ঢামেক হাসপাতালকে ঢেলে সাজাতে ১০০ দিনের কর্মসূচি

| আপডেট :  ২৯ আগস্ট ২০২৪, ০৭:২৬  | প্রকাশিত :  ২৯ আগস্ট ২০২৪, ০৭:২৬


ঢামেক হাসপাতালকে ঢেলে সাজাতে ১০০ দিনের কর্মসূচি

বিবার্তা প্রতিবেদক


এখন থেকে আর ওষুধ কোম্পানি এবং বেসরকারি হাসপাতাল ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রতিনিধি এবং কোনো ধরনের দালালদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ঢুকতে দেওয়া হবে না।

হাসপাতাল চত্ত্বরে বেসরকারি অ্যাম্বুলেন্স রাখা যাবে না। সেখানে রোগী ও রোগীর সঙ্গে আসা লোকজন বিশ্রাম নেবেন। এমনকি হাসপাতালের আশপাশের অবৈধ দোকানপাটও স্থায়ীভাবে অপসারণ করা হবে।

২৯ আগস্ট, বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ঘোষিত ১০০ দিনের কর্মসূচির মধ্যে এগুলো উল্লেখযোগ্য। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের চিকিৎসার ভূমিকা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

কর্মসূচি ঘোষণা করেন হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময়ে হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার মানউন্নয়নে ১০০ দিনের এসব কর্মসূচি হাতে নিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

সংবাদ সম্মেলনে হাসপাতাল পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, ২৬০০ শয্যার এই হাসপাতালে সবচেয়ে বেশি রেফার্ড হওয়া রোগী আসে। গড়ে রোগী ভর্তি থাকে চার হাজারের বেশি। হাসপাতালের মেঝে, বারান্দা, সিড়ির নিচে সবসময় রোগী দিয়ে ভর্তি থাকে। বহির্বিভাগ ও জরুরি বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নেন আরও ৫ হাজারের মতো রোগী।

পরিচালক বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল অনেক পুরাতন এবং সবারই আস্থার জায়গা। রোগীর তুলনায় জায়গা কম। তাই একটি সুশৃঙ্খল ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে রোগীদের স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়নের জন্য ১০০ দিনের জন্য কিছু কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে- হাসপাতালের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উপস্থিতির হার বাড়ানো ও যথাসময়ে উপস্থিতি নিশ্চিত করা, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধি, বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনাস্টিক সেন্টারের প্রতিনিধি ও দালালদের প্রবেশ করতে না দেওয়া।

পরিচালক বলেন, হাসপাতালের আশপাশের অবৈধ দোকানপাট অপসারণ করা হবে। আমরা কয়েকদিন পরপর তাদের উঠিয়ে দেই, জায়গাটা পরিষ্কার করি, তারপরও তারা আবার বসে। তাদের কারণে হাসপাতাল পরিষ্কার রাখা যায় না, যেখানে সেখানে ময়লা ফেলে। হাসপাতাল পরিচ্ছন্ন ও দালাল মুক্ত রাখার জন্য যা প্রয়োজন আমরা করব।

পরিচালক আরও বলেন, আমরা অ্যাম্বুল্যান্স সেবাকে একটা নিয়মের মধ্যে আনতে চাই। হাসপাতালের ভেতরে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স পার্কিংয়ের সুযোগ নেই। কর্মসূচির অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স হাসপাতাল চত্বর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে রোগী ও রোগীর সঙ্গে আসা লোকজনের বিশ্রামের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

পরিচালক আরও বলেন, এসব কর্মসূচি বাস্তবায়নে মনিটরিং জোরদার করা হয়েছে। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর সহায়তা নিচ্ছি। এ ছাড়া ঢাকা মেডিকেলের ভেতরে কর্মচারীদের পরিচালিত ক্যান্টিন ছাড়া আর কোনো দোকান থাকবে না। ভাসমান হকারদেরও হাসপাতাল চত্বরে আর ঢুকতে দেওয়া হবে না।

সংবাদ সম্মেলনে ঘোষিত অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহতদের জন্য বিশেষায়িত ওয়ার্ড স্থাপন ও বিনামূল্যে বিশেষায়িত চিকিৎসা নিশ্চিত করা, কেবিন সংস্কার করা, আইসিইউর সংখ্যা বাড়ানো, হাসপাতালে হয় এমন সব প্যাথলজিকাল টেস্ট এবং এক্স-রে, সিটি স্ক্যান ইত্যাদি বাধ্যতামূলকভাবে হাসপাতালে করার ব্যবস্থা গ্রহণ, টিকিটিং ব্যবস্থায় ডিজিটাল কার্যক্রম জোরদার করা, দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যক্রম জোরদার করা, রোগীদের সঙ্গে চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যসেবা কর্মীদের সম্পর্ক উন্নয়নে আচরণগত পরিবর্তন নিশ্চিতকরণের উদ্যোগ নেওয়া, স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ক গবেষণা কার্যক্রম জোরদারের উদ্যোগ নেওয়া, অভ্যর্থনা বা তথ্যকেন্দ্র স্থাপন ও স্বাস্থ্যসেবা কার্যক্রম জোরদার করা ইত্যাদি।

সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. আশরাফুল আলম। এ সময় হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলাম, নাক কান গলা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. নুরুল ফাত্তাহ রুমী, সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. ইমতিয়াজ ফারুক, হাসপাতালের উপপরিচালক ডা. নুরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিবার্তা/এসবি

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত