ঊর্ধ্বমুখী মাছ ও ডিমের দাম, স্থিতিশীল সবজির বাজার

| আপডেট :  ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১১:৩৬  | প্রকাশিত :  ৩০ আগস্ট ২০২৪, ১১:৩৬


ঊর্ধ্বমুখী মাছ ও ডিমের দাম, স্থিতিশীল সবজির বাজার

জাতীয়

বিবার্তা প্রতিবেদক


গেল সপ্তাহে নতুন করে বন্যার ধাক্কায় অনেকটাই নড়েচড়ে বসেছে দেশ। তাই বাজারে অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির ভয় ক্রেতা সাধারণের মনে। তবে সেই ভয়কে কিছুটা স্বস্তি দিচ্ছে তিন সপ্তাহ ধরে স্থিতিশীল রয়েছে সবজির বাজার।

বাজারে কিছুটা বেড়েছে ডিমের দাম। আগের চেয়ে ব্রয়লার মুরগির দামও বেড়েছে কিছুটা। বাড়তি যাচ্ছে সব ধরনের মাছের দাম। মাছ বাজারে চলছে দর কষাকষি। তবুও পছন্দের মাছ নিয়ে অনেকেই ফিরতে পারছেন না ঘরে। এদিকে, পণ্য পরিবহণ কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে এসেছে।

শুক্রবার (৩০ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজারসহ এলাকাভিত্তিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে বাজারে পাঙাস, রুই, কাতল, কৈ, তেলাপিয়াসহ সব ধরনের মাছের দামই বাড়তি যাচ্ছে।

মাছের দাম বেশি হওয়ার কারণ হিসেবে বিক্রেতারা বলছেন, বন্যার কারণে মাছ চাষিদের মাছ ভেসে গেছে।

বাজারে প্রতি কেজি পাঙাস মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২২০ টাকায়, রুই প্রতি কেজি ২৮০-৩৫০ টাকায়, চাষের কৈ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৪০-২৮০ টাকায়, তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২০০-২৫০ টাকায়, কাতল প্রতি কেজি ৩২০-৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে ফার্মের মুরগির বাদামি ডিমের দাম প্রতি ডজন ৫ টাকা বেড়েছে। প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫৫-১৬০ টাকায়। ডিমের পাশাপাশি ব্রয়লার মুরগির দাম কিছুটা বেড়েছে। সবজির মধ্যে বরবটি ও আলুর দামও বেড়েছে। অন্যান্য সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে কমেছে কাঁচা মরিচের দাম।

প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে ঢাকার বাজারে প্রতি ডজন ব্রয়লার মুরগির বাদামি ডিম বিক্রি হয়েছে ১৪৫-১৫৫ টাকা দরে। তবে গত দুই দিনে ডিমের দাম ডজনে ৫ টাকা বেড়েছে। এদিকে বন্যার কারণে গত সপ্তাহে চট্টগ্রামে ডিমের ডজন হয়েছিল ১৮০ টাকা। পরে সরবরাহ ঠিক হওয়ায় তা আবার স্বাভাবিক দামে ফিরেছে।

আগের সপ্তাহের তুলনায় বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম প্রতি কেজি ১০ টাকার মতো বেড়েছে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম ছিল ১৬০-১৭০ টাকা; যা গতকাল ১৭০-১৮০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। আর সোনালি মুরগির দাম ২৪০-২৫০ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে। বিভিন্ন ধরনের মাছের দামেও তেমন পরিবর্তন দেখা যায়নি। যেমন আগের সপ্তাহের মতোই প্রতি কেজি (চাষের) রুই ৩০০-৩৩০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০-২২০ টাকা ও পাঙাশ ১৮০-২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তবে ইলিশের দাম চড়া রয়েছে। বাজারভেদে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৭০০ থেকে ২ হাজার টাকায়।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আলুর দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৫৫-৬০ টাকা এবং কোনো কোনো বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৫ টাকা বেশি দরে বিক্রি হয়েছে। গতকাল প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১২০-১২৫ টাকায়।

সবজির দাম গত সপ্তাহের মতোই রয়েছে। যেমন প্রতি কেজি বেগুন ৮০-১২০ টাকা, করলা ৭০-৮০ টাকা ও কাঁকরোল ৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। এ ছাড়া ঝিঙা, চিচিঙ্গা, ধুন্দুল ও ঢ্যাঁড়স প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৫০-৬০ টাকায়।

বিক্রেতারা বলছেন, বিগত সরকার নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেনি। ব্যবসায়ীরা নানা অজুহাতে সিন্ডিকেট করেছে। কিন্তু এখন সরকারের পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষার্থীরাও বাজার তদারকি করছেন। যার সুফল মিলছে।

গেল সপ্তাহে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি, এখন ১৬০-১৭০ টাকাও পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি ১০ টাকা কমে সোনালি মুরগি ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

যদিও ডিমের বাজারে দেখা গেছে কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা। ৫ টাকা বেড়ে ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়।

রামপুরার ভাই ভাই স্টোরের জামাল হোসেন বলেন, ডিমের দাম একটু বেড়েছে। কারণ বন্যা। তবে অন্যান্য সময় এ ধরনের বন্যায় প্রতি ১০ ডজনের ১০-২০ টাকা বাড়ে। কিন্তু এবার সেটা হয়নি। আসলে এখন বাজারে সুস্থ প্রতিযোগিতা আছে।

এদিকে বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ আগের মতো ১১০ থেকে ১২০ টাকা দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

এখন ৩০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে পটোল, পেঁপে, ঢ়্যাঁড়স। এক মাস আগেও ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি মেলেনি। এ তিন সবজির মতো বেশিরভাগ সবজির দর বেশ কমেছে। আগে বেগুন, বরবটি, কাঁকরোল, করলা, কচুরমুখীর মতো সবজি ১০০ টাকার ওপরে ছিল, এখন ৬০-৮০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে।

কিছুটা কমতে দেখা গেছে আলুর দামও। প্রতিকেজি ৬০ টাকা কেজি দরের আলু এখন ৫৫ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। কাঁচা মরিচের দাম ২০০ টাকার ওপরে ছিল, এখন ১৬০ টাকা দরে নেমেছে।

ইলিশের সরবরাহ বাড়ার কারণে অন্য মাছের চাহিদা কমেছে। তাতে দামও খানিকটা কমেছে। এক কেজি ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০০ থেকে ১৫০০ টাকায়। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ কেনা যাচ্ছে এক হাজার থেকে ১২০০ টাকায়। তবে ইলিশের মৌসুমে দাম আরও কম থাকা উচিত বলে মনে করেন ক্রেতারা।

বিবার্তা/এসবি

© BBARTA24.NET
Developed by : ORANGEBD
  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত