নাশকতায় ডিএনসিসি’র ক্ষতি ২০৫ কোটি টাকা: মেয়র আতিক

| আপডেট :  ২৪ জুলাই ২০২৪, ১০:১২  | প্রকাশিত :  ২৪ জুলাই ২০২৪, ১০:১২


নাশকতায় ডিএনসিসি’র ক্ষতি ২০৫ কোটি টাকা: মেয়র আতিক

বিবার্তা প্রতিবেদক


কোটা বিরোধী আন্দোলনে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) পাঁচটি আঞ্চলিক অফিসে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর চালানো হয়। এতে ডিএনসিসির ২০৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।

আতিকুল ইসলাম বলেন, ডিএনসিসি একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। আমাদের কাজ হচ্ছে নগরবাসীকে সেবা দেয়া, শহর পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা। নগরবাসীকে যেন সেবা দিতে না পারি সন্ত্রাসীরা সেই লক্ষ্য নিয়ে নাশকতা চালিয়েছে ডিএনসিসির বিভিন্ন অফিসে এবং স্থাপনায়। সহিংসতায় ঢাকা ডিএনসিসির মোট ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের জন্য কমিটি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় থেকে ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণের জন্য কাজ করছে।

২৪ জুলাই, বুধবার রাজধানীর মিরপুর-১০ নম্বরে সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত ডিএনসিসির আঞ্চলিক অফিস পরিদর্শনকালে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

মেয়র বলেন, সন্ত্রাসীরা ডিএনসিসির মোট ৬৭টি গাড়ির ক্ষতি করেছে। এর মধ্যে বর্জ্যবাহী ২৯টি গাড়ি সম্পূর্ণভাবে ভস্মীভূত করে দিয়েছে, অফিসারদের ব্যবহারের ২১টি পাজেরো জিপ পুড়িয়ে দিয়েছে। এছাড়াও আরও ১৭টি গাড়ি ভেঙে দিয়েছে। এই গাড়িগুলো নগরবাসীর ট্যাক্সের টাকায় কেনা। নগরবাসীকে সেবা যেন দেয়া না যায় সেই ষড়যন্ত্র করেই এই নাশকতা চালায় সন্ত্রাসীরা। জনগণের দুর্ভোগ বাড়াতে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান ডিএনসিসিতে সন্ত্রাসীরা নাশকতা চালিয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে জড়িত সকলের বিচারের দাবি জানাই।

এসময় ডিএনসিসির আঞ্চলিক অফিসের ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন করেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম।

আগুনে পুড়ে যাওয়া বর্জ্যবাহী গাড়ি পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলায় যখন একের পর উন্নয়ন কার্যক্রম হচ্ছে তখনই সন্ত্রাসীরা দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। সন্ত্রাসীরা ডিএনসিসি, ডিএসসিসি, নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় তাণ্ডব চালিয়েছে। নৃশংস হামলা চালিয়ে জানমালের ক্ষয়ক্ষতি সাধন করেছে।

মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ বাংলাদেশ উন্নত দেশের পথে ঠিক তখনই দেশ বিরোধী অপশক্তি ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছি। এই অপশক্তি ১৯৭১ সালেও দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল। তারা আজ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের কোটার গণতান্ত্রিক দাবির আন্দোলনকে পুঁজি করে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম চালায় দেশ বিরোধীরা। সন্ত্রাসীরা সিটি কর্পোরেশনের বর্জ্য পরিবহনের গাড়িগুলোতে অগ্নিসংযোগ করে। তারা মেট্রোরেলে অগ্নিসংযোগ করেছে। মেট্রোরেলে অগ্নিসংযোগ করায় আজ ঢাকায় অলরেডি তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়েছে। যারা এই নাশকতা চালিয়েছে তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে।

ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, ঈদের আগে ৩২টি ডাম্প ট্রাক এবং ৮টি আধুনিক কম্প্যাক্টর ট্রাক আমাদের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গাড়ি বহরে যুক্ত করেছিলাম। জাপান থেকে আনা হয়েছিল কম্প্যাক্টর ট্রাক। একটি কম্প্যাক্টর ১০টি ট্রাকের সমান কাজ করে। আমাদের বর্জ্য পরিবহনের মোট যানবাহনের চারভাগের একভাগ তারা ধ্বংস করে দিয়েছে। মিরপুর-১০ নম্বর ফুটওভার ব্রিজে অগ্নিসংযোগ করে এটি পুড়িয়ে দিয়েছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের বিয়ের অনুষ্ঠান আয়োজন এবং অন্যান্য সামাজিক অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করেছিলাম। উত্তরা কমিউনিটি সেন্টার ও মোহাম্মদপুর সূচনা কমিউনিটি সেন্টার সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়েছে। এগুলো জনগণের সম্পদ। সন্ত্রাসীরা কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অহিংস আন্দোলনকে ব্যবহার করে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়ে জনগণের সম্পদ বিনষ্ট করেছে।

ডিএনসিসি মেয়র আরও বলেন, সন্ত্রাসীরা রামপুরায় পাম্প হাউজে হামলা চালিয়ে সেটি ধ্বংস করেছে, এমনকি পাম্প হাউজ মেরামতের উদ্দেশ্যে আমাদের কর্মীরা গেলে তাদের উপরেও আক্রমণ করেছে সন্ত্রাসীরা। আমরা স্ট্রিট লাইট মেরামতের জন্য অত্যাধুনিক ল্যাডার এনেছিলাম। সেই ল্যাডারগুলোও তারা ধ্বংস করেছে। ফুটপাত, মিডিয়ানে আমরা অনেক বৃক্ষরোপণ করেছিলাম। তীব্র দাবদাহ থেকে বাঁচতে যে গাছ লাগিয়েছিলাম সেই গাছগুলোও তারা ধ্বংস করেছে।

তিনি বলেন, সন্ত্রাসীদের হামলায় অনেক ড্রাইভার, পরিচ্ছন্নতা কর্মী আহত হয়েছে। অনেক সাংবাদিক ভাই-বোনদের উপরে তারা আক্রমণ করেছে। অনেক সাংবাদিক নিহত হয়েছেন। বহু আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য আহত ও নিহত হয়েছেন। আমি জনগণের কাছে বিচার চাই, যারা এই ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছেন তাদের প্রতিহত করতে হবে। এই সন্ত্রাসীদের প্রত্যাখ্যান করতে হবে।

এসময় অন্যান্যের সঙ্গে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএনসিসির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মীর খায়রুল আলম, ডিএনসিসির সচিব মোহাম্মদ মাসুদ আলম ছিদ্দিক, প্রধান প্রকৌশলী ব্রিগে. জেনা. মো. মঈন উদ্দিন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ ফিদা হাসান প্রমুখ।

বিবার্তা/লিমন

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত