১৫ আগস্ট : কী হতে চলেছে?

| আপডেট :  ১৪ আগস্ট ২০২৪, ১২:১৭  | প্রকাশিত :  ১৪ আগস্ট ২০২৪, ১২:১৭


১৫ আগস্ট : কী হতে চলেছে?

বিবার্তা প্রতিবেদক


আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) জাতীয় শোক দিবস পালন করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। এজন্য দলের সভাপতি ও সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তৃনমূলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলছেন। সেই সাথে, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন নিয়ে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বার্তায় বলেন, ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট ধানমন্ডি বঙ্গবন্ধু ভবনে যে নারকীয় হত্যার ঘটনা ঘটেছিল সেই স্মৃতি বহনকারী বাড়িটি আমরা দুই বোন বাংলার মানুষকে উৎসর্গ করেছিলাম। গড়ে তোলা হয়েছিলো স্মৃতি জাদুঘর। দেশের সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে দেশ বিদেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এই বাড়িতে এসেছেন। স্বাধীনতার স্মৃতিবহনকারী এই জাদুঘরটি। অত্যন্ত দুঃখের বিষয় যে স্মৃতিটুকু বুকে ধারণ করে আপনজন হারাবার সকল ব্যথা বেদনা বুকে চেপে রেখে বাংলাদেশের দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবার লক্ষ্য নিয়ে প্রিয় দেশবাসী আপনাদের সেবা করে যাচ্ছি। তার শুভ ফল ও আপনারা পেতে শুরু করেছেন। বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছে। আজ তা ধূলিসাৎ হয়ে গেছে। আর যে স্মৃতিটুকু আমাদের বেঁচে থাকার অবলম্বন ছিল তা পুড়িয়ে ছাই করে দেয়া হয়েছে। চরম অবমাননা করা হয়েছে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি, যার নেতৃত্বে আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে আত্মমর্যাদা পেয়েছি আত্মপরিচয় পেয়েছি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। লাখো শহীদের রক্তের প্রতি অবমাননা করেছে। আমি দেশবাসীর কাছে এর বিচার চাই। প্রিয় দেশবাসী, আপনাদের কাছে আবেদন জানাই যথাযথ মর্যাদার সাথে ভাব গম্ভীর পরিবেশে জাতীয় শোক দিবস ১৫ই আগস্ট পালন করুন। বঙ্গবন্ধু ভবনে পুষ্পমাল্য অর্পণ ও দোয়া মোনাজাত করে সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করুন।

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ যেন ১৫ আগস্ট পালন করতে না পারে সেজন্য মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন দল ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা।

দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজনৈতিক দলগুলোর এমন পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘোষণায় ফের দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এমন এক সময় রাজনৈতিক দলগুলো মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছে, যখন দেশের পুলিশের অবস্থা খুবই নাজুক। সাম্প্রতিক ঘটনায় মানসিক ‘ট্রমার’ মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এ বাহিনী। ফলে পরিস্থিতি খারাপের দিকে গেলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য তা সামাল দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।

আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা যে কোনো মূল্যে ১৫ আগস্টের কর্মসূচি সফল করতে চায়। এজন্য শেখ হাসিনা নির্দেশনাও দিয়েছেন। ইতোমধ্যে ধানমন্ডি-৩২ এ শোক দিবসের কর্মসূচি পালনে নিরাপত্তা চেয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে আবেদন করেছে দলটি। যদিও এ আবেদনে বর্তমান সরকার সাড়া দেবে কি না তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এদিকে, শেখ হাসিনার ছেলে ও সাবেক তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় এক ভিডিও বার্তায় শোক দিবসের কর্মসূচিতে অংশ নিতে নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সহযোগী ও অঙ্গ সংগঠনের পক্ষ থেকেও ১৫ই অগাস্ট ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে যাওয়ার জন্য নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে একাধিক ফেসবুকে পোস্ট দেওয়া হয়েছে।  

১৫ আগস্ট আওয়ামী লীগকে কোনো ধরনের কর্মসূচি পালন করতে দেওয়া হবে না জানিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল্লাহ বলেছেন, গত ১৬ বছর ধরে মানুষের হত্যা, নির্যাতন ও গুম করেছে, যত রক্ত তাদের হাতে লেগে আছে, সেগুলোর বিচার না হওয়া পর্যন্ত এদেশের ছাত্র-জনতা আওয়ামী লীগকে রাজনীতির মাঠে দেখতে চায় না।

বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম জানিয়েছেন, নিবন্ধিত এবং বৈধ দল হিসেবে আওয়ামী লীগ অবশ্যই কর্মসূচি পালন করতে পারে। এটা তাদের অধিকার। কিন্তু আওয়ামী লীগের স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে মানুষ যেভাবে ফুঁসে উঠেছে, তাতে তারা শেষ পর্যন্ত নিরাপদে কর্মসূচি পালন করতে পারবেন কী-না সন্দেহ আছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় এ নেতা আরও বলেন, কর্মসূচির আড়ালে আওয়ামী লীগ দেশকে অস্থিতিশীল করতে চাইলে তা প্রতিহত করা হবে। আমাদের নেতাকর্মীরা সব জায়গাতেই মাঠে আছেন। দেশের মানুষের পাশে দাঁড়াচ্ছেন, তাদের নিরাপত্তায় কাজ করছেন।

বিবার্তা/এসবি

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত