮ হতে ১০ শতাংশ। এমন অবস্থায় সাধারণ দৃষ্টিকোণ এবং বাংলাদেশের বর্তমান সামাজিক, অর্থনৈতিক ও আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে কোটা পদ্ধতি সময় ও যুগোপযোগী সংস্কার প্রয়োজন।

চলতি বছরের ১৪ তারিখ রাতের আগপর্যন্ত কোটা সংস্কার আন্দোলন বেশ শান্তিপূর্ণভাবে পরিচালিত হচ্ছিল যদিও আন্দোলনের কোনো যৌক্তিকতা দেখি না। কারণ সরকার কর্তৃক জারিকৃত প্রজ্ঞাপন এবং আদালতের সর্বশেষ স্থগিতাদেশ অনুযায়ী এখনো পর্যন্ত কোটা বাতিল এবং আগামী ২৮ জুলাই পর্যন্ত বাতিল আছে। একটা বাতিল বিষয় বাতিলের জন্য মেধাবীদের আন্দোলন করা কতটুকুই বা যৌক্তিক!

প্রধানমন্ত্রী তার সংবাদ সম্মেলনে ১৪ তারিখ পর্যন্ত শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের বিষয়ে সমস্যা নাই বলে পরোক্ষ সমর্থন করেছেন এবং সহিংসতার বিষয় হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। কিন্তু একটা পক্ষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মেধাবী  শিক্ষার্থীদের আবেগ নিয়ে খেলার সুযোগ নিচ্ছে। আপনি মেধাবী, এতদিন আপনি ছিলেন মেধার পক্ষে কিন্তু আপনাকে কত সুন্দর করে কৌশলে পদ্ধতিগতভাবে রাজাকারের পক্ষে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নিজেদের পক্ষ ভারী করতে নিজেদের সাথে আপনাদের অন্য পক্ষগুলোর মুখোমুখি দাঁড় করাচ্ছে।

সাংবাদিকের দেয়া প্রশ্নের উত্তরের পক্ষ কেবল দুইটি। তাই বলে প্রশ্ন এবং উত্তরের বাইরে অপশন নেই, কোন পক্ষ নেই বিষয়টি সঠিক নয়। গত কয়েকদিন যারা কোটা সংস্কার আন্দোলন করছেন, এতদিন তাদের স্লোগান ছিলো “কোটা না মেধা, মেধা মেধা”। তাহলে আন্দোলনকারীরা “মেধাবী” নামক তৃতীয় একটি পক্ষ যা খুবই স্বাভাবিক। প্রকৃত কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী সাধারণ শিক্ষার্থীরা মেধার পক্ষে এটা অস্বীকার করার উপায় তাদের নেই। এছাড়া এখানে সংবিধানের আলোকে অনাগ্রসর আরো অনেক পক্ষ আছে যেমন: প্রতিবন্ধী, নারী, উপজাতি ইত্যাদি।

তাহলে হঠাৎ মেধার পক্ষে (সতন্ত্র ৩য় পক্ষ) মেধাবীর দাবি নিয়ে আন্দোলনরতরা রাজাকারের নাতি না বরং সরাসরি রাজাকার দাবি তুলে স্লোগান দিবে! সাংবাদিকের দেয়া প্রশ্নের প্রেক্ষাপটে বিশ্লেষণমূলক উত্তরে একটি পক্ষকে রাজাকারের নাতি বলায় আপনি মেধাবী নামক ৩য় পক্ষ  হয়েও চটে যাবেন। আচ্ছা বুঝলাম বয়স অল্প, রক্তগরম কলেজ পেরিয়ে ভার্সিটি। তাই চটে গিয়ে নিজেরাই দাবি করে মধ্যরাতে গলা ফাটালেন। আবার রাত না পেরুতেই সেটা কেন বললো, প্রত্যাহার করতে হবে ইত্যাদি দাবি নিয়ে রাস্তায় নামলেন। নিজেরাই কি স্ববিরোধী আচরণ করছেন না?

যারা নিজেদের রাজাকার দাবি করে স্লোগান দিয়েছেন, ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আমি নিশ্চিত তাদের অধিকাংশ সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের ঐ প্রশ্ন এবং প্রশ্নের প্রেক্ষাপটে ১৩ মিনিটের বিশ্লেষণমূলক উত্তরের সম্পূর্ণ অংশ দেখেননি।

একটা পক্ষ তথ্য বিকৃতির মাধ্যমে মেধাবী শিক্ষার্থীদের আবেগকে কাজে লাগিয়ে উত্তেজিত করে মধ্য রাতে রাস্তায় নামিয়ে তাদেরকে বিতর্কিত করেছে। এমনকি এখনো পর্যন্ত সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে উসকানি দিচ্ছে। আর যারা নেমেছে এবং নিজেদের রাজাকার বলে গলা ফাটিয়েছে আমার মতে তারা ভুল করেছে। কিন্তু তারা সবাই রাজাকারের মতাদর্শে বিশ্বাসী নয় বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। তবে, হ্যাঁ, রাত পেরুতেই অনেকের হুঁশ ফিরেছে এবং পরবর্তীতে স্লোগানে পার্থক্য এসেছে বলে লক্ষণীয়।

এখানে আপনারা মুক্তিযোদ্ধা বা রাজাকার না বরং মেধাবী নামক ৩য় পক্ষ। আপনাদেরকে, আপনাদের আবেগ এবং আন্দোলনকে যে পক্ষ ব্যবহার করেছে তাদের উদ্দেশ্য ভিন্ন। একটা পক্ষ বিভিন্ন মাধ্যমে মেধাবী শিক্ষার্থী এবং তাদের আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে প্রভাবান্বিত করতে সচেষ্ট। কিন্তু এর বাইরে অবশিষ্ট পক্ষগুলোকে ভুল করলে চলবে না। প্রয়োজন হলে সবাইকে বসে আলোচনা করতে হব, শিক্ষার্থীদের দ্বারে দ্বারে গিয়ে বোঝাতে হবে যে, বিষয়টি এখন মহামান্য হাইকোর্টে বিচারাধীন এবং সরকার মেধাবীদের পক্ষে রিটকারী রাষ্ট্রপক্ষ। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা, রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এবং মৃত্যু খুবই অপ্রত্যাশিত ও আরেকটি মারাত্মক ভুল। আর কোনোক্রমেই এই ভুলকে প্রশমিত করা উচিত হবে না। অন্ততপক্ষে ঢাবির সকল মেধাবীদের বিবেকবান হওয়া উচিত এবং বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র সেটা প্রত্যাশা করে। একই সাথে সরকারের দায়িত্বশীল সকলকেই বিচক্ষণতা এবং দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।

সরকারের কেউ সমালোচনা করলেই তাকে বিরোধী পক্ষ, রাজাকার, সুশীল, সুবিধাবাদী ইত্যাদি ট্যাগ দেওয়ার মানসিকতা দূর করতে হবে। বুঝতে হবে  সরকারের কোনো সিদ্ধান্তের সমালোচনা মানেই সরকার প্রধান বা দলের সমালোচনা নয়। কারণ সকল সিদ্ধান্ত সরকার প্রধান নেন না। অনেক সময় ছোট-বড় বহু সিদ্ধান্ত চিটার-বাটপার, হাইব্রিড কাউয়ারাও নেয়। এছাড়া রাষ্ট্রযন্ত্রের অর্গানগুলোর গুরুত্বপূর্ণ পদের গুরুত্বপূর্ণ লোকদের নিয়ে সময় সময় বিতর্ক উঠছে। আত্মসমালোচনা করতে হয় সেটা সহ্য করার মনমানসিকতা তৈরি করতে হয়। তাহলে অনেক ভুল মহা ভুল অনুশোচনা হতে রক্ষা পাওয়া যায়।

গত কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণে আপনার কি মনে হয় প্রকৃত মাঠের অবস্থা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে সরকার প্রধানকে অবহিত করা হয়েছে? এই পর্যন্ত যা যা ঘটেছে তা অতিরিক্ত চামবাজি, তেলবাজি এবং যথাযথভাবে সত্যটাকে উপস্থাপন না করার ফলস্বরূপ নয় কি? যখন অতীতের ন্যায় স্পষ্ট ষড়যন্ত্রকারীরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনকে পুঁজি করবে। তখন ষড়যন্ত্রকারী পক্ষ সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রভাবান্বিত করতে পারলে অন্য পক্ষ কেন তাদের বুঝতে সক্ষম হলো না বা বুঝানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করল না? সেটা করলে কি ক্ষতি বেশি হতো নাকি কম!

আন্দোলনকারীরা যেটা চাচ্ছে সেটা হলো কোটা সংস্কার বা বাতিল। কিন্তু সরকার তো ইতোমধ্যে ২০১৮ সালে কোটা বাতিল করে আইন করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এখানে কোটা সংস্কার বা বাতিল কিংবা বহাল নিয়ে একাধিক পক্ষ আছে এটা অস্বীকার করা যাবে না। এই পক্ষগুলোর মধ্যে  মুক্তিযুদ্ধের সন্তানদের একটা পক্ষ সরকারের সিদ্ধান্ত বা জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে মহামান্য হাইকোর্টে রিট করে। ৩০% মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিলের প্রজ্ঞাপন কেন অবৈধ হবে না জানতে চেয়ে সেটা বহালের আবেদন করে। উল্লেখ্য এখানে কোটার সুবিধা নেয়া অন্য কোন পক্ষ যেমন: নারী, উপজাতি কিংবা প্রতিবন্ধীরা রিট করেনি। আদালত দীর্ঘদিন পর নিয়মিত বিচারিকের ন্যায় সেই রিটের রায়ে মুক্তিযোদ্ধা ৩০% কোটা পুনরায় বহাল করে। বুঝতে হবে সরকারের নির্বাহী বিভাগের সিদ্ধান্তে জারিকৃত প্রজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত রিটের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত রায় দিয়েছে। সরকারের নির্বাহী এবং আইন বিভাগের সিদ্ধান্তে যে কোটা বাতিল হয়েছে সেটা কিন্তু সরকার পুনরায় বহাল করেনি।

বাংলাদেশে ৪ অক্টোবর, ২০১৮ সাল হতে বর্তমান পর্যন্ত কোটা পদ্ধতি আইনগতভাবে বাতিলই এবং আগামী ২৮ জুলাই পর্যন্ত বাতিলই আছে। সরকারের প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বালিতকৃত এবং  আদালতের সর্বশেষ স্থগিতাদেশ অনুযায়ী আগামী ২৮ জুলাই পর্যন্ত বাতিলকৃত একটা বিষয় বাতিলের জন্য মেধাবীদের আন্দোলন কতটা যৌক্তিক!

সবার আগে উপলব্ধি করা উচিত কোটা এখনো পর্যন্ত বাংলাদেশে বাতিলই আছে। বিষয়টি যৌক্তিক সমাধানের জন্য ২ পক্ষ সর্বোচ্চ আদালতের দারস্থ। এছাড়া সরকারের জারিকৃত প্রজ্ঞাপন বাতিল করায় এবং কোটা পুনরায় বহালের রায় দেওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষ অর্থাৎ সরকারই মেধাবীদের পক্ষে, আন্দোলনকারীদের পক্ষে আপীল করেছে। আমাদের বিবেকবান মেধাবী হিসেবে উচিত অন্য কোনো পক্ষের ষড়যন্ত্রে পা না দিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের প্রতি আস্থা নাই হোক সম্মান জানিয়ে সেই পর্যন্ত অপেক্ষা করা।

বিবেকবান কেন বলছি? বলছি এই জন্য যে মেধাবী হওয়ার চেয়ে বিবেকবান হওয়াটা জরুরি কারণ বিবেকহীন মেধাহীনের চেয়েও ভয়ংকর। আর আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কেবলই আমাদের মেধাবী করে গড়ে তুলে বিবেকবান হিসেবে না। আর না বিধায় এখানে অহরহ আবেদ আলী, মতিউর এবং ছাগলকাণ্ড ঘটে। আশা করি অতীতের সকল সংকট মোকাবিলার ন্যায় আওয়ামী লীগ সরকার দ্রুততম সময়ে এখানেও বিচক্ষণতা ও দায়িত্বশীলতার পরিচয় দেবেন। তবে সাধারণ শিক্ষার্থীদের এবং অন্য সকল পক্ষের ২য় পক্ষের উত্তরসূরীদের ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দেওয়াটা কোনোভাবেই উচিত হবে না

লেখক : মো. হাফিজুল ইসলাম হাফিজ, সাবেক শিক্ষার্থী, ঢাবি (রাষ্ট্রবিজ্ঞান)।

বিবার্তা/এসবি

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত