ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের পৈত্রিক বাড়ি

| আপডেট :  ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০১:৪২  | প্রকাশিত :  ১৫ আগস্ট ২০২৪, ০১:৪২


ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক ঘটকের পৈত্রিক বাড়ি

জাতীয়

রাজশাহী প্রতিনিধি


রাজশাহীতে চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমার ঘটকের পৈতৃক বাড়িটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে বাড়ির আঙিনায় ইটের স্তূপ পড়ে আছে।

১৫ আগস্ট, বৃহস্পতিবার রাজশাহী নগরীর ঘোড়ামারার মিয়াপাড়া এলাকার এই বাড়িতে গিয়ে এমন চিত্র দেখা গেছে। বাড়িটিতে যে কয়টি ঘর অবশিষ্ট ছিল, সেগুলোর প্রতিটি ঘর ভেঙে ইটগুলো বাড়ির আঙিনায় স্তূপ করে রেখে দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, রাজশাহীর মিয়াপাড়ায় প্রখ্যাত চলচ্চিত্রকার ঋত্বিক কুমার ঘটকের শৈশব ও কৈশোরের স্মৃতিবিজড়িত পৈত্রিক বাড়ি এটি। বাড়িটি ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। এতে বাড়িটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এ ঘটনার জন্য রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজকে দায়ী করছেন অনেকেই।

বাড়ি ভাঙচুরের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সদস্যসহ রাজশাহীর সাংস্কৃতিক কর্মীরা। তারা জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

তারা বলেন, এর আগেও রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ জায়গাটি দখলের জন্য ঋত্বিক ঘটকের পৈত্রিক বাড়ি ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেছিল। এমনকি বাড়িটির এক পাশ দখল করেই কলেজটি গড়ে তোলা হয়েছে।

এদিকে ঘটনাটি তদন্তে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মহিনুল হাসানকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত কমিটিকে সাত কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

জানা গেছে, বাড়ির পুরো ৩৪ শতাংশ জমি। ১৯৮৯ সালে এরশাদ সরকার রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালকে ইজারা দেয়। কলেজটি বাড়ি ঘেঁষেই পশ্চিম পাশে রয়েছে। ২০১৯ সালে বাড়িটির একাংশ ভেঙে সাইকেল গ্যারেজ তৈরির অভিযোগ উঠেছিল কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। তখন রাজশাহীসহ সারা দেশে এ ঘটনার প্রতিবাদ জানানো হয়। এরপরে ২০২০ সালে বাড়িটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয় রাজশাহী জেলা প্রশাসন।

ঋত্বিক ঘটক ফিল্ম সোসাইটির সংগঠক অনাবা কবির প্রকৃতি ও ওয়েব সিরিজ নির্মাতা তাওকীর শাইক বলেন, পাশেই হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ। সেখানে কোনো হামলা হলো না, অথচ ঋতিক ঘটকের বাড়ি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হলো, এটা কখনোই বিশ্বাসযোগ্য না।

তারা বলেন, বাড়িটি বাঁচানোর জন্য আমরা বিভিন্ন জায়গায় গিয়েছি। ডিসি অফিস থেকে স্টে অর্ডার ছিল যে এটাতে কিছু করা যাবে না, ভাঙা যাবে না। তারপরেও ভাঙা হয়েছে বাড়িটি।

রাজশাহী হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. আনিসুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে আমার কোনো মন্তব্য নেই। তদন্ত কমিটি হয়েছে। তদন্ত কমিটি যে প্রতিবেদন দেবে আমি সেটা মেনে নেব।

ঠিকাদার শামীম মিয়া বলেন, আমরা এসে দেখি বাড়িটির এক পাশ ভাঙা। সেগুলো সরাতে গিয়ে দুর্বল ভবন হওয়ায় ভেতরের কক্ষগুলোও ভেঙে পড়েছে।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ বলেন, ঘটনাটি তদন্তে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সাত কার্যদিবসের মধ্যে তারা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।

বিবার্তা/এমজে

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত